Advertisement
Advertisement

কেমন ছিল ছোটবেলার রথের স্মৃতি, জানালেন টলিউডের নায়িকারা

স্মৃতি নিয়ে সন্তুষ্ট কেউ, কারও মনে আবার বর্তমান নিয়ে রয়েছে আক্ষেপ।

Tollywood celebs share childhood memories of Rath Yatra
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 14, 2018 11:36 am
  • Updated:July 14, 2018 11:52 am  

সেজেগুজে কেউ বের হতেন রথ নিয়ে, কেউ আবার পাপড়-জিলিপিতে মেতে থাকতেন। তারাদের রথ টানার স্মৃতির কোলাজ। কথা বলেছেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী ও তিতাস।

 ঐন্দ্রিলা সেন: ছোট থেকে রথের দিনটা ভীষণ আনন্দে কাটত। বেশির ভাগ সময়ই মাসি-মেসো আমাদের বাড়ি আসত বা আমরা যেতাম। মেসোই আমার প্রথম রথ নিজের হাতে গড়ে দিয়েছিল। তিনতলা মজবুত ওই রথটাই প্রতি বছর আমি টানতাম। রথ সাজানোয় আমি হাত লাগালেও রথের সাজের যাবতীয় করত আমার বাবা। আমার বাবা দারুণ রথ সাজিয়ে দিত। দুপুরে নানাবিধ রান্নাও হত বাড়িতে। বিকেলবেলা আমি সেজেগুজে রথ সাজিয়ে বেরতাম যখন, তখন পাড়ার সব কাকু-কাকিমা, জেঠিমারা পয়সা দিত। আর আমি প্রসাদ খাওয়াতাম সবাইকে। সেই পয়সা আবার জমিয়েও রাখতাম আমি। রথে জিলিপি-ফুলুরির চেয়ে প্রতি বছর এদিন সকাল থেকে রাত অবধি অগুনতি রঙিন মঠ খেতাম। কিটকিটে মিষ্টি মঠ একের পর এক খেয়ে চলতাম অনায়াসে। একটু বড় হওয়ার পর মা-বাবা-মাসি-মেসো ও অন্যান্য পরিবারের লোকজনে মিলে মায়াপুর যেতাম। প্রতিবার তাই করি। এ বছরও আমন্ত্রণ করা হয়েছে মায়াপুর থেকে, হয়তো কাজের চাপে এবার আর যাওয়া হয়ে উঠবে না।

Advertisement

সোনালি চৌধুরি: রথ আমার ভীষণ পছন্দের একটা উৎসব। আমার মা-বাবা তো আর আমার মতো অভিনয়ের পেশায় ছিল না!। ফলে এ বিষয়গুলোতে ছেলে-মেয়েকে ইনভল্‌ভ করার সময়ও পেয়েছে। মা রথ কিনে, রথ সাজিয়ে দিত। প্রথমে একতলা রথ কিনে দিয়েছিল। তারপর দোতলা। শেষ যে রথটা আমি টেনেছি, সেটা তিনতলা। আমি নিজেও রথ সাজিয়েছি। মা মার্বেল পেপার, নানারকম ক্রাফ্‌টের সরঞ্জাম কিনে দিত। সেগুলো কেটে কেটে বানিয়েছি। রথের মেলাতে গিয়েছি প্রত্যেকবার। আর পাপড়ভাজা, তেলেভাজা ছাড়া রথ ভাবতেই পারতাম না। এখন সময় খুব কম, কিন্তু তাহলেও রথের দিন সুযোগ পেলে পাপড়ভাজা আনিয়ে খাবই। রথ টানতাম পাড়াতেই। প্রচুর পয়সাও পেতাম বড়দের কাছ থেকে। পাড়ার জেঠু, কাকু সবাই ঠাকুর দেখে টাকা দিত। বন্ধুদের মধ্যে কম্পিটিশন হত কে বেশি পয়সা পেয়েছি। সেই দিয়ে পরে সেলিব্রেশনও হত।

