Advertisement
Advertisement
Agricultural News

কুয়াশার দাপট উত্তরবঙ্গে, আলুর নাবি ধসা রোগে ক্ষতির আশঙ্কায় পাঁচ লক্ষ চাষি

নাবি ধসা রোগ দেখা দিলে কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ স্প্রে-র পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Dense fog in North Bengal may damage potato cultivation, farmers are worried | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 14, 2024 9:28 pm
  • Updated:January 14, 2024 9:30 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: একটানা কুয়াশার (Fog) দাপট দেখে আতঙ্কিত উত্তরবঙ্গের অন্তত পাঁচ লক্ষ আলু চাষি। শুরু হয়েছে নাবি ধসা অর্থাৎ লেটব্লাইট রোগের প্রকোপ। রোদ উঠলে কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে সেটা ভেবেই দিশাহারা অনেকে। মহামারী ঠেকাতে কৃষি দপ্তরের তরফে চরম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিলি করা হচ্ছে লিফলেট। নাবি ধসা রোগ দেখা দিলে কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ স্প্রে-র পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে একটানা তিনদিন থেকে উত্তরের সমতলে চলছে কুয়াশার দাপট। কোথাও কুয়াশার সঙ্গে হালকা বৃষ্টি (Rain) হচ্ছে। কৃষি দপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন, একটানা কুয়াশা এবং বৃষ্টি দুটোই আলু চাষের (Potato Cultivation) ক্ষেত্রে সাক্ষাৎ যমদূতের মতো। কুয়াশা দীর্ঘমেয়াদী হলে আলুগাছ ‘ফাইটোপথরা ইনফ্যাস্ট্যান্স’ ছত্রাক বাহিত লেটব্লাইট বা নাবি ধসা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এর ফলে গাছের পাতা লালচে হয়ে যায়। পাতা ও ডগায় পচন ধরে গাছগুলো নষ্ট হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সন্তানশোক দূর অস্ত, স্বামীর মুখোমুখি হতেই তুমুল ঝগড়া সূচনার! হতবাক পুলিশও]

জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর বিপ্লব দাস বলেন, “ঘন কুয়াশায় লেটব্লাইট রোগ মহামারীর আকার নিতে পারে। ওই কারণে আলু চাষিদের সতর্ক করা হয়েছে।” তিনি জানান, লেটব্লাইট রোগ দেখা দিলে আক্রান্ত গাছ তুলে মাটিচাপা কিংবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। জমিতে সেচ বন্ধ রাখতে হবে। কারণ, বাতাস, বৃষ্টি এবং সেচের জলের মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু আক্রান্ত গাছ থেকে সুস্থ গাছে ছড়িয়ে পড়ে। লেটব্লাইট আক্রমণে প্রথমে পাতায় ছোপ ছোপ ভেজা হালকা সবুজ গোলাকার দাগ দেখা যায়। সেটা দ্রুত কালো হয়ে পচে যায়। জলপাইগুড়ির কৃষি অধিকর্তা শুভ দাসের কথায়, “একটানা ঘন কুয়াশা চলছে। এটা ভালো লক্ষণ নয়। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে। চাষিদের বলা হয়ে সমস্যা হলেই যেন কৃষি দপ্তরে যোগাযোগ করেন। কারণ, নাবি ধসার মতো মারণ রোগ ছড়িয়ে পড়লে প্রতিরোধ কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।”

[আরও পড়ুন: OBC সম্প্রদায়কে অপমান রামদেবের! বিতর্কে জড়িয়ে কী সাফাই যোগগুরুর?]

কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে (North Bengal) প্রায় দেড় লক্ষ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি চাষ হয় জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুর জেলায়। এটাই মূলত উত্তরের আলু চাষের বলয়। জলপাইগুড়িতে আলু চাষের এলাকা প্রায় ৩৪ হাজার হেক্টর। আলিপুরদুয়ার জেলায় প্রায় ২১ হাজার হেক্টর। কোচবিহারে প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর এবং উত্তর দিনাজপুরে প্রায় ২৯ হাজার হেক্টর।

ইতিমধ্যে আগে চাষ করা আলু বাজারে পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু প্রচুর জমিতে লেট আলুর চাষ চলছে। সেখানেই বিপদ গর্জেছে। কারণ, ওই আলুর বেশিরভাগ এখনও তোলার সময় হয়নি। জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের গাদং এলাকার আলু চাষি মহেশ বর্মন জানান, ইতিমধ্যে গাছের পাতা কুঁকড়ে পচে যেতে শুরু করেছে। ওষুধ স্প্রে করেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না। আলিপুরদুয়ারের খোলটা এলাকার চাষি নিরঞ্জন বিশ্বাস বলছেন, “কুয়াশার দাপট বাড়তে কিছু গাছ ঝিমাতে শুরু করেছে। রোদ উঠলে কি পরিস্থিতি দাঁড়াবে বুঝতে পারছি না।” কৃষি কর্তারা জানান, যে আলু গাছের বয়স ৩০-৩৫ দিন হয়েছে সেখানেই বিপদ বেশি দেখা যায়। ওই কারণে চাষিদের নজরদারি বাড়াতে হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement