Advertisement
Advertisement

Breaking News

জানেন, কেন একজনের সঙ্গে ‘কমিটেড’ হতে চান না এনা?

'মা'কে ছেলেরা চুমু পাঠায়, আই লাভ ইউ বলে৷'

Won’t go for a relationship right now, says Ena saha
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 7, 2017 10:54 am
  • Updated:June 7, 2017 12:18 pm  

২৮ মে একুশে পা দিলেন টলিউড সেলিব্রিটি কাম সোশ্যাল মিডিয়া সেনসেশন এনা সাহা৷ ২৬ মে রাতে নর্থ বেঙ্গল-এর উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ার আগে বাড়িতে তখন চলছে বার্থডে ব্যাশ-এর প্রিল্যুড৷ স্প্যাগেটি ধরনের টপ পরে গোছগাছ আর সেলিব্রেশনে ব্যস্ত এনা৷ তার মধ্যে কফি হাউস-এর জন্য এনার ব্যক্তিগত জীবনে উঁকি দিলেন  শম্পালী মৌলিক

বিরাট কোনও সুপারহিট ছবি না করেও এই পর্যায়ের জনপ্রিয়তা পেলেন কী করে এনা? ফেসবুকে ৯৯ লক্ষর উপরে আপনার ফলোয়ার৷ যা টলিউডের প্রায় কোনও সেলিব্রিটির নেই৷

Advertisement

আমার জাস্ট এক লাখ দশ বা এগারো হাজার মতো বাকি এক কোটি ছুঁতে (হাসি)! আমি ঠিক জানি না৷ এটা কিন্তু নিজে থেকেই হয়েছে আমার৷ ‘চিরদিনই তুমি যে আমার টু’ যেদিন রিলিজ হল, তার ঠিক দু’-তিনদিন আগে ফেসবুক থেকে পেজ ‘ভেরিফায়েড’ হয়েছিল৷ আমার যে পেজ ম্যানেজার বা সোশ্যাল বিজনেস টিম ছিল, তারা যোগাযোগ করেছিল৷ ‘চিরদিনই’র সঙ্গে সেই সময় আমি সাউথের (মালয়ালম ছবি) একটা ছবি করেছিলাম, সেটাও রিলিজ করেছিল৷ তখনই যোগাযোগ ঘটে৷ ওরা বলে আমার সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং হ্যান্ডেল করতে চায়৷ বলেছিল, প্রচুর টুইট করতে৷ যেটা আমি করতে পারিনি৷ ভুলে যাই৷ সবাই যেমন প্রতি মুহূর্তে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে অ্যাক্টিভ থাকে আমি কিন্তু পারি না৷ তখনও পারিনি৷ সবাই সেলফি তুলে ছাড়ে এফবি-তে৷ আমি কিন্তু অত সেলফিও তুলি না৷ অথচ আমিও হয়ে গেলাম সেলফির জন্য পপুলার৷ কী করে জাস্ট জানি না! ওরাই বারবার বলত একটা ছবি পাঠাও, আপলোড করতে হবে৷ তখন আমি নিজেই নিজের ছবি তুলে পাঠিয়ে দিতাম৷ ওরা সাউথের অনেক স্টারের জন্য এরকম কাজ করে৷ ওদের আমি ঠিক রাখিনি দেখাশোনার জন্য৷ কিছু পে-ও করতাম না৷ এখন যখন কোনও কোম্পানির জন্য, ব্র্যান্ডের জন্য কাজ করি, ফেসবুক থেকে লাইভ করি দেন আই গেট পেড৷ তখন ওদের সঙ্গে শেয়ার করি৷ এখন অবশ্য টিমটা বদলেছি৷ আমি কখনও সবচেয়ে বেশি লাইক বা ভিউস পেতে হবে ভেবে এসব করিনি৷ জাস্ট মজা করে করেছি৷ তারপর বাকিটা হয়েছে৷

17814361_1559351017489095_1438677539794841856_o

আর আপনার ফলোয়ারদের মধ্যে সব বয়সের, সব শ্রেণি-র লোকজন আছেন৷

হ্যাঁ, আশ্চর্য! আমি একটা ঘটনার কথা বলি৷ যেটা আমি গর্ব করেই বলি৷ ভারতের যে কোনও প্রান্তের এয়ারপোর্টে আমি যখন নামি, আমার কাছে অন্ততপক্ষে একজন ব্যক্তি এগিয়ে আসে, যে ‘এনা সাহা? ক্যান আই টেক আ সেলফি?’ এটা হয়৷ লাস্ট টাইম একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল৷ গোয়াতে আমরা শুটিং করছিলাম৷ সেটা আমার থার্ড তেলুগু মুভির শুটিং৷ কালাঙ্গুট বিচ-এ৷ আমার হিরো রীতিমতো ভয় পেয়ে গিয়েছিল৷ প্রথম যখন আমরা শুটিং করছিলাম, আমার দিকে লোকজন তাকাচ্ছিল৷ আমার কাছে আসবে কি আসবে না, এরকম ভাবটা৷ যখন দেখল ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে, লোকজন শিওর হয়ে গেল যে এটাই এনা সাহা! শুধু বাঙালি নয়, অন্য ভাষার লোকজনও হুড়মুড়িয়ে এগিয়ে এল৷ আমি অত বড় সুপারস্টার নই যে ‘মবড’ হব৷ তাও গোয়ায়! কিন্তু ওটাই হল৷ আমাদের টিম খুব কষ্ট করে আমাকে খুঁজে বের করেছিল৷ ফলে প্রথমদিন একজন বাউন্সার দিলেও, পরেরদিন থেকে দু’জন বাউন্সার দেওয়া হয়েছিল৷ খুব মজা লেগেছিল৷ (হাসি)

দিনে ক’টা করে প্রেমের প্রোপোজাল পান?

আমি পাই না৷ মা পায় (হাসি)৷

মানে?

আমার যে মোবাইল নম্বরটা সকলের কাছে দেওয়া, সেই মোবাইলটা মায়ের কাছে থাকে৷ আর আমার নিজের একটা সিক্রেট নাম্বার আছে৷ ফলে বেশিরভাগ প্রেমের প্রস্তাব মায়ের কাছেই যায়৷ মাকে ছেলেরা চুমু দেয়৷ আই লাভ ইউ বলে৷ বিয়েও করতে চায় কেউ কেউ৷ আর আমি বাড়ি ফেরার পর মা প্রতিদিন কাঁদে৷ আমার জন্য মা’কে এসব সহ্য করতে হয়েছে বলে৷ আর মাকে আমার ঘণ্টায় দু’বার করে ফোন করে জানাতে হয়, কেমন আছি৷

কিন্তু মায়ের জন্য তো তাহলে আপনার অনেক সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে৷

ওই সুযোগ চাই না৷ ভীষণ কষ্টের ওই একজনকে ভালবাসা৷ কখন ছেড়ে চলে যাবে কোনও গ্যারান্টি আছে? আমি রিস্ক নিতে চাই না৷ তাই একদম প্রেমে পড়তে চাই না৷

18623477_1604496839641179_7383231874231064939_o

আপনার প্রচুর ভক্ত হতাশ হবে যে৷

হোক৷ আপাতত আই অ্যাম এলিজেবল ব্যাচেলর৷ মেয়েদের কী বলে যেন, সেটা৷ প্রেম ব্যাপারটা ভাল৷ কিন্তু একজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ হলে সমস্যা৷ ভালবাসা সবার জন্য৷

এই মুহূর্তে এনার স্টেটাস কী?

কমপ্লিটলি সিঙ্গল৷ (হাসি)

বিশ্বাসযোগ্য !

হ্যাঁ, বলছি তো৷ (হাসি)

টেলিভিশন ও কিছু সংখ্যক ছবির পরে একনাগাড়ে দক্ষিণের ছবি করে স্টার হয়ে গেলেন!