মনামি ঘোষ: বসিরহাটে আমাদের আদি বাড়ি। আমাদের বাড়িটা বেশ বড়। বড় দালান, পুকুর, বাগান- সব মিলিয়ে অনেকটা জায়গা। এখনও আছে সেই বাড়ি। যৌথ পরিবার ছিল, তাই ভাই-বোন অনেক। সবাই মিলে রথ তৈরি করতাম। রথের আগেই বাড়ির সব বড়রা টাকা দিত কিছু কিছু করে। সেই টাকা জমিয়ে রথের প্রস্তুতি নিতাম। কেনা রথও সাজিয়েছি বহুবার। সাজিয়ে নিয়ে বেরতাম সবাই মিলে। তখনও আবার সবাই ঠাকুর দেখে, প্রসাদ খেয়ে টাকা দিত। সেই টাকা দিয়ে পরের সবাই মিলে খাওয়া হত। এখন তো রথের দিন আলাদা করে ছুটি থাকে না কিন্তু একবার মনে আছে একটা শুটিং-এ আমি রথ কিনে আনিয়েছিলাম, সঙ্গে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাও কেনা হয়েছিল। ওই শুটে বেশ কয়েকজন ছোট বাচ্চা ছিল তো ওদের জন্য করেছিলাম। তেলেভাজা, পাপড়ভাজাও খেয়েছিলাম। রথ টানা হয়েছিল। আমাদের দেশের বাড়িতে রাসমেলা হয়, তাই রথের মেলায় ছোটবেলায় বড় একটা যাওয়া হয়নি।

[পর্দায় মধুবালা হতে চান শ্রীদেবী-কন্যা জাহ্নবী]

সৌমিলি ঘোষ বিশ্বাস: রথের দিন কখনওই স্কুল ছুটি থাকত না আমাদের। তাই সকাল থেকে এক্সাইটমেন্টটা চেপে রাখতে হত কখন বাড়ি যাব আর রথ টানব। স্কুল থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়েই পাড়ার তিন-চারজন বন্ধু মিলে রথ টানতে বেরতাম। রথ সাজানোর দায়িত্ব বেশির ভাগটাই মা-বাবা ও দাদা নিত। আমার দাদার হাতের কাজ ভীষণ সুন্দর। মার্বেল পেপার কেটে সুন্দর করে সাজিয়ে দিত। আমার কাজ ছিল ঠাকুর সাজানো। ঠাকুরকে মালা পরিয়ে প্রসাদ দিয়ে রথ বের করা। একেবারে ছোটবেলায় একতলা রথ টানতাম, তারপর একটু বড় হলে এল তিনতলা রথ। সে কী আনন্দ আমার! প্রতি বছর প্রসাদে মিষ্টির পাশাপাশি রঙিন মঠ থাকতই। ঠাকুর দর্শন করলেই প্রসাদ খাওয়াতাম আর বড়রা প্রণামি দিত। সেই পয়সা জমিয়ে রাখতাম প্রতি বছর। রথ টানার শেষে রথ রেখে আসতাম পাশের বাড়ি। ওটাই আমার কাছে জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি ছিল। উলটোরথের দিন আবার বাড়িতে নিয়ে আসতাম। এদিন বাড়িতে সুজি আর পাপড়ভাজা মাস্ট ছিল। কোনওবার মিস যায়নি। এখন রথের দিন কাজেই থাকি। আমি আর আমার হাজব্যান্ড জগন্নাথদেবের খুব ভক্ত।

 

মানালি দে: রথের দিন রথ তো টানতামই। আমাদের বাড়িতে আমার রথের পাশাপাশি আমার বন্ধুদেরও রথ সাজিয়ে দেওয়া হত। সবাই মিলে হইহই করে বের হতাম। কারও একতলা, কারও দোতলা, কারও তিনতলা। যার যত বেশি তলা রথ, তার মজা তত বেশি। এবার সবাই রথের ঠাকুর দর্শন করে প্রসাদ খেয়ে টাকা দিত। বেশ অনেক টাকা উঠত। সেই টাকা দিয়ে উলটোরথের দিন পায়েস রান্না করে ঠাকুরকে নিবেদন করে সবাই খেতাম। আমাদের বাড়ির ওখানে রাসমেলা হত রথের মেলা হত না। আমার রথের সবচেয়ে সুন্দর স্মৃতি হল মায়াপুরের রথযাত্রা। আমার ওদের ওখানে গেস্ট হয়ে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। ওরাই নিয়ে গিয়েছিল। সে এক অদ্ভুত সুন্দর অনুভূতি। হাজার হাজার লোক রথ টানবে। আমার অপেক্ষায় তারা। আমি প্রথমে রথের সামনেটা ঝাঁট দিয়ে, তারপর রথের দড়িতে টান দিলাম। তারপর রথ বেরল। আমি উদ্বোধন করলাম। রথের দিন এখন বেশির ভাগ সময় ব্যস্ত থাকি, কিন্তু রথের দিন পাপড়ভাজাটা অবশ্যই খাওয়া হয়, তা সে বাড়িতে থাকি বা শুটিং-এ।

[বাঙালির প্রিয় রহিম সাহেব হবেন অজয় দেবগণ, প্রযোজনায় বনি কাপুর]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement