Advertisement
Advertisement

Breaking News

যকের ধনের খোঁজে এবার সাগরদ্বীপে পাড়ি পরম-কোয়েলের

‘সাগরদ্বীপে যকের ধন’-এর প্রতি পরতেই রয়েছে চমক।

Parambrata and Keol featured in the next film
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:December 11, 2018 8:45 pm
  • Updated:December 11, 2018 8:45 pm  

আবার সেলুলয়েডে দুই গোয়েন্দা কাম অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী বিমল ও কুমার। এবার সাগরদ্বীপে যকের ধন খুঁজতে নতুন অ্যাডভেঞ্চারে। পরিচালক সায়ন্তন ঘোষালের সেই ছবিতে দেখা যাবে কোয়েলকেও। শুটিংয়ের নানা মুহূর্ত এবং ছবির গল্প নিয়ে কথা বললেন সোমনাথ লাহা

এবার সাগরদ্বীপে রহস্যের উন্মোচনে হাজির বিমল ও কুমার। বিপদসংকুল এই যাত্রাপথে তাদের সঙ্গী এক মহিলা ডাক্তার রুবি চ্যাটার্জি। আর এহেন ত্রয়ীর থ্রিলিং অ্যাডভেঞ্চার নিয়েই পরিচালক সায়ন্তন ঘোষালের ছবি ‘সাগরদ্বীপে যকের ধন’। সুরিন্দর ফিল্মস প্রযোজিত এই ছবির নিবেদক নিসপাল সিং। প্রসঙ্গত গত বছর হেমেন্দ্রকুমার রায়ের লেখা ‘যকের ধন’কে সেলুলয়েডের আঙিনায় নিয়ে এসে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন সায়ন্তন। একইসঙ্গে পর্দায় হাজির হয়েছিল দুই জোড়া গোয়েন্দা কাম অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী বিমল ও কুমার।

Advertisement

এবার পরিচালক আবার হাজির হেমেন্দ্রকুমার সৃষ্ট এই দুই চরিত্রকে নিয়ে যকের ধনের যাত্রাপথে। তবে এটিকে কোনওভাবেই ‘যকের ধন’-এর সিক্যুয়েল হিসাবে দেখতে নারাজ সায়ন্তন। বরং এই ছবিকে যকের ধন সিরিজের দ্বিতীয় গল্প হিসাবেই দর্শকদের সামনে তুলে ধরতে চান তিনি। কারণ হেমেন্দ্রকুমারের সৃষ্ট অন্যতম এই দুই চরিত্রকে (বিমল ও কুমার) নিয়ে সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে সম্পূর্ণ নতুন
মৌলিক কাহিনি ও চিত্রনাট্যের বুনন ঘটিয়েছেন পরিচালক।

[পেসারদের জন্য বিমানের বিজনেস ক্লাস সিট ছাড়লেন বিরুষ্কা!]

এবার কুমার গৌরব
তাই ‘সাগরদ্বীপে যকের ধন’-এর প্রতি পরতেই রয়েছে চমক। ইতিমধ্যেই ‘যকের ধন’ ছাড়া ‘আলিনগরের গোলকধাঁধা’র মতো ছবি বেরিয়ে এসেছে টলিউডের এই সম্ভাবনাময় তরুণতুর্কি পরিচালকের হাত থেকে। রীতিমতো বৃহৎ স্কেলে তাই যকের ধন সিরিজের দ্বিতীয় গল্পটি নির্মাণের পাশাপাশি ছবির কাস্টিংয়েও চমক দিয়েছেন পরিচালক। ছবিতে বিমলের চরিত্রে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে দেখা
গেলেও বদলেছে কুমার। এই ছবিতে কুমারের চরিত্রে রয়েছেন গৌরব চক্রবর্তী। সম্পর্কে যিনি অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তীর বড় ছেলে। ইতিমধ্যেই নিজস্ব অভিনয়-গুণে দর্শকমনে নিজের একটা আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন এই অভিনেতা। এর আগে ‘যকের ধন’ ছবিতে কুমারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ডেট সমস্যায় এবার এই চরিত্রটিতে রাহুল কাজ করতে না পারায় কুমারের ভূমিকায় দেখা যাবে গৌরবকে। অপরদিকে রুবি চ্যাটার্জির চরিত্রে রয়েছেন কোয়েল মল্লিক। এই প্রথমবার কোনও অ্যাডভেঞ্চার ছবিতে দেখা যাবে কোয়েলকে। অন্যদিকে ‘হেমলক সোসাইটি’, ‘হাইওয়ে’র পর ফের একবার বড় পর্দায় জুটিতে দেখা যাবে কোয়েল-পরমকে।

পরমব্রতর কসরত
এছাড়াও ছবিতে রয়েছেন কৌশিক সেন, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, রজতাভ দত্ত, কাঞ্চন মল্লিক প্রমুখ শিল্পীরা। ছবির বেশিরভাগ অংশের শুটিং হয়েছে থাইল্যান্ডের এমন সমস্ত লোকেশনে যেখানে এর আগে কোনও বাংলা ছবির শুটিং হয়নি। যেগুলির মধ্যে রয়েছে ক্র‌্যাবি-সহ বিভিন্ন দ্বীপ। থাইল্যান্ডের পাশাপাশি কলকাতা, বোলপুর ও উত্তরবঙ্গেও হয়েছে এই ছবির শুটিং। ছবিতে জলের তলায় আইল্যান্ডে,
ওয়াটার ফলে বেশ কিছু স্টান্ট দৃশ্যের শুটিং করা হয়েছে। সাঁতার না জানা পরমব্রত ২-৩ ঘণ্টা ট্রেনিং নিয়ে থাইল্যান্ডে রোমহর্ষক আন্ডার ওয়াটার স্টান্ট দৃশ্যের শুটিং করার পাশাপাশি ছবিতে করেছেন থাই বক্সিংও। পরমব্রতর পাশাপাশি কোয়েলকেও দেখা যাবে ভয়ংকর স্টান্ট করতে এই ছবিতে। ছবিতে একটি অন্যতম চরিত্রে রয়েছে শিশুশিল্পী অ্যাডোলিনা চক্রবর্তী।

Parambrata-Koel

গল্পের অলিগলি
ছবির কাহিনির সূত্রপাত কলকাতায়। কুমার ও বিমলের পরিচিত এক পেট্রল পাম্পের মালিক বাঁকাশ্যাম ধর (কাঞ্চন মল্লিক)। এহেন বাঁকাশ্যামের বাবা ছিল বিজ্ঞানী ও অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী। একদিন বাঁকাশ্যামের বাড়িতে তার বাবার ল্যাবরেটরির গুপ্তকক্ষ থেকে বিমল ও কুমার জানতে পারে থাইল্যান্ডের এক অজ্ঞাত দ্বীপের হিন্দু মন্দিরের কথা। আর সেই মন্দিরগাত্রে রয়েছে এমন কিছু যেটি সারা বিশ্বে পরিচিত রেড মার্কারি তথা লাল পারদ হিসাবে। যেটি পেট্রল, ডিজেলের থেকেও অধিক মূল্যবান। তাই রেড মার্কারি যার কাছে থাকবে সেই হবে পৃথিবীর অন্যতম ধনী, সম্পদশালী। কিন্তু সেই দ্বীপে যাওয়া বড় শক্ত। কেউ সেখানে যেতে চায় না। কারণ সাক্ষাৎ মৃত্যু অপেক্ষা করছে সেখানে। একথা জানার পরে বিমল ও কুমার মনস্থ করে থাইল্যান্ডের সেই অজানা দ্বীপ থেকে রেড মার্কারি উদ্ধার করে সরকারের হাতে তুলে দেবে। এদিকে উত্তরবঙ্গে থাকা এক ডাক্তার রুবি চ্যাটার্জিরও প্রয়োজন রেড মার্কারির। কারণ তাঁর পরিচিত একটি বাচ্চা মেয়েকে সুস্থ করে তোলার জন্য। ঘটনাচক্রে রুবির সঙ্গে যোগাযোগ হয় বিমল ও কুমারের। তারপর তারা তিনজনে মিলে রওনা দেয় থাইল্যান্ডের সেই অজ্ঞাত দ্বীপের উদ্দেশে। কুমার-বিমল-রুবি কি পারবে অজানা সেই দ্বীপ থেকে রেড মার্কারি উদ্ধার করতে? উত্তর মিলবে ছবির পর্দায়।ছবির কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন সৌগত বসু। সংগীত ও আবহ সংগীত পরিচালনায় মিমো। ছবিতে থাকছে মোট তিনটি গান। ছবির আবহর মধ্যে সিম্ফনি অর্কেস্ট্রেশনের ছোঁয়া পাবেন দর্শকরা। সিনেমাটোগ্রাফার রম্যদীপ সাহা। শুটিং শেষে এখন চলছে পোস্ট-প্রোডাকশন তথা ভিএফএক্সের কাজ। ছবি জুড়ে রয়েছে ভিএফএক্সের ছোঁয়া। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের প্রথম ভাগেই মুক্তি পাবে এই ছবি।

[‘করিনা আমার মা হওয়ার চেষ্টা করেন না’, অকপট সারা আলি খান]

পরিচালক বলছেন
ছবি প্রসঙ্গে সায়ন্তনের অভিমত, “আমাদের এখানে অ্যাডভেঞ্চার ছবি করাটা বেশ কষ্টসাধ্য। সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যেও অনেক বড় স্কেলে এই ছবিটি তৈরি করেছি। এবারের ছবিতে অ্যাডভেঞ্চার, থ্রিলের মাত্রা অনেক বেশি। হেমেন্দ্রকুমারের সৃষ্ট দু’টি চরিত্রকে নিয়ে সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে ছবি তৈরি করাটা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল আমার কাছে। আমি এই প্রথমবার সমুদ্রতলে আন্ডার ওয়াটার স্টান্ট
শুট করেছি। সেটা বেশ কঠিন ছিল। ছবিতে প্রচুর ভিএফএক্সের কাজ রয়েছে। অন্যরকমভাবে একটা ছবি দর্শকদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এবার বাকিটা ছবি দেখে দর্শকরাই বলবেন।” কোয়েলের সঙ্গে কাজের প্রসঙ্গে সায়ন্তনের মত, “কোয়েল প্রচণ্ড ডাউন টু আর্থ। তাই কাজ করে ভীষণই ভাল লেগেছে। সকলে মিলে আনন্দ করে কাজটা করেছি।”

কোয়েলের মন্তব্য
“অ্যাডভেঞ্চার ছবি আমাদের এখানে সেভাবে হয় না। এমনকী হিন্দিতেও অ্যাডভেঞ্চার ছবি দেখা যায় না। অ্যাডভেঞ্চার ছবি বলতে আমার সামনে হলিউডের ছবিগুলোর (‘জুমান জি’, টম্ব রাইডার’, ‘ইন্ডিয়ানা জোনস’) নামই ভেসে ওঠে। তবে অ্যাডভেঞ্চারের গল্পের বই অনেক পড়েছি। ‘যকের ধন’ আমি দেখেছিলাম। তাই যকের ধন-এর দ্বিতীয় ছবিতে সুযোগ পেয়ে আমি রীতিমতো এক্সাইটেড।
বিশাল আকারে এই ছবিটা তৈরি করা হয়েছে। ভার্জিন আইল্যান্ড, গুহার মধ্যে শুটিং করেছি। অসম্ভব থ্রিলিং এক্সপিরিয়েন্স ছিল আমার কাছে। আমি নিজে অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী নই। তবে এই ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা আমার কাছে যথেষ্টই থ্রিলিং।”

পরিচালক প্রসঙ্গে কোয়েলের উত্তর, “সায়ন্তন অসম্ভব ঠান্ডা মাথার, নিপাট ভদ্র, চুপচাপ পরিচালক। ও জানে ও ঠিক কী চায় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের থেকে। ও নিজে সম্পাদক বলে পুরো ছবিটাই ওর মাথায় থাকায় আমাদের কাজটা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল। তাই কাজটা করতেও বেশ ভাল লেগেছে।” ছবির সেটে পরম ও গৌরবের সঙ্গে যে চুটিয়ে আড্ডা মেরেছেন কোয়েল জানাতে ভুললেন না সেকথাও। ছবিতে তাঁর আর পরমের অন্যরকমের কেমিস্ট্রি দেখবেন দর্শকরা। অন্যমাত্রায় এই ফিলগুড ছবি নিয়ে তাই যথেষ্ট আশাবাদী কোয়েল জানান, “এই ছবি ৮ থেকে ৮০ সকলের ভাল লাগবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement