‘দিদি দেখো না, যদি কাদম্বিনী ভ্যাকসিনটা আবিষ্কার করতে পারে!’ অনুরাগীদের এমন আবদারে হতবাক ‘কাদম্বিনী’ ঊষসী রায়। তাঁকে মোবাইলে ধরলেন শম্পালী মৌলিক।
আমরা চলেছি করোনার সংকটকালের মধ্য দিয়ে। যখন চিকিৎসকরাই ত্রাতা। সেই সময়েই ঊষসী রায় (Ushashi Ray) বাংলার প্রথম মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের চরিত্রে আত্মপ্রকাশ করলেন, জি বাংলার ‘কাদম্বিনী’ ধারাবাহিকে। এই পরিস্থিতি ধারাবাহিকটি সম্বন্ধে যে বাড়তি আবেগের জন্ম দিয়েছে, মেনে নিলেন অভিনেত্রী। মোবাইলে কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে, “লকডাউনে যে ক’টা লাইভ করেছি বা ছবি আপলোড করেছি সেখানেও আমার অনুরাগীরা লিখেছে, ‘দিদি তুমি দেখো না, যদি কাদম্বিনী ভ্যাকসিনটা আবিষ্কার করতে পারে!’ এটা পড়ে আমার মজা লেগেছিল যে, মানুষ এত সিরিয়াসলি নেয়। কেউ এমনও জিজ্ঞেস করেছিল যে, ‘কাদম্বিনী শুরু হলে কি করোনা-আতঙ্ক কমবে? উনি তো ডাক্তার।’ এটা আমার কাছে বড় প্রাপ্তি।” হাসতে হাসতে বললেন তিনি। মুক্তির পর থেকেই দর্শকের প্রশংসা আদায় করে নিচ্ছে ধারাবাহিকটি। আদতে এক গৃহিণীর অসাধ্যসাধনের গল্প। ব্রিটিশ শাসিত অবিভক্ত বঙ্গে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কাদম্বিনীর লড়াই বড় কঠিন ছিল। তবে তিনি পাশে পেয়েছিলেন স্বামী দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়কে। বিয়ের পর তিনি কলেজে যান, তারপর চিকিৎসক হয়ে ওঠেন। এবং নানা প্রকার সমাজকল্যাণমূলক কাজে অগ্রণী ভূমিকা ছিল তাঁর। কাদম্বিনীর সংগ্রাম দেখলে বোঝা যাবে উনিশ শতকের সেই দিনগুলোয় সমাজে নারীর অবস্থান ঠিক কেমন ছিল।
‘বকুল কথা’র দুর্দান্ত সাফল্যের পর ফের ধারাবাহিকের মূল চরিত্রে ঊষসী ‘কাদম্বিনী’তে (Kadambini)। একইসঙ্গে তিনি এক্সাইটেড এবং নার্ভাসও। উপরন্তু তিনমাস বাদে ফিরেছেন শুটিং ফ্লোরে। প্রচুর বিধিনিষেধও মানতে হচ্ছে। তবে ঊষসীর কথায়, “এই ক’দিন শুটিং করতে করতে সবটাই মাথায় ঢুকে গিয়েছে যে, কখন হাত ধুতে হবে, কখন স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।’ তবে দূরত্ববিধি মেনে শুটিং করা চ্যালেঞ্জ নয় কি? ‘অভিনয় জিনিসটাই এমন, সেখানে মায়ের হাত ধরতে পারব না, বাবার হাত ধরতে পারব না, এটা অদ্ভুত পরিস্থিতি। এভাবে অভিনয় করা শক্ত তবে মানিয়ে নিয়েই করতে হচ্ছে।’ বললেন অভিনেত্রী।
‘বকুল কথা’ শেষের পর লকডাউনের কারণে তিনমাস বিরতি পেয়েছিলেন কাজে। ওই ফাঁকা সময়ে বাংলার নবজাগরণের ওপর বেশকিছু বইপত্রও পড়ে ফেলেছেন তিনি। সলাজ হাসিতে ঊষসী জানালেন, “আমাকে সবাই ভালবাসে বলে কিনা জানি না। ‘কাদম্বিনী’র জন্য প্রচণ্ড ভাল প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি।”
অন্যদিকে প্রতিযোগী চ্যানেলেও তো আরেকজন ‘কাদম্বিনী’ রয়েছেন। বাড়তি চাপ অনুভব করছেন না? ঊষসীর স্পষ্ট উত্তর, ‘আমি কোনও অতিরিক্ত প্রেশার অনুভব করি না!’ সোলাঙ্কি অভিনীত অন্য ধারাবাহিকটি দেখেছেন? “১১ তারিখ থেকে শুট শুরু হয়েছে। প্যাক-আপ রাত আটটায় হয়। তারপর চুল খুলে, মেকআপ তুলে বাড়ি ফিরতে সাড়ে ন’টা বাজে। এখন ফিরেই স্নান করতে ঢুকে যাই। তারপর দিনের শেষে ক্লান্ত হয়ে পড়ি, ফলে আর কিছু দেখা হচ্ছে না। ঘুমিয়ে পড়ছি।” হেসে বললেন ঊষসী। বোঝাই যায় তাঁর ফোকাস এখন শুধুমাত্র ‘কাদম্বিনী’তে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.