Advertisement
Advertisement

দর্শক টানতে নাটুকে মশলায় পরিপূর্ণ শিবপ্রসাদ-নন্দিতার ‘হামি’

হলে যাওয়ার আগে জেনে নিন কেমন হল এ ছবি?

Review of Shiboprosad-Nandita’s new movie Haami
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 11, 2018 7:37 pm
  • Updated:July 11, 2018 2:24 pm  

নির্মল ধর: যেমনটি ভাবা গিয়েছিল, ঠিক তেমনটিই হয়েছে। একচুলও এদিক-ওদিক হয়নি। এই যে গতবছর দু-তিনটি স্কুলে ছোট্ট ছাত্রীর ‘নির্যাতন’ নিয়ে যে কলরব উঠেছিল, সেটাকেই রসদ করে বেশ নাটুকে ও পাবলিক খাওয়ার মতো মশলায় পরিপূর্ণভাবে ‘হামি’ সাজিয়ে তুলেছেন এখনকার সফল পরিচালক জুটি শিবপ্রসাদ-নন্দিতা। যদিও ছবি মুক্তির প্রাকপর্বে তাঁরা বলেছিলেন, ‘দর্শক কী নেবে না নেবে সেই ফর্মুলায় ছবি বানান না’। কিন্তু কার্যত তাই কি হল? নন্দিতা রায়ের চিত্রনাট্যের পরতে পরতে বাণিজ্যের ছোঁয়া, শিবপ্রসাদের সংলাপে নাটক ও ব্যঙ্গ মেশানো। বাণিজ্যের ছোঁয়াতে আপত্তি নেই, আপত্তি স্থূল এগজিকিউশন ও ভাবনায়। দুই শিশুর (ভুটু আর চিনি) অমলিন বন্ধুত্ব-মেলামেশা নিয়ে তাঁদের বাবা-মায়েদের কাণ্ডকারাখানা তো মাঝে মাঝে আশির দশকের অঞ্জন চৌধুরির ছবির কথা মনে করাচ্ছিল। বিশেষ করে প্রিন্সিপালের ঘরে শিবপ্রসাদ-গার্গী এবং সুজন-চূর্ণীর কথা কাটাকাটির ব্যাপারটা। কিংবা গার্গী আর কনীনিকার চুলোচুলির ঘটনা, এত অশালীন নাটুকে হওয়া কি জরুরি ছিল?

আসলে শিবু-নন্দিতা শুরু থেকেই ‘হামি’র সুর বেঁধেছেন কমেডি ঘরানায়। দিল্লি থেকে কলকাতায় বদলি হয়ে সুজন-চূর্ণী নিজেদের মেয়ে চিনিকে ভরতি করেন নতুন স্কুলে। সেখানেই শিবু-গার্গীর ছেলে ভুটু তাঁর সহপাঠী। যা হয় আর কী! স্কুলের অমলিন পরিবেশে শিশুর দল মনের আনন্দে খেলাধুলো করে। ফ্রেন্ডশিপ ডে-তে হাগ করে, হামি খায়। কিন্তু বড়দের মন যে কলুষিত, তাদের দেখার চোখ অন্য মানে খোঁজে। এরই সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে এক প্রবীণ বাস চালকের বিরুদ্ধে ওঠা শিশু নির্যাতনের মিথ্যে অভিযোগ। ব্যস! নাটক জমে ক্ষীর! সেই ক্ষীর থেকে ব্যবসার ঘি এবার তুলবেনই ছবির প্রযোজকরা।

Advertisement

[গুপ্তচর হয়ে বাজিমাত আলিয়ার, কেমন হল মেঘনা গুলজারের ‘রাজি’?]

তবে এরই মাঝে গুড টাচ, ব্যাড টাচ, হাগিং, কিসিং, হামি নিয়ে দীর্ঘ লেকচারও রয়েছে। স্কুলের দিদিমণির মুখে বসানো সে ব্যাখ্যাও বেশ হাস্যকর। এখানেও ক্ষান্ত হননি পরিচালকরা। ভুটু-চিনির বন্ধুত্বকে সিঁদুর খেলা পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছেন। শিশুমনের হদিশ পেতে এমন নাটুকে অবাস্তব ভাবনা সত্যিই বড় চমক। তবে ‘হামি’র সেঞ্চুরি দিয়েই ছবি শেষ।

তবুও শিবু-নন্দিতার কাজের কিঞ্চিত প্রশংসা একটাই কারণে, স্কুলের নানা ঘটনার মধ্যেও তাঁরা আজকের রাজনৈতিক নেতা ও পারিবারিক পরিবেশগুলোকে হাস্যরসের মধ্য দিয়েই তুলে এনেছেন। ছবির মেরুদণ্ড যখন কমেডি ঘরানার, তখন শিল্পীদের অভিনয়েও সেই ধারা অনুসৃত। শিবপ্রসাদ-গার্গী হয়তো একটু বেশিই করে ফেলেছেন দর্শকের কথা ভেবে। খরাজ-কনীনিকা অবশ্য অনেকটাই স্বাভাবিক। স্টেটাস সচেতন সুজন-চূর্ণী উচ্চকিত অভিনয় কখনওই করেননি। তিন দিদিমণির চরিত্রে অপরাজিতা আঢ্য, তনুশ্রী শংকর ও দেবলীনা কুমার তাঁদের চরিত্র অনুযায়ী স্বাভাবিক, কমেডির ছোঁয়া তেমন নেই। ছবির দুই খুদে শিল্পী ব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ও তিয়াশা পাল বেশ ভাল। বিশেষ করে তিয়াশা। ব্রতকে আরও একটু সাবলীল করে তোলা উচিত ছিল পরিচালকদের। ‘হামি’ মুক্তির আগেই প্রচারের কাঠির কারসাজিতে ছবি সুপারহিট, এমন একটি পরিমণ্ডল তৈরি হয়ে আছে টালিগঞ্জে। কিন্তু সত্যিই সেটা হবে কি? শিবু-নন্দিতার অতীত সাফল্যের ট্র্যাক রেকর্ড এ ছবিতেও অক্ষুণ্ণ থাকবে? সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

[শ্রীদেবীর মৃত্যুতে নয়া তদন্তের মামলা খারিজ সুপ্রিম কোর্টে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement