Advertisement
Advertisement

Breaking News

Chaiti Ghoshal

শতবর্ষে নতুন আঙ্গিকে ‘রক্তকরবী’, প্রথম পরিচালনাতেই সার্থক চৈতি ঘোষাল

কেমন হল চৈতি পরিচালিত 'রক্তকরবী'? পড়ুন নাটকের রিভিউ।

Chaiti Ghoshal helmed RAKTOKOROBI drama review
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:April 10, 2025 5:20 pm
  • Updated:April 10, 2025 5:20 pm  

নির্মল ধর: রবীন্দ্রনাথের ‘রক্তকরবী’ কী ধারার নাটক, কেমন তার উৎকর্ষতা, কতটা প্রাচীন, কতটা সাময়িক কিংবা নাটকটি কতটা কালহীন, এসব নিয়ে এই একশো বছর ছুঁয়েও তর্ক-প্রতিতর্ক, আলোচনার অন্ত নেই। এমনই আবহে কলকাতার ভবানীপুর ‘শিশিক্ষু’ দলের প্রযোজনায় এবং রবীন্দ্র নাটকেই শিশু বয়সে হাতেখড়ি হওয়া নন্দিত অভিনেত্রী চৈতি ঘোষালের পরিচালনায় ‘রক্তকরবী’ এল নতুনতর চেহারা ও আঙ্গিকে। সম্প্রতি সেই নাটক মঞ্চস্থ হল আকাডেমির মঞ্চে।

রোববার দুপুর। সাপ্তাহিক ভাতঘুমকে ছুটি দিয়ে কলকাতার দর্শক ‘হাউজফুল’ করেছিল আকাডেমিকে। এটা শুধু কম কথা নয়, এটাই আসল কথা। প্রতিবেশী দেশের কিছু বাঙালি যতই রবীন্দ্রনাথকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করুক না কেন, সেটা যে শেষপর্যন্ত নিজেদের মুখেই লাগছে, সেটা এপার বাংলা আবারও প্রমাণ করে দিলো। নাটকটির মূল থিম চিরকালীন, সেখানে কলম চালানোর স্পর্ধা দেখানোর সাহস খোদ শম্ভু মিত্র মহাশয়ও করতে পারেননি। চৈতি তো নয়ই। পরিচালক হয়ে তিনি বিভিন্ন দৃশ্যের সংযোজন, বিয়োজন কিছু করেছেন মাত্র এবং সেটাও রবীন্দ্র নাট্য ও বিষয় ভাবানুসারী। প্রতীকী ভাবনাগুলোকে আরও সহজ ও সরল করে তুলে এনেছেন তিনি মঞ্চে। নাচের কোরিওগ্রাফিতেও ছিল সাবলীল ছন্দ ও লয়। বিজয়লক্ষী বর্মনের সুরেলা সংক্ষিপ্ত ধারাভাষ্য দিয়ে ব্যতিক্রমভাবেই নাটকের শুরু, কিন্তু ঠিক পরেই মঞ্চে ঢুকে পড়লেন অধ্যাপক বেশে, খুবই পরিচিত আলোকচিত্রী অশোক মজুমদার। বেশ তরতরিয়েই এগোয় রবীন্দ্র নন্দিনী চরিত্রে পরিচালক চৈতি ঘোষালের উপস্থিতি, অভিনয় এবং নৃত্যের ছন্দে।

বিশু, ফাগুলাল, সর্দার, গোঁসাই এবং আড়ালে থাকা রাজা (দেবেশ রায় চৌধুরী) সব্বাই হাজির হয়ে যক্ষপুরীতে রাজার স্বৈরাচার নিয়ে সোচ্চার হয়। নন্দিনী সারাক্ষণ মুক্তিদাতা রঞ্জনের জন্য বৃথা অপেক্ষায় কাটান। মূল রচনা অনুযায়ী, দরজা খুলে রাজা একসময় বেরিয়ে আসেন ঠিকই, কিন্তু তিনি নিজে ধ্বজা ভাঙেন, উপলব্ধি করেন ধ্বংসের আসন্ন আহ্বান। রক্তকরবীর মঞ্জরী হাতে নন্দিনীর নেতৃত্বে বন্দীশালা ভেঙে যক্ষপুরীর শ্রমিকের দল রয়েছে তাঁর পেছনে। বিশু পাগলও তাঁদের সঙ্গী। ব্যাকগ্রাউন্ডে তখন বাজছে ‘….ধুলার আঁচল ভরেছে আজ পাকা ফসলে….’। বেশ অভিনব চিন্তার প্রযোজনা, তা বলতেই হয়। চৈতীর ভাবনার সঙ্গে মিলেছে দেবজ্যোতি মিশ্রের অনিন্দ্য শ্রুতির আবহ।

মৃদু অনুযোগ, শব্দ প্রক্ষেপণের। একটু নিচু ভলিউমে আবহ বাজালে সংলাপ অশ্রুত হত না। সৌমেনের আলো, দেবব্রতর মিনিমালিস্ট মঞ্চ প্রশংসার দাবিদার। পোশাকে রবীন্দ্র ঐতিহ্য বজায় রেখেও আজকের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। অভিনয়ে অবশ্যই প্রথম নাম চৈতী ঘোষালের। তিনি রঞ্জনের অপেক্ষায় যেমন আর্ত, তেমনই বন্ধ ঘরের আড়ালে থাকা রাজার প্রকৃত চেহারা দেখার জন্য আকুলতার অভিনয়ে আন্তরিক। ভরাট গলায় ‘অদৃশ্য’ রাজার উপস্থিতি সুন্দর এনেছেন দেবেশ। অধ্যাপকের চরিত্রে অশোক মজুমদার নিঃসন্দেহে এই প্রযোজনার বড় চমক!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement