সুমন করাতি, হুগলি: বাবার থেকে অভিনয়ে হাতেখড়ি, তারপর স্টেজ-থিয়েটার পেরিয়ে কোন্নগরের কঙ্কনা হালদার এখন টেলিপর্দার অভিনেত্রী। মফঃস্বলের সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে কঙ্কনা হালদার। সেখান থেকে বর্তমানে রুপোলি জগতের তারকা। জনপ্রিয় চ্যানেলের ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রে হুগলির মেয়ে কঙ্কনা হালদার (Konkona Halder)।
কোন্নগর নয়াপাড়ার বাসিন্দা কঙ্কনার মা-দাদাকে নিয়ে ছোট্ট পরিবার। বাবা মারা গেছেন অনেক ছোট বয়সেই। কানাইপুরের কন্যা বিদ্যাপীঠ স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে রবীন্দ্রভারতী থেকে ড্রামাতে অনার্স। সেখান থেকে ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা শেষ করে বর্তমানে তিনি ‘আদালত ও একটি মেয়ে’ সিরিয়ালের মুখ্য চরিত্রের অভিনেত্রী কঙ্কনা। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। সে স্বপ্নের বুনিয়াদ তৈরি হয়েছিল বাবা কাঞ্চন হালদারের থেকে। বাবা ছিলেন নাট্যজগতের কর্মী, তবে বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে অভিনেত্রী হওয়ার চ্যালেঞ্জটা আরো প্রকট হয়ে ওঠে কঙ্কনা হালদারের কাছে।
শুধুমাত্র যে ধারাবাহিকেই অভিনয় করছেন, এমনটা নয়। এর আগে একাধিক সিনেমা এবং ওটিটিতেও অভিনয় করেছেন কঙ্কনা। দেবের সঙ্গে অভিনয় করেছেন ‘বাঘাযতীন’ সিনেমায়। সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বনবিবি’তেও দেখা গিয়েছে অভিনেত্রীকে। রয়েছে নতুন সিনেমা ‘হাতেখড়ি’।
কীভাবে রুপোলি পর্দার সঙ্গে তাঁর পরিচয়? সেকথা বলতে গিয়ে কঙ্কনা জানালেন, তাঁর জীবনের স্ট্রাগল পিরিয়ড এখনও শেষ হয়নি। এখনো চলছে। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত কলকাতাতেও থিয়েটার নাটক ও সিনেমার ছোট অভিনয় করার পরও যখন সেভাবে কাজ হচ্ছিল না সেই সময় তিনি তাঁর লক্ষ্য পূরণের জন্য পাড়ি দেন মুম্বইতে। সেখানে কাজ করার সময় কঙ্কনার কাছে ফোন আসে ধারাবাহিক ‘আদালত ও একটি মেয়ে’র মুখ্য চরিত্র দুর্গা সোরেনের ভূমিকা অভিনয় করার জন্য। দুর্গা সোরেন এমন এক চরিত্র যে পেশায় উকিল এবং ন্যায় বিচারের জন্য লড়াই করে। এমন এক চরিত্রে অভিনয় করার লোভ সামলাতে না পেরে মুম্বই থেকে কলকাতায় ফিরে ফের কাজ শুরু করেন কঙ্কনা।
মেয়ের এই কীর্তিতে কঙ্কনার মা অপর্ণা হালদার বলেন, “আমার স্বামীর খুব ইচ্ছা ছিল মেয়েকে অভিনেত্রী বানাবেন। কিন্তু মেয়ের সাফল্য বা মেয়ের প্রচেষ্টা কোনটাই দেখে যেতে পারেননি তিনি। গ্রাম পেরিয়ে শহরে গিয়ে কাজ করাটা খুবই কষ্ট সাধ্য ছিল। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে যায়। পাড়া-প্রতিবেশী থেকে আত্মীয়-স্বজন অনেকের থেকেই কটু কথা শুনতে হয়েছিল। তবে অগাধ বিশ্বাস ছিল নিজের মেয়ের ওপর। এবং সেই বিশ্বাস ও ভরসা মেয়ে রেখেছে। এখন যখন কঙ্কণাকে টিভির পর্দায় দেখা যায়, তখন সবাই যাঁরা একসময়ে কটু কথা বলতেন, তাঁরাও প্রশংসায় পঞ্চমুখ।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.