সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘মুকুট’ সিরিয়াল থেকে অভিনেতাদের ছেড়ে যাওয়া নিয়ে জোর তরজা টেলিপাড়ায়। অভিনেত্রী শ্রীপর্ণা ব্যক্তিগত কারণেই ধারাবাহিক ছেড়েছেন বলে জানান। কিন্তু যুধাজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় পরোক্ষে স্নেহাশিস চক্রবর্তীর ‘ব্লু’জ প্রোডাকশন’-এর বিরুদ্ধে ‘শিল্পীর মানহানি’র অভিযোগ করেন। এর মধ্যেই ফেসবুকে একটি অডিও স্টোরির মাধ্যমে স্নেহাশিস চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মহিলা শিল্পীদের সঙ্গে অনৈতিক ব্যবহার করার অভিযোগ করা হয়। সেই সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে প্রযোজকের পাশে দাঁড়ালেন সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়, সোমা দে এবং ঋতব্রতা দে। ‘নায়িকা নম্বর ১’ সিরিয়ালের সেট থেকেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দিলেন তিন অভিনেত্রী।
জুলাই মাস থেকে নতুন কাজ শুরুর বার্তা দিয়ে যুধাজিৎ লিখেছিলেন, “শিল্পীর মানহানি করে শিল্পকে ভালোবাসার মিথ্যে অভিনয়টা আর সহ্য হল না। ভালবেসে কাজটাই শুধু করতে পারি আর সেটুকুই করি। বিদায় অহংকার।” এর মধ্যেই আবার একটি অডিও স্টোরিতে স্নেহাশিস চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করা হয়েছিল (যদিও সেই ভিডিও এখন আর ফেসবুকে নেই)।
এ সমস্ত কিছুর জবাব দিয়েই স্নেহাশিস চক্রবর্তীর পাশে দাঁড়ালেন তিন বিভিন্ন বয়সের অভিনেত্রী। কবিতার মাধ্যমে বহু মানুষের মন জয় করেছেন সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২০-২০২১ সাল থেকে তিনি স্নেহাশিস চক্রবর্তীর ‘ব্লু’জ প্রোডাকশন’-এর সঙ্গে যুক্ত। শিল্পীর কথায়, “নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি এখানে কোনও কম্প্রোমাইজ হয় না। প্রচণ্ড কামফর্ট নিয়ে সকলে কাজ করেন। হ্যাঁ, কেউ যদি ভুল করেন তাহলে তো অবশ্য সেটা নিয়ে বলতে হয়। তবে স্নেহাশিসদাকে সবাই শ্রদ্ধা করে। উনিও সকলের খেয়াল রাখেন। আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি কোথাও কোনও সমস্যা দেখেনি। এই হাউসের ডিসিপ্লিন আছে। পেমেন্ট দুর্দান্ত। এমনকী পুজোর সময় আগেও টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। ওনার মতো ভদ্র মানুষ সত্যিই খুব কম আছে। সিনিয়ার মহিলাদের দেখে উঠে দাঁড়ান। এই অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভুল।”
অডিও স্টোরিতে স্নেহাশিস চক্রবর্তীর স্ত্রী এবং অভিনেত্রী রূপসার নামও উল্লেখ করা হয়েছিল। তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়েই সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যে হাউসে এতদিন কাজ করছ, সেটা তো পরিবার। সেখান থেকে বেরিয়ে গেলে নিন্দে করে বেড়াবে? সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা বলা হচ্ছে। সমস্ত মেয়েদের এখানেই আপত্তি। আমাদের নাম নিয়ে কেন বলা হবে? আমাদের যদি কিছু বলতেই হতো আমরা বলতাম। এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা যায় না। রূপসা অভিনেত্রী এবং ঘটনাচক্রে স্নেহাশিসদার স্ত্রী। যদি ওনার কিছু হয়ে থাকে উনি নিজে বলবেন। এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ কি আমরা করতে পারি এই শিক্ষিত সমাজে? এ কী কথা! এটা তো সবাই বুঝতে পারছে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে অসভ্যতাগুলো করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া হাতে চলে এসেছে বলে যা খুশি তাই করতে পারি না।”
বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সোমা দে। গত তিন বছর ধরে স্নেহাশিস চক্রবর্তীর ‘ব্লু’জ প্রোডাকশন’-এ কাজ করছেন। তাঁর বক্তব্য, “নিজে বিষয়টি দেখিনি। শুনলাম। হতবাক হয়ে গেলাম। এরকম ঘটনা ঘটতে পারে! এইরকম কখনও দেখিনি! সোশ্যাল মিডিয়া হওয়াতে অনেকে অনেকরকম সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি স্নেহাশিসবাবুর কাছে প্রায় তিন বছর ধরে কাজ করছি। দু’বছর কাজ করিনি। তারপর ওনার কাছে কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলাম। ‘যমুনা ঢাকি’তে সুযোগ দিয়েছিলেন। সেই থেকে কাজ করে চলেছি। মানে কাদের এত সমস্যা আমি তো বুঝে উঠতে পারছি না। সেটা তো কথা বলে মিটিয়ে নেওয়া যায়। সেটার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় অবান্তর কথাগুলো লেখার কী দরকার? আমার মনে হয় না কোনও শিল্পী এই ঘটনা ঘটাতে পারে। শিল্পীরা সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা। সত্যিকারের শিল্পীর পক্ষে এমন কাজ করা সম্ভব নয়। এভাবে কুৎসা করা অত্যন্ত কুৎসিত ব্যাপার। ভীষণ ভাল মানুষ। সকলের উপকার করেন। আমি নিজেই উপকৃত। কেন করা হল? কী লাভ হল। এতে ওনার ক্ষতি হবে না। যিনি এই কাজ করেছেন তাঁর ক্ষতি হবে।”
‘নায়িকা নম্বর ১’ সিরিয়ালই ‘ব্লু’জ-এর সঙ্গে ঋতব্রতা দের প্রথম কাজ। “তিন সপ্তাহ আগেই ওনাকে (স্নেহাশিস চক্রবর্তী) বলছিলাম আমি এই হাউসে সেফ ফিল করি। বাকি মহিলারাও সেফ ফিল করেন। এখানে না কাউকে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয় না। টন্ট, টিজও করা হয় না। কারণ আমাদের দাদা যিনি ক্যাপ্টেন তিনি নিজে ঠিক আছেন। কোনও মেয়েকে খারাপভাবে কথা বলেন উনি ব্যবস্থা নেন। তাই ওনার নামে যে বা যাঁরা বলছে সম্পূর্ণ ভুল কথা বলছে। আমরা প্রত্যেকটা মেয়ে সেফগার্ডের মধ্যে রয়েছি। ব্যক্তিগত রোষে এটা করেছে যুধাদা। ক্ষোভ, এক মাসে মাত্র ন’দিন ডেট পেয়েছেন। কিন্তু এক মাসে যখন ২১, দু’টো সিরিয়াল মিলিয়ে ৩৫টাও ডেট পেয়েছেন তখন কিছু বলেননি। এটা বন্ধ করা উচিত।”, বলেন তরুণ অভিনেত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.