বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: মরণোত্তর দেহ দান করা থাকলেও তা হয়নি। বাধা করোনা (Coronavirus)। কোভিড বিধি মেনে দাহ করা হয়েছে সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর দেহ। কিন্তু দেহদানের আক্ষেপ মিটছে না প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রীর একমাত্র মেয়ের। তাঁর শেষ ইচ্ছাপূরণ হল না। তাই বেশ কিছু প্রশ্ন তুললেন প্রয়াত সিপিএম নেতার মেয়ে অভিনেত্রী উষসী চক্রবর্তী (Ushasie Chakraborty)। পার্টির নেতাদের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তাঁর আক্ষেপের কথা জানিয়েছেন তিনি।
২৯ জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হন শ্যামল চক্রবর্তী (Shyamal Chakraborty)। ৬ তারিখ প্রয়াত হন। রাতে হাসপাতালের সামনে তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানান পার্টির রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র-সহ নেতৃত্ব। পার্টির পতাকা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয় দেহ। ছিলেন প্রয়াত নেতার মেয়েও। জ্যোতি বসু, অনিল বিশ্বাস, নিরুপম সেন বা বিনয় কোঙারদের দেহ হাসপাতালে দান করা হয়। মেডিক্যাল কলেজে দান করা হয় প্রাক্তন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের দেহ। সহকর্মীর মতো তিনিও দেহদান করেছিলেন। মেডিক্যাল কলেজে দান করার ইচ্ছাপ্রকাশ করে যান। কোনওভাবে যাতে অন্যথা না হয় দুই যুবনেতাকে সেই দায়িত্বও দিয়ে যান শ্যামলবাবু। মেয়ে অন্যকিছু চাইলেও যাতে শোনা না হয়। সোজা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন শতরুপ ঘোষদের মতো দুই যুব নেতাকে।
উষসী জানান, “বাবার শেষ ইচ্ছে ছিল একটাই। তাঁর দেহ যাতে দাহ করা না হয়। মিছিল করে যেন নিয়ে যাওয়া হাসপাতাল। প্রিয় কমরেড অনিল বিশ্বাসের মতো যেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্বার্থে দান করা হয় মরদেহ। আমার ‘অন্য কিছু’ বলার প্রশ্ন ছিল না। আমি জানতাম গোটা কলকাতায় মিছিল করে, ইন্টারন্যাশনাল গাইতে গাইতে কোনও একদিন আমরা বাবাকে মহা সমারোহে মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে যাব অন্তিম যাত্রায়। কিন্তু কোভিড তা হতে দিল না।”
এরপরেই বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তুলেছেন উষসী। তিনি লেখেন, মৃতদেহে একটি ভাইরাস সত্যিই কতক্ষণ বাঁচতে পারে এই নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য কি আছে? চিকিৎসা বিজ্ঞানে কি এই নিয়ে কোনও গবেষণা হয়েছে? তাঁর দাবি, যদি না হয়ে থাকে করা হোক। এমন যদি প্রমাণ হয়, মৃতদেহে কয়েক ঘন্টা বা কয়েক মুহূর্তের পরে ভাইরাস আর বেঁচে থাকতে পারে না। তাহলে সেই সময়টুকু মৃতদেহ সংরক্ষিত রাখা হোক। সময় পেরলে দরকার হয় প্যাকিং করেই তা পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.