শম্পালী মৌলিক: পার্নো মিত্র গত সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন, ‘অ্যামেজড টু সি দ্য কমেণ্টস অন মাই লাস্ট পিকচার৷ ডাজ সোশ্যাল মিডিয়া গিভ রাইট টু আ ম্যান/উওম্যান টু ব্লার্ট এনিথিং দে ফিল লাইক? হেল ইয়া আই অ্যাম আ উওম্যান অ্যান্ড আই হ্যাভ বুবস অ্যান্ড আই হ্যাভ অ্যান অ্যাস৷ ইফ ইউ হ্যাভ অ্যান ইস্যু দেন ডু নট লুক আ্যাট মাই পিকচার্স৷ ইউ হ্যাভ দ্য অপশন টু আনফলো৷ ইটস নাইস টু সি হাউ সেক্সুয়ালি রিগ্রেসিভ আওয়ার সোসাইটি স্টিল রিমেইনস৷ মে বি ইব়্যাডিকেশন ইজ দ্য আনসার টু দিস ল্যাক অফ এডুকেশন৷’
এর ঠিক আগের দিন অর্থাৎ রবিবার পার্নো তাঁর এক বন্ধুর জন্মদিনে যাওয়ার জন্য সেজেগুজে তৈরি হচ্ছিলেন৷ তাঁর বোন হঠাৎ করে বলেন, ‘চল একটা ছবি তুলে দিই৷ সুন্দর দেখাচ্ছে’৷ পার্নো এতে আপত্তির কিছুই দ্যাখেননি এবং ছবিটা-ড্রেসটা ভাল লাগাতে ইনস্টাগ্রামে আপলোড করেন৷ হাফবাস্ট সাধারণ একটি ছবি৷ পার্টিতে যাওয়ার আগে মানুষ খেয়াল হলে যেমন পোস্ট করে, এও তেমন৷ সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু লাইক পড়ে৷ মন্তব্যও আসে৷ প্রতিদিনকার মতো তিনি অত খুঁটিয়ে দ্যাখেননি৷ সাধারণত নেগেটিভ কমেণ্ট লেখা হলেও ইগনোর করেন৷ এবারে আর পারেননি৷ যার ফলে পার্নোর ওই লেখা৷ কিছু অসুস্থ পার্ভার্টদের কমেণ্টের পর পার্নোর এমন প্রতিক্রিয়া৷
পার্নো বলছিলেন, ‘‘সেক্সি বলাটা খারাপ কিছু নয়৷ কিন্তু ‘ইউ হ্যাভ বিগ ব্রেস্টস’ বা ‘আই ওয়াণ্ট ইওর ব্রেস্টস’–এ কোন ধরনের মানসিকতা? আমি আর থাকতে না পেরে আরেকটা ছবি পোস্ট করে ওই লেখাটা লিখেছি৷ মেয়েদের কিছু তো সম্মান করতে শেখো, নয়তো নারীশক্তি, নারীস্বাধীনতা নিয়ে কথা বলার দরকার নেই৷ একটা সাধারণ ছবি নিয়ে এত কুরুচিকর মন্তব্য আমি ভাবতে পারিনি! যদি অন্তর্বাস পরা ছবি দিতাম বা কিম কার্দানেশিয়ানের মতো, তা হলেও একটা কথা ছিল৷ মানুষের মাথায় এত নোংরা কমেণ্টস আসে কোত্থেকে? ঠিক সেই কারণেই আমি দ্বিতীয় ছবিটা হাফবাস্ট ক্লোজআপ দিয়েছি৷ যে স্তন নিয়ে এত কথা, সেটা নারী শরীরের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ৷ মাসল আর মাংসপিণ্ড মাত্র৷ সৃষ্টিকর্তার দেওয়া এই শরীর, সেটা নিয়ে মেয়েদের এত সমস্যায় পড়তে হবে কেন? এত অপমানিত হতে হবে কেন?’’
ইণ্টারনেট এসে কি তা হলে আরও ক্ষতি করল? ‘তা বলব না৷ একই জিনিস তো বাসে, মেট্রোয়, পথচলতি রাস্তায় মেয়েদের সহ্য করতে হচ্ছে রোজ৷ মানুষের হতাশা এখন সোশ্যাল মিডিয়াতেও ফুটে উঠছে৷ সেক্সুয়ালি স্টার্ভড লোকজন৷ আজ শুধু আমি ফিল্মের লোক বলে নয়, যে কোনও মেয়েকেই বছরের পর বছর এটা সহ্য করতে হয়৷ অথচ আমাদের তো কামসূত্রের দেশ, বাৎসায়নের দেশ ভারত, সেখানে এত রিপ্রেশন কেন? তবে বলতেই হবে এসবের মাঝেও অনেক সাপোর্ট পেয়েছি৷ নারী-পুরুষ মিলিয়ে৷ আবার কেউ লিখেছে পাবলিসিটি চাই বলে এসব করছি৷ কেউ লিখেছে কাজ নেই তাই এসব করে৷ কিছু অজ্ঞ-অশিক্ষিত মানুষ চিরকাল যেমন করে এসেছে৷ আজকের ‘ইণ্টারনেট ট্রোলিং’ তো হালের আমদানি করা শব্দ৷ এই হেনস্তা তো চলছেই যুগ যুগ ধরে৷ কেউ লিখেছে, তুমি পাউট করে ছবি দিলে, ব্যাকলেস ছবি দিলে ভাল বললে অসুবিধা নেই অন্য বডি পার্টকে ভাল বললে খারাপ? আমার প্রশ্ন, তোমার মাকে কি বলবে এটা? কেন মেয়েদের ভয় পেতে হবে? কেন আমার বোন শর্টস পরে রাস্তায় বেরলে আমার সারাক্ষণ দুশ্চিন্তা হবে? আসলে আমাদের ছোট থেকে শেখানো হয়, সেক্স মানে ছি, ছি! এই ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে৷ আমার কথা হচ্ছে, আমি কী করব বা করব না, তুমি আমাকে জাজ করার কেউ না৷ নিজের বাড়িতে গিয়ে ওটা করো৷ মরাল পুলিসিং আমাকে করতে এসো না৷ কত ফেক অ্যাকাউণ্ট এসব করে চলেছে! ফাইন করা বা জেলে পাঠানো উচিত এদের৷ সবাই এক হলে পিটিশন দেওয়া যায় এইসব পার্ভার্টদের বিরুদ্ধে৷ চুপ করে না থেকে ফাইট ব্যাক করা উচিত আমাদের৷’ বললেন পার্নো৷
আমরা পারব তো পার্নোর মতো ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস দেখাতে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.