শম্পালি মৌলিক: সমাজের প্রচলিত প্রথা বদলের গল্প নিয়ে এল ‘যমুনা ঢাকি’। জি বাংলার এই ধারাবাহিকটি এক সাধারণ মেয়ের লড়াইয়ের কথা বলবে। বলবে সমাজের ধরাবাঁধা ধ্যান-ধারণা পালটানোর কথা। নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার বার্তা নিয়ে শুরু হয়েছে ‘যমুনা ঢাকি’।
মলাট চরিত্রে রয়েছেন শ্বেতা ভট্টাচার্য। মোবাইলে কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে। বললেন, “এই ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়ে আমরা মেসেজ দিচ্ছি যে, মেয়েরা সব পারে। এর আগেও আমি ‘জড়োয়ার ঝুমকো’ ধারাবাহিকে ছৌ নাচ করেছিলাম বা গয়না বানানো শিখেছিলাম। যেগুলো সাধারণত ছেলেরা করে। এবারও আমি ঢাক বাজাচ্ছি। যেটা পুরুষ অধ্যুষিত ক্ষেত্র বলেই ধরা হয়। পরিচালক স্নেহাশিসদার (চক্রবর্তী) কনসেপ্ট ছিল যে, মেয়েরা পারে না, এমন কোনও কাজ নেই। প্রোমো থেকেই দারুণ ফিডব্যাক পাচ্ছি। লঞ্চের পর তো অনুরাগীরা প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছে।”
যমুনা চরিত্রের জন্য শ্বেতা ঢাক বাজানো শিখেছেন। তাঁর বাড়ির কাছে একজন ঢাকি থাকেন। যিনি পাড়ার পুজোয় ঢাক বাজান। তাঁর কাছেই শেখা। আর শুটিং ফ্লোরে প্রত্যেকদিন একজন ঢাকি থাকছেন। যাঁর কাছ থেকে শ্বেতা শিখে নিচ্ছেন কীভাবে ঢাক কাঁধে রাখবেন কিংবা বাঁ হাতে কেমন করে কাঠি ধরবেন। এমনকী কোনখানে কীভাবে মারলে কেমন আওয়াজ বেরবে, সেসবও আয়ত্ত করেছেন। মাঝে মাঝে আঙুলে কাঠি পড়ে আঙুল ফুলেও যাচ্ছে। তবু হেসে বললেন, “ভীষণ এনজয় করছি শুটিং ফ্লোর। বিশেষ করে স্নেহাশিসদার লেখা এই চরিত্রটা।”
এর আগেও তো অনেক কাজ করেছেন স্নেহাশিস চক্রবর্তীর সঙ্গে। সেটা কি বাড়তি সুবিধে দিচ্ছে না? শ্বেতার উত্তর, “নিশ্চয়ই একটা কমফোর্টজোন তো তৈরি হয়ে গিয়েছে। ‘ব্লুজ’ আমার পরিবারের মতো। আমি স্নেহাশিসদার লেখার ভক্ত। একটাই মানুষ পরিচালনা করেন, গান করেন, লিরিক্স লেখেন, এডিট করেন– অলরাউন্ডার যাকে বলে। প্রথম কাজ শিখেছি দেবাংশুদার (সেনগুপ্ত) কাছে। তারপর আজ আমি যেটুকু হয়েছি স্নেহাশিসদার জন্যই। ‘ভালবাসা ডট কম’, ‘জড়োয়ার ঝুমকো’, ‘তুমি রবে নীরবে’, ‘কনক কাঁকন’, ‘জয় কানহাইয়া লাল কি’– কত কাজ ওঁর সঙ্গে করেছি। তবে অবশ্যই এবারের ‘যমুনা ঢাকি’ খুব স্পেশ্যাল আমার জন্য।”
সিরিয়ালে পুরুষ অধ্যুষিত একটা পেশায় প্রবেশ করছে যমুনা। তার বাবা গঙ্গা নিজেও ঢাকি। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতায় সে একটা সময় ঢাক নামিয়ে রাখতে বাধ্য হয়। মেয়ে যমুনা বাবার ঢাক কাঁধে তুলে নেয়। যা গ্রামের কেউ ভাবতেও পারে না। মেয়ে হয়ে ঢাক বাজাবে কী করে? রায়বাড়ির দুর্গাপুজোয় যমুনা এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। বলা যায়, সেটাই তার জীবনের মোড় ঘুরে যাওয়ার মুহূর্ত। কী হয় দেখতে হবে। শ্বেতা ছাড়া অন্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন রুবেল দাস, দেবযানী চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কাঞ্চনা মৈত্র। শ্বেতার কাছে শেষ প্রশ্ন ছিল যে, নিজের ঢাক কি নিজে পেটাতে পারেন? তিনি হেসে বললেন, ‘চাইব দর্শকই আমার ঢাক পেটাক। নিজের ঢাক নিজে পেটাতে পারি না।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.