হাসিখুশি, প্রাণখোলা৷ কিন্তু আচমকা মেজাজ হারালেন পরিণীতি চোপড়া৷ অবাক অহনা ভট্টাচার্য৷
ঘরে ঢুকেই টেবিলের ওপর রাখা শিঙাড়ার প্লেট দেখে পরিনীতি বলে উঠলেন, “শিঙাড়া! এটা একদম খাওয়া উচিত না। এটা ডিপ ফ্রায়েড। এতে স্বাস্থ্যকর কিছু নেই, শুধু খেতে ভাল।”
ভাজাভুজি খাওয়ার ইচ্ছে হলে কি এ সব ভেবেই নিজেকে সান্ত্বনা দেন?
-সান্ত্বনা দেওয়ার দরকার হয় না। আমার আর এ সব খেতে ইচ্ছে করে না। যে কোনও পছন্দের খাবার যেটা খাওয়া বারণ, সেটা ঘ্রাণে অর্ধভোজন করে নিই। আমি আর আলিয়া এটা টাইগার শ্রফের থেকে শিখেছি। রেস্তোরাঁর ওয়েটাররা আমাকে পাগল ভাবে। (হাসি)
শেষ ছবি ‘গোলমাল’-এ ভূত ছিলেন। আগামী ছবি ‘কেসরী’-তেও আপনি মৃত। সব ছবিতেই আপনি পাস্ট টেন্স কেন?
-এম্মা তাই তো! সত্যি তো, এরা আমাকে মেরে ফেলে কেন? (হাসি) এটা নিয়ে ভাবতে হবে বাড়ি গিয়ে।
আজ পর্যন্ত যত কাজ করেছেন, তাতে কোনও ছবির নির্বাচনে ভুল করেছেন বলে মনে হয়েছে?
-কোনও কোনও ছবি ভুল বেছেছি। কিন্তু এমন কোনও ছবি নেই যেটায় কাজ করার আগে মনে হয়েছে যে, এটা চলবে না। প্রতিটা ছবি নিয়ে আমি পজিটিভ থাকি। কোনওটা চলে, কোনওটা চলে না। প্রথম তিন বছর আমার প্রত্যেকটা ছবি হিট হয়েছিল। আমি কিন্তু তখন যে ভাবে ছবি বাছতাম, আজও সে ভাবেই করি। কখনও কখনও ভাগ্য সহায় হয় না। যে কোনও সৃজনশীল কাজেই সাফল্য—ব্যর্থতা থাকে, তা বলে আমি কী পেলাম আর কী পেলাম না ভেবে সময় নষ্ট করে লাভ নেই। আমার কেরিয়ার গ্রাফটা প্রথমে উঁচুতে ছিল, তার পর নেমে গেল, এখন আবার ধীরে ধীরে উঠছে।
ছবি পরপর ফ্লপ হলে চাপ অনুভব করেন না?
-চাপ তো আপনারাই তৈরি করেন! সব কিছু নিয়ে সমানে প্রশ্ন করে যান। এটা স্বাস্থ্যকর না। এক সময় অক্ষয় কুমারের পরপর ছ’টা ছবি ফ্লপ হয়েছিল, আমার দিদি প্রিয়াঙ্কারও তাই। কারও কারও তো দশ—এগারোটা ছবি পরপর ফ্লপ করে। সেটা নিয়ে এত মাতামাতি করার তো কিছু হয়নি। আমি কোনও কিছু নিয়ে আফসোস করি না। আমার এত সময় নেই। হিটস অ্যান্ড ফ্লপস আর অল পার্ট অফ দ্য গেম। যখন ‘গোলমাল’ সই করেছিলাম, তখন আপনারা প্রশ্ন করেছিলেন মাল্টি স্টারার ছবিতে কেন কাজ করছি। অথচ আজকের তারিখে ওটাই আমার সবচেয়ে বড় হিট!
কোনও ছবি ফ্লপ হলে তার কারণ খোঁজার চেষ্টা করেন?
-অবশ্যই। কখনও প্রযোজকের সঙ্গে বা সহ অভিনেতার সঙ্গে বসে আলোচনা করি। কখনও একা বসে চিন্তা করি। ছবিটা কেন চলল না? কী কী ভুল করেছি? তবে প্রযোজকরা কিন্তু হিট বা ফ্লপের সংখ্যা দেখে অভিনেতা বাছেন না। দর্শক যাঁদের ভালবাসে, তাঁদেরই সুযোগ দেওয়া হয়।
আপনি মাঝখানে কাজ থেকে কিছু দিন ব্রেক নিলেন, ফিরে আসার পর আর সে ভাবে সাফল্যের মুখ দেখেননি। ব্রেক নেওয়া কি উচিত হয়নি?
-ব্রেক নেওয়ার সিদ্ধান্তটা একদম সঠিক ছিল। ন’মাসের ব্রেক নিয়েছিলাম। ওজন কমিয়ে আরও সুন্দর হয়ে ফিরে এলাম। ফিরে এসেই ‘মেরি প্যায়ারি বিন্দু’ আর ‘গোলমাল এগেন’ করলাম। ‘বিন্দু’ হয়তো বক্স অফিসে সে ভাবে সাফল্য পায়নি কিন্তু ওটা আমার সবচেয়ে বড় স্যাটেলাইট হিট।
কখনও আত্মবিশ্বাসের অভাব বোধ করেন?
-সেটা হলে তো আমার কেরিয়ার শেষ হয়ে যাবে। যে মুহূর্তে আমি নিজের ওপর বিশ্বাস হারাব, সে মুহূর্তে অজস্র দর্শক আমার ওপর বিশ্বাস হারাবেন। আসলে দর্শকরা আপনাদের মতো করে ভাবেন না। তাঁরা খুবই সিম্পল। এখনও আমাকে কেউ কেউ বলে যে সে ‘মেরি প্যায়ারি বিন্দু’ রোজ দেখে। সে এটা ভাবে না যে দু’বছর আগে আমার ছবি নির্বাচনে ভুল ছিল কি না বা এখন আমি কী কী ভুল করছি। এ ভাবে শুধু মিডিয়া চিন্তা করে, কারণ আপনারা ফিল্ম স্টারদের সঙ্গে দিনের অনেকটা সময় কাটান আর এটা আপনাদের কাজ।
সাইনা নেহওয়ালের বায়োপিক নিয়ে এ বছর আপনার মোট চারটে ছবি মুক্তি পাচ্ছে। কেমন লাগছে?
-যাক। এতক্ষণে একটা অন্য রকম প্রশ্ন করলেন। এতক্ষণ ধরে কি এটাই দেখছিলেন যে আমি সাক্ষাৎকার দেওয়ার যোগ্য কিনা? (হাসি)। যাকগে, আপনার প্রশ্নের উত্তরে বলি, আমার খুব ভাল লাগছে। আমি চাই ছবিগুলো সবাই দেখুক। আরও দুটো ছবির নাম শিগগির ঘোষণা করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.