রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: বিলুপ্ত প্রায় কই মাছ চাষে উৎসাহ দিচ্ছে রাজ্য মৎস্য দপ্তর। সরকারি উদ্যোগে এমন উৎসাহ প্রদানের ফলে সাফল্য এসেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়া ব্লকে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিলুপ্তপ্রায় কই মাছের চাষের দু’টি প্রদর্শনী ক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছিল হলদিয়া ব্লকে। অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে সরকারি তত্ত্বাবধানে সেখানে কই মাছ চাষে সাফল্য এসেছে। প্রাচীন কাল থেকেই কই একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও সুস্বাদু মাছ হিসাবে সমাদৃত। বর্তমানে কই মাছের চাষ বাণিজ্যিকভাবে যথেষ্ট লাভজনক প্রমাণিত হয়েছে। ১-১.৫ গ্রাম ওজনের কই মাছের বাচ্চা ছাড়া হয়েছিল। প্রায় চার মাস পর সেই মাছের ওজন দাঁড়ায় প্রায় ১০০ গ্রামে।
যাঁদের হাত ধরে এই সাফল্য এসেছে তাঁরা হলেন বাড়ঘাসিপুর গ্রামের মাছ চাষি পবিত্র মুখোপাধ্যায় ও বাড়বাজিৎপুর গ্রামের তিন যুবক সুখদেব দাস, সঙ্কর্ষণ দাস ও অরুণকুমার দাস। এই তিনজন মিলে একটি যৌথ মৎস্য খামার তৈরি করেছিলেন। বাড়বাজিৎপুর গ্রামের ওই তিন যুবক কোনও চাকরির পিছনে না ছুটে একশো দিনের কাজের প্রকল্প (এমজিএনরেগা)-এর মাধ্যমে তৈরি নতুন পুকুর লিজ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিলুপ্তপ্রায় কই মাছ চাষে সাফল্য পেয়েছেন। মাছ চাষিরা মৎস বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে চাষ শুরু করেন। মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকরা প্রায়শই এই চাষ প্রকল্পে এসে মাছের ওজন নিয়ে তাকে বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ দিয়েছে। দিয়েছে। হলদিয়া ব্লকের মৎস্যচাষ সম্প্রসারন আধিকারিক সুমনকুমার সাহু ফিশারি ফার্মগুলি পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, কই মাছের চাষ সম্প্রসারণ ও সংরক্ষণের বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে মৎস্য দপ্তর।
পুকুর, ডোবা অথবা ছোটখাট জলাশয়ে কই মাছ চাষ অনায়াসেই করা যায়। সরকারি প্রদর্শনীর মাধ্যমে হাতে কলমে কই মাছের বাণিজ্যিক চাষ করে দেখানো হল যাতে আরও মাছ চাষিরা উৎসাহিত হয়ে বিলুপ্তপ্রায় কই মাছ চাষে এগিয়ে আসে। প্রযুক্তিগত ও বিভিন্ন কলাকৌশল সম্পর্কে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ-সহ পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। ফলে এই সকল মাছচাষ আরও ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ লাভ করবে। বিলুপ্তপ্রায় কই মাছ চাষের সফলতা এলাকায় উৎসাহ বেড়ে গিয়েছে। ফলে, কই মাছের চাষে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মৎস্যচাষি মহলে সাড়া পড়েছে। বাজারেও মিলছে উচ্চমানের এই কই মাছ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.