রাজা দাস, বালুরঘাট: ধান চাষে এরাজ্যে বিশেষ স্থান পেয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর। সেইসঙ্গে চাষের প্রবণতাও আগের তুলনায় অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে জেলায়। তবে এবার প্রাচীন পলিমাটি বেষ্টিত এই জেলার পান চাষকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পান সমিতি গঠনের পাশাপাশি পৃথক বিপণনে আরও জোর দেওয়ার দাবি জানালেন পান চাষিরা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিলি ব্লকের পাঞ্জুলের আগ্রা। ওই অঞ্চলের চাষিরা নিজেদের জমিতে এক সময়ে ধান, পাট চাষ করলেও, পরবর্তীতে পান চাষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে আগ্রা এলাকার ৭০ থেকে ৮০টি পরিবার এই চাষের সঙ্গে যুক্ত। এলাকায় ১৫০টিরও বেশি পানের বরজ রয়েছে। গঙ্গারামপুরের পাশাপাশি এখন বালুরঘাট ব্লকের রাধানগর, কুমারগঞ্জ এবং কুশমন্ডি ব্লকেও এই চাষ শুরু হয়েছে। ফলে ধানের পাশাপাশি পান চাষ শুরু করে বাড়তি লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন চাষিরা।
কিন্তু সমস্যাও রয়েছে। মাঝেমধ্যেই পানের ধসা রোগ শুরু হয়। ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয় পান চাষের উপর নির্ভর করে থাকা চাষিদের। অভিযোগ, সমস্যা থেকে বাঁচতে ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েও অনেকক্ষেত্রেই সাহায্য মেলে না। তবে মাঝেমধ্যেই পরিস্থিতি সামাল দিতে দক্ষিণ দিনাজপুরের উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা পানের ধসা রোগ মোকাবিলায় ওষুধ দেন। এ বিষয়ে চাষিরা জানান, মূলত কার্তিক মাসে তোলা পান পাতার চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু কালীপুজোর পর থেকে অর্থাৎ শীতের প্রবেশেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পানের বরজগুলিতে ধসা রোগের আতঙ্ক দেখা দেয়। এই ব্যপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আরও সক্রিয়তা এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের জন্য স্থায়ী পরিকল্পনার নেওয়া হোক, দাবি তাঁদের।
পাশাপাশি, পান চাষ হয় এমন অনেক এলাকায় কোনও রকম পান সমিতি নেই। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পানের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না তারা। তাঁদের কথায়, এই চাষিদের নিয়ে সরকারি পরিকল্পনা করা হলে চাষিরা আরও উৎসাহ পাবে পান চাষে। এ বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কৃষি অধিকারিক জানান, পান চাষের বিষয়টি দেখেন উদ্যান পালন দপ্তর। কৃষিদপ্তরের তরফে যথাযথ সহযোগিতাও করা হয় পান চাষিদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.