সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুজোয় মুক্তি পাচ্ছে চার-চারটে বাংলা ছবি। কিন্তু মূল সমস্যা, কিছুতেই পাওয়া যাচ্ছে না প্রেক্ষাগৃহ। অতঃপর শিরে সংক্রান্তি! এই প্রথমবার অবশ্য বাংলা সিনেমা এমন সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। আগেও সিনেমা হল না পাওয়ার সমস্যা দেখা দিয়েছে বহুবার। কিন্তু এবার একেবারে ‘অ্যালার্মিং সিচুয়েশন’, বলছেন সিনে বিশেষজ্ঞরা। দোর গোড়ায় কড়া নাড়ছে বাংলা সিনেমার শোচনীয় পরিস্থিতি। দুন্দুভি অবশ্য অনেক আগেই বেজেছিল। তবে গুটি কজন পরিচালকের হাত ধরে প্রেক্ষাগৃহমুখো হয়েছেন বাঙালি সিনেদর্শকরা। তবে পরিস্থিতির যে খুব একটা হেরফের হয়েছে এমনটা কিন্তু নয়! ঠিক এমনই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে টলিউডের পুজো রিলিজগুলিকে। আর এই বিষয় নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিনেতা তথা সাংসদ দেব।
“আমি গর্বিত বাংলার সাহিত্য, কবিতা, গান, বাংলার জীবনযাপন নিয়ে। আর যা কিছু বাংলার, যা কিছু বাঙালির, তাই নিয়েই বাংলা সিনেমা। বাংলাকে বাঁচাতে হলে, বাঙালিকে বাঁচাতে হলে, বাংলা সিনেমাকে বাঁচাতেই হবে। আসুন আমরা সবাই বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়াই। এই মুহূর্তে এটাই সবথেকে জরুরি কাজ”, মন্তব্য দেবের।
“রাজ্যের সিনেমা হল মালিকদের বলি, হিন্দি ছবির থেকে বেশি নয় অন্তত সমান সুযোগ আমাদের দিন। লড়াইটা অন্তত সমানে সমানে হোক।”
বাংলা ছবির জন্য সেভাবে স্লট না পাওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করে দেব প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষদের উদ্দেশে বললেন, “রাজ্যের সিনেমা হল মালিকদের বলি, হিন্দি ছবির থেকে বেশি নয় অন্তত সমান সুযোগ আমাদের দিন। লড়াইটা অন্তত সমানে সমানে হোক।” বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়ানোর আরজি জানিয়েছেন অভিনেতা তথা সাংসদ।
উল্লেখ্য দিন কয়েক আগে এমন শোচনীয় পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’ ছবিটিকে। যেই ছহবিতে অভিনয় করেছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী, রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও অপরাজিতা ঘোষদাসের মতো অভিনেতারা। ধুকছে বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রি, মত সিনে বিশেষজ্ঞদের। ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’র মতো ‘১৭ সেপ্টেম্বর’ এবং ‘ভাল মেয়ে খারাপ মেয়ে’ ছবি ২টিরও সিনেমা হল পাওয়া নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
আঞ্চলিক ভাষার সিনেমাগুলি যেন আরও প্রাধান্য পায়, সে জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে প্রাইম টাইমের শোয়ের শ্লটে অন্তত একটি আঞ্চলিক ছবি দেখানো আবশ্যিক করে দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, গত বছর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফেও বিবেক কুমার এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, রাজ্যের প্রত্যেকটি প্রেক্ষাগৃহে এবং মাল্টিপ্লেক্সগুলিতে প্রাইম টাইমে অন্তত একটি বাংলা সিনেমা দেখানো আবশ্যিক করা হল। অন্তত ১২০ দিনের জন্য দেখাতেই হবে! কিন্তু তারপরও কেন বাংলা সিনেমা হল পাচ্ছে না, সেই প্রশ্ন কিন্তু উঠছেই। দেবকে সমর্থন জানিয়ে সৃজিত মুখোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “তোমার সঙ্গে একমত। বাংলা সিনেমার পাশে থাকুন।” সমর্থন জানিয়েছেন পরিচালক প্রতীম ডি গুপ্তও।
বাংলা সিনেমা হল পাচ্ছে না, শূন্যতাটা যে কোথায় রয়ে গিয়েছে, সেটা অজানা। তবে সময় থাকতেই সতর্ক হওয়া উচিত, নতুবা ‘এক দেশ এক ভাষা’ চক্রের শিকার হয়ে আঞ্চলিক ভাষা-সংস্কৃতিগুলিও বিলুপ্ত হতে কিন্তু বেশি সময় নেবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.