সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রজঃস্বলা কিংবা ঋতুমতীদের নিয়ে সমাজে নানা ধরনের প্রচলিত ধারণা রয়েছে। যেমন- নারীদেহ পুরোপুরি শুচি কি না! সেই প্রশ্ন ওঠে এখনও। রজঃস্বলা কিংবা ঋতুমতীদের মন্দিরের চৌকাঠের ওপারে যাওয়ার কোনও অধিকার নেই। ঋতুমতী অবস্থায় আলাদা শোয়া, রজঃস্বলাকে একঘরে করে রাখা, রান্নাঘরে প্রবেশ নিষিদ্ধর মতো আরও একগুচ্ছ ট্যাবু রয়েছে। প্রসঙ্গত, উইন্ডোজ প্রোডাকশন প্রযোজিত ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ও সেসব ট্যাবুকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই মুক্তি পাচ্ছে ৬ মার্চ। সিনেমার পর এবার ধারাবাহিকেও ঋতুমতী নারীদের নিয়ে সেই ট্যাবু ভাঙার প্রসঙ্গ উঠে এল। নেপথ্যে স্টার জলসার ধারাবাহিক ‘প্রথমা কাদম্বিনী’। কাদম্বিনীর চরিত্রে সোলাঙ্কি রায়। খুব শিগগিরিই মুক্তি পেতে চলা এই ধারবাহিকের দ্বিতীয় প্রোমোতে তৎকালীন সমাজে রজঃস্বলা নারীদের অবস্থান সম্পর্কিত বিষয়টি প্রকাশ্যে এল।
‘প্রথমা কাদম্বিনী’র নতুন প্রোমোতে তৎকালীন গোঁড়া সমাজের এক দৃশ্য উঠে এল। মহিলা চিকিৎসক, নারীদেহ তো পুরোপুরি শুচি নয়! কাজেই, তিনি যদি রজঃস্বলা অবস্থায় গৃহস্থের বাড়িতে চিকিৎসা করতে আসেন তিনি, তাহলে তো ঘোর অপরাধ। রুষ্ট হতে পারেন কুলদেবতা! অতএব রোগী মরুক কি বাঁচুক, মহিলা ডাক্তার ঋতুমতী অবস্থায় চিকিৎসা করাতে এসেছেন কি না, তার প্রমাণ আগে দিতে হবে। তারপর রোগীর চিকিৎসা হবে। তৎকালীন সমাজে ঋতুমতীদের নিয়ে সেই গোঁড়ামি মনস্কতারই এক চিত্র ফুটে উঠল ‘প্রথমা কাদম্বিনী’র দ্বিতীয় প্রোমোতে।
১৮৮৩ সাল, যখন মেয়েদের পড়াশোনা করার অধিকার ছিল চাঁদে হাত বাড়ানোর মতো বিষয়, তখন কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় ও চন্দ্রমুখী বসু গ্র্যাজুয়েট হন। তাঁরাই ছিলেন ভারতের প্রথম দুই মহিলা গ্র্যাজুয়েট। এর দু’বছর পর চিকিৎসাশাস্ত্রে স্নাতক হন কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়। বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ থেকে ডিগ্রি নিয়ে তারপর বিদেশে পাড়ি দেন তিনি। ১৮৯২ সালে দেশে ফিরে ডাক্তার হিসেবে প্র্যাকটিস শুরু করেন তিনি। তৎকালীন প্রেক্ষাপটেই সমাজে নারীদের অবস্থান উঠে আসবে ‘প্রথমা কাদম্বিনী’ ধারাবাহিকের হাত ধরে।
তৎকালীন সমাজ আধুনিক মনস্কা মেয়েদের অগ্রগামীর ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। নারী মানেই পর্দানসীন, সে ভাবনাই প্রচলিত ছিল। আর সেখানেই দাঁড়িয়ে কি না মহিলা ডাক্তার? প্রশ্নের মুখে তো পড়তেই হত! অতঃপর কাদম্বিনী দেবীর ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। নানান প্রশ্ন এবং সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু ‘একজন ডাক্তারের কাছে তো তাঁর রোগিই প্রথম’ ছোটবেলায় বাবার সেই একটা উপদেশকেই কাদম্বিনী পাথেয় করে নিয়েছিল তাঁর পথচলার জন্য। সমাজে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হলেও দুর্বার গতিতে সেসব উতরে গিয়েছেন।
দেখুন প্রোমো
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.