আকাশ মিশ্র: প্রেম আরও প্রেম, তারপর বিয়ে ঠিক, দুম করে ব্রেকআপ! কিন্তু একজন ব্রেকআপ চাইলেই কি হল? আরেক জন! সে তো কেঁদে কেটে একসার। তবে ব্রেকআপ যদি হয় হাসি হাসি মুখে! তাহলে কেমন হয়? পরিচালক লাভ রঞ্জন এবার এমনই এক গল্প ফাঁদলেন ‘তু ঝুটি ম্যায় মক্কার’ ছবিতে। যেখানে রণবীর লোকের ব্রেকআপ করাতে আঁটেন নানা ফন্দি। হাসি খুশি ব্রেকআপও হয়ে যায়। কিন্তু ওই যে বলিউডের পুরনো সূত্র। প্রেমে পড়বে না, পড়বে না করে, নায়ক শেষমেশ প্রেমে তো পড়লই। তাও একেবারে সিরিয়াস প্রেম। রণবীরের সঙ্গে এমনটিই ঘটল। তবে এখানে শ্রদ্ধা বরং নো প্রেম, শুধুই গেম।
‘তু ঝুটি ম্যায় মক্কার’ ছবির চিত্রনাট্য মোটামুটি এমনই। কিন্তু পরিচালক লাভ রঞ্জন কি আর সহজ গল্প বলবেন? একেবারেই নয়। তাই তো এই গল্পের সঙ্গে ঢুকিয়ে ফেললেন গ্যাসলাইটিং! মনস্তত্ত্বে গ্যাসলাইটিং ব্যাপারটা বেশ পরিচিত। এর অর্থ হল অন্য কোনও মানুষের সঙ্গে একেবারে ব্রেনগেম। সহজ ভাবে বলতে এক ব্যক্তি বার বার একই কথা বলে (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নেগেটিভ) তাঁকে বিশ্বাস করিয়ে দেওয়া, সব ভুল তাঁর। নিজের গায়ে কাঁদা না মাখিয়ে, গোটা নোংরা ছুঁড়ে দেওয়া অন্যের দিক। মনোবিদরা বলে থাকেন, এই গ্যাসলাইটিং ব্যাপারটা মারাত্মক ক্ষতিকর। মানুষকে মারাত্মক ডিপ্রেশনে নিয়ে যেতে পারে। লাভ রঞ্জন মনের দুনিয়ার এই কঠিন বিষয়কেই সহজভাবে, কমেডির আকারে দেখিয়ে দিলেন।
এবার আসা যাক, কেমন হল ‘তু ঝুটি ম্যায় মক্কার’।
সম্পর্কের গল্প হিসেবে এই ছবি একেবারেই নতুন ধারার তা নিসন্দেহে বলা যায়। ছবিটি আগাগোড়া ঝকঝকে হওয়ায় দেখতেও ভাল লাগে। কিন্তু গোল বাঁধে অন্য জায়গায়। লাভ রঞ্জন এই ছবিতে বেশ কিছু দৃশ্য ধার করেছেন তাঁর আগের বেশ কয়েকটি ছবি থেকে। অনেক দৃশ্য়ই ‘প্য়ার কা পঞ্চনামা’, ‘সোনুকে টিট্টু কি সুইটি’ ছবি থেকে যেন কপি পেস্ট। ছবিটির দৈর্ঘ্য হেসেখেলে আরও কমতে পারত। কারণ, ছবির প্রথমভাগ জমজমাট হলেও, দ্বিতীয়ভাগ বেশ শ্লথ।
এই ছবির প্রাণভোমরাই হল রণবীর কাপুর। বহুদিন বাদে সেই ‘ওয়েক আপ সিড’ বা ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’র চকোলেট বয় রণবীরকে পাওয়া গেল। যা কিনা দেখতে মন্দ লাগে না। খোশমেজাজ প্রেমিক থেকে পরে সিরিয়াস প্রেমিকে রূপান্তর। রণবীর এরকম হালকাফুলকা ছবিতেও নিজের জাত চিনিয়েছেন।
রণবীরের পাশে শ্রদ্ধাকে ভালই মানিয়েছে। তাঁদের রসায়নও ভাল লাগবে। তবে আলাদা করে শ্রদ্ধার অভিনয়ে জোর ছিল না। ‘তু ঝুটি ম্যায় মক্কার’ ছবিতে আরও যিনি নজর কেড়েছেন, তিনি হলেন ডিম্পল কাপাডিয়া। তাঁর কমিক টাইমিং দুর্দান্ত।
সব মিলিয়ে এই ছবি একেবারেই টাইমপাশ। হল থেকে বেরিয়ে হ্যাপি হ্যাপি ফিল করতে দেখতেই পারেন। মন্দ লাগবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.