আমি মোট পাঁচটা দক্ষিণের ছবি করেছি৷ দুটো মালয়ালম৷ তিনটে তেলুগু৷ মালয়ালম দুটো আগে রিলিজ হয়েছে৷ তেলুগু ছবি ‘লঙ্কা’ চলছে৷ ‘বাহুবলী’র সঙ্গে৷ জানি না আর কতদিন চলবে৷ ফিঙ্গার্স ক্রসড৷ আরও দু’টি তেলুগু ছবি করছি৷ আর বাংলায় সঞ্জয় বর্ধনের ‘বক্সার’ আর শঙ্কুদেব পণ্ডার ‘কমরেড’ রিলিজের অপেক্ষায়৷ ‘বক্সার’-এ খুব সুইট ক্যারেক্টার৷ ‘কমরেড’-এ গ্রামের মেয়ের চরিত্রে৷

এই মুহূর্তে আপনার ঝুলিতে সাউথের ছবির পাল্লা ভারী হলেও, ‘রাজকাহিনী’-তে ছোট রোলে ছিলেন৷ করেছেন ‘দুগ্ধনখর’, ‘চিরদিনই টু’, ‘চৌরঙ্গা’র মতো সিরিয়াস ছবিও৷ নিজেকে কীভাবে দেখতে চান?

আমি সবরকমের সিনেমা পছন্দ করি৷ সত্যি বলছি–লুঙ্গি ডান্স করতে চাই৷ পাহাড়ের উপরে উঠে শাড়ি পরে নাচানাচি করতে চাই, আমি বরফে খেলতে চাই৷ মারামারি করতে ভাল লাগে৷ অ্যাকশন ফিল্ম করতে চাই৷ সাউথে আমার প্রথম ছবিতে সেরকম করেছিলাম৷ মারছি, আর ছ’জন উড়ে যাচ্ছে৷ আনফরচুনেটলি সেই সিনটাই রাখেনি ফিল্মে৷ ‘লঙ্কা’ বলে ফিল্মে অনেক সিনই বাদ গেছে৷ সেটা নিয়ে আমার দুঃখ আছে৷ ওই লম্বা লম্বা সাউথ ইন্ডিয়ানরা উড়ে যাচ্ছে আমার মারে, ভাবতে পারেন! (হাসি) যে কারণে রোহিত শেট্টির মুভি আমার দারুণ লাগে৷ ভাল লাগে রাজা চন্দর ছবি৷ কথা হয়েছিল কাজের৷ সামহাউ হয়নি এখনও৷ ওঁর ছবি ভাল লাগে৷ মনে হয় আমিও ওঁর ফেভারিটদের মধ্যে একজন৷ ভাল লাগে রাজদার ছবি৷ ‘বোঝে না সে বোঝে না’- তে করেছিলাম৷ যেটা দেখেই আমাকে ‘চিরদিনই’-র জন্য সিলেক্ট করা হয়েছিল৷ রাজদার সঙ্গে ফুললেন্থ চরিত্রের জন্য কাজ করতে চাই৷ এমন ফিল্ম করতে চাই, যেটা দেখতে এসে বেশি মাথা খাটাতে হবে না৷

18199234_1587511134673083_5065211267823198622_n

স্কুলজীবন তো কাটছে না তা হলে!

(হাসি) অ্যাকচুয়ালি স্কুলটা শেষই হয়নি৷ আমি যদিও কলেজ যেতেই পারি না৷ প্রফেসররা জিজ্ঞেস করেন, কী করতে? তুমি এখানে কেন? যাদবপুর ইউনিভার্সিটি আমার৷ কী করে চান্স পেয়েছিলাম জানি না৷ হয়তো পাল্টাতে হবে আমাকে৷ আমি ক্যাম্পাসেই যাই না৷ ওরকম তো বলবেই অবাক হয়ে৷ কম্পারেটিভ লিটারেচার আমার সাবজেক্ট৷ এবারে কিছু একটা করতেই হবে, প্রাইভেট-ডিসট্যান্স এডুকেশন জাতীয়৷ নয়তো হচেছ না৷ কম্পারেটিভ অন্য কোথাও পাব না, সেটাও ভাবছি৷

‘চিরদিনই’-র সময়ে তো স্কুলে পড়তেন?

হ্যাঁ, ক্যালকাটা পাবলিক স্কুলে৷ ওই সময়ে স্কুল খুব হেল্প করেছিল৷ স্পেশালি প্রিন্সিপাল ম্যাম৷ উনি খুব সাপোর্টিভ ছিলেন৷ রেগুলার অ্যাকটিং করে স্কুল করা টাফ ছিল৷ কিন্তু ওঁর জন্যই পেরেছিলাম৷ খুব কম বন্ধুদের হেল্প পেয়েছিলাম৷

এখন আপনি সবে একুশ৷ এত ছোট বয়স থেকে ইন্ডাস্ট্রি-টিভি সিরিয়াল, তারপর ফিল্ম৷ মানিয়ে নিলেন কী করে?

আমি এগুলোতে খুব ইউজড টু৷ বরং কাজ না থাকলে আমার ডিপ্রেশন হয়৷ একদিনের বেশি ছুটি নিতে পারি না৷ আমি ক্লাস টু থেকে কাজ করি৷ আমার শিডিউল ছিল, সকাল আটটায় উঠে স্কুলে যাওয়া৷ দুটো থেকে তিনটের মধ্যে স্কুল ছুটি৷ তারপর স্কুলের বাইরে মা বা বাবা দাঁড়িয়ে থাকত শুটিংয়ে নিয়ে যাবে বলে৷ বা প্রোডাকশনের গাড়ি ওয়েট করত৷ আমি স্কুল থেকে সোজা শুটিংয়ে যেতাম৷ বলা থাকত আটটা-ন’টার মধ্যে আমার প্যাক আপ করলে ভাল৷ বাড়ি আসতাম৷ টিউশন নিতাম সাড়ে ন’টা-দশটা অবধি৷ তারপর মা খাইয়ে দিত, হোমওয়ার্ক করতাম৷ ঘুমিয়ে পড়তাম৷ প্রথম সিরিয়াল ছিল ‘ফোর প্লাস’৷ তারপর চ্যানেল এইট-এর অনেক কাজ করেছি৷ আমি প্রিয়াঙ্কাদিদির অনেক ছোটবেলার রোল করেছি৷ ইন্ডাস্ট্রিতে যদি কেউ আমার খুব ক্লোজ হয় সেটা হচ্ছে প্রিয়াঙ্কাদিদি৷ সবথেকে৷ আমার দশ থেকে কুড়ি বছরের বার্থডেতেও প্রিয়াঙ্কাদি ছিল৷

সেদিনের বাচ্চা মেয়েটা অভিনয় করতে করতে বড় হল৷ এখন মারুতি আর্টেগা গাড়ি চড়ে৷ কুড়ির কোঠায়৷ পাড়ার লোকজন কীভাবে রিঅ্যাক্ট করে?

পাড়া বা স্কুলেও অনেকের ধারণা আছে যে আমাদের প্রফেশনে ছেলেমেয়েরা এলে নষ্ট হয়ে যায়৷ বাবা-মা বা বাড়ির লোকের তখন নিষেধ থাকে যে, ওর সঙ্গে তা হলে মিশো না৷ সেইটা পাল্টে গিয়েছে৷ এখন যাঁরা এনা সাহা নামটা চিনতে পারে, মজার ব্যাপার হল, সেই আগের মানুষেরাই আজকে আমাকে প্রায়োরিটি দেয়৷ হয়তো পাড়ায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খাচ্ছি, কেউ এসে বলল, টাকাটা দিতে হবে না৷ রেস্তোরাঁয় গেলে প্রচুর কমপ্লিমেন্ট পাই৷ এটা অবাক করে৷ ভালই লাগে৷

16836097_1514334951990702_5573721216122256475_o

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement