সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেঝেতে পাট পাট করে রাখা লাল বেনারসি শাড়ি। থরে থরে সাজানো গয়নাগাঁটি। আর তার মাঝেই রাখা মাস্ক। নবনীতা দাস আসলে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শুটিংয়ে যাওয়ার জন্য। দীর্ঘ আড়াই মাস পর বৃহস্পতিবার থেকে টলিপাড়ায় শুরু হয়েছে শুটিং। গতকালই প্রায় ২৫টি ধারাবাহিকের শুটিং শুরু হয়েছে ছোট ছোট ইউনিট নিয়ে। সেই সুবাদে শুরু হচ্ছে ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’-এরও শুটিং। যেখানে মা তারার ভূমিকায় অভিনয় করছেন নবনীতা। মাস দুয়েক বাদে সেটে ফেরা স্বস্তির খবর হলেও স্ত্রী নবনীতার জন্য কিন্তু বেশ চিন্তায় অভিনেতা জিতু কামাল।
গতবছর মে মাসেই সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন জিতু কামাল আর নবনীতা দাস। বিয়ের খবর ঘোষণা করার সময়েই জিতু বলেছিলেন যে নবনীতার সারল্যতা আর একজন খুব ভাল মনের মানুষ হওয়ায় প্রেমে পড়েছেন তিনি। আর সেই সারল্যতা, ছেলেমানুষির জন্যই নবনীতা কিন্তু বেশ আদুরে স্বামীর কাছে। কাজের ফাঁকে সবসময়েই চোখে চোখে রাখেন স্ত্রী নবনীতাকে। অতঃপর এই অতিমারী পরিস্থিতিতে স্ত্রীর শুটিংয়ে ফেরা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন জিতু।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক আবেগঘন পোস্ট করেছেন অভিনেতা। “জানি কথাগুলো অবাস্তব, অনেকের কাছে নেকাপনা শোনাবে, তবুও! সবাই প্রায় কাজে যোগ দিচ্ছে। আমিও দেব। ২৫ লক্ষ টাকা পেতে কেউই চাইবে না! কারণ তার বিনিময়ে যা দিতে হবে তা মোটেই ফেরত যোগ্য নয় কোনও পরিবারের কাছে। উপরন্তু রয়েছে পেটের দায়। সবটা মিলেমিশে আজ আমাদের প্রায় নাজেহাল অবস্থা”, মন্তব্য অভিনেতার।
এরপরই স্ত্রী নবনীতার উদ্দেশে লিখেছেন, “বিয়ের সবে মাত্র ১ বছর পার করেছি। না পালন করতে পেরেছি বিবাহবার্ষিকী, না জামাইষষ্ঠী! বিগত ৮৫দিন তোমাকে কী করে রেখেছি তা আমিই জানি। না পাশে পেয়েছি নিজের বাবা-মাকে, না শ্বশুর-শাশুড়িকে। আর ইন্ডাস্ট্রির কথা না হয় না-ই বা বললাম! আমফানের দিন তোমার ভয় দেখে আমারও খানিকটা ভয় লেগেছিল। কিন্তু এখন তো শুটিং শুরু হবে।”
“তোমাকে একা ছাড়তে হবে। কে দেখবে আজ থেকে তোমায়? তুমি নিজের অজান্তেই মুখে হাত দিয়ে ফেলো। হাত ধুতে গিয়ে ভাল করে দু’হাত ধোও না। মুখের মাস্কটা বারবার পরে যায় নাক থেকে। অন্য কেউ মাস্ক ছাড়া কাছে এগিয়ে এলে একটু চড়া সুরে না বলতে পারো না। আরও না জানি কত কি! সবটাই আমি লক্ষ্য করতাম। খুব বকাও দিতাম। কিন্তু আজ থেকে মাস্কটাই তো থাকবে না। উলটে লাল রঙের ঝলকানি থাকবে মুখ জুড়ে। জানি অর্থের দরকার আছে সংসার চালাতে। কিন্তু আজ তোমায় অর্থের দরকারের থেকেও অন্যদের কথা ভেবে যেতে হচ্ছে বাড়ির বাইরে। আমরা ঠিক চালিয়ে নিতামই। কিন্তু তুমি আজ ফ্লোরে না গেলে ৩৫টা পরিবারের নূন্যতম ৪জন করে হলেও ১৪০জন অভুক্ত থাকবে। তাই তোমার এই ত্যাগ আর আমার চুপ থাকাটার মূল্য ২৫ লক্ষ টাকা হতে পারে না কিছুতেই, অন্তত আমাদের কাছে”, ইন্ডাস্ট্রির মানুষগুলোর দুর্দশার কথাও ভেবেও উদ্বিগ্ন অভিনেতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.