সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন দুয়েক আগেই যাবতীয় রাজনৈতিক জল্পনা-কল্পনা ধূলিসাৎ করে শত্রুঘ্ন সিনহা জানিয়েছেন যে তিনি কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। নবরাত্রির দিন আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি শুরু করবেন তাঁর নতুন যাত্রা। গত বৃহস্পতিবারই দিল্লিতে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে একথা জানিয়েছেন সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা। সেই সঙ্গে পাটনা সাহিব থেকেই ভোটে লড়ার ইচ্ছাও গোপন করেননি বিহারীবাবু। একদিকে এই বিজেপি সাংসদের কংগ্রেসে যোগ দেওয়া নিয়ে দলের অন্দরে যখন সমালোচনা তুঙ্গে, মেয়ে সোনাক্ষী সিনহা সেসব নিন্দুকদের দিকে ছুঁড়ে দিলেন কড়া জবাব। অভিনেত্রীর বক্তব্য, তাঁর বাবার নাকি এটা অনেক আগেই করা উচিত ছিল।
[আরও পড়ুন: রাজনৈতিক ফায়দা লুটতেই ‘হিন্দু সন্ত্রাস’ তত্ত্ব গড়ে কংগ্রেস, তোপ জেটলির ]
সম্প্রতি বলিউডের এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছলেন সোনাক্ষী। সেখানেই তিনি এই মন্তব্য করেন। ওই অনুষ্ঠানে কংগ্রেসে বাবা শত্রুঘ্ন সিনহার যোগ দেওয়া নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি সাফ জানান- এটা তাঁর বাবার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, “জেপি নারায়নজি, অটলজি, আডবানীজির সময় থেকেই আমার বাবা বিজেপি দলের সঙ্গে যুক্ত। একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে দলের অন্যান্য ব্যক্তিরা তাঁদের ভীষণ শ্রদ্ধা করতেন। তবে, দলের বর্ষীয়ান নেতা হিসেবে তাঁদের যতটা শ্রদ্ধা প্রাপ্য তাঁরা বর্তমানে মোটেই তা পান না। তাই আমার মনে হয় বাবা হয়তো এই সিদ্ধান্তটা নিতে একটু দেরি-ই করে ফেলেছেন। যা করেছেন তা আরও অনেক আগেই তাঁর করা উচিত ছিল।” সোনাক্ষী আরও জানান, আপনার চারপাশে যা চলছে যদি তাতে যদি আপনি খুশি না থাকেন, তাহলে সেই জায়গা থেকে সরে দাঁড়ানোটা মোটেই লজ্জার নয়। আর বাবাও তাই করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে ব্রিগেডের সভায় এসে নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি আক্রমণ করেন শত্রুঘ্ন। বলেন, “আমি যদিও বিজেপির সঙ্গে আছি তবুও প্রথমে মানুষ ও দেশের হয়েই কথা বলব। অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময় লোকশাহী বা গণতন্ত্রের প্রতি নজর দেওয়া হলেও প্রধানমন্ত্রী মোদির শাসনকালে তানাশাহী বা একনায়কতন্ত্র চলছে।” প্রায় তিন দশক ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত তিনি। একাধিকবার সাংসদও হয়েছেন। ২০১৪ সালে পাটনা সাহিব থেকে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না ‘বিহারীবাবু’র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সমালোচনা করে মাঝেমধ্যেই মুখ খুলেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ইউপিএ জমানায় ১১ বার সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল, দাবি কেসিআরের]
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে ব্রিগেডের সভায় যখন মোদি-অমিত শাহকে কটাক্ষ করে শত্রুঘ্ন সিনহা মন্তব্য করেন, তখনই মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে এবার বোধহয় বিজেপিতে তাঁর দিন ঘনিয়ে এসেছে। কিংবা শত্রুঘ্নকে ছেঁটে ফেলতে চলছে বিজেপি। শেষ পর্যন্ত গেরুয়া শিবির তাঁকে বরখাস্ত করেনি। বরং, কৌশলে তাঁকে লোকসভার টিকিট না দিয়ে, তাঁর কেন্দ্র থেকে রবিশংকর প্রসাদকে প্রার্থী করে গেরুয়া শিবির। তারপর থেকেই শত্রুঘ্নর কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে জল্পনা চলছিল ঘনিষ্ঠ মহলে। বৃহস্পতিবার রাহুলের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি জানান, শীঘ্রই কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন তিনি। নবরাত্রির মধ্যেই সুখবর পাবেন সমর্থকরা। বিহার কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক শক্তি সিং গোহিল জানিয়েছেন, বিহারীবাবুকে গোটা দেশে কাজে লাগাতে চায় দল। তাঁকে স্টার প্রচারক হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.