সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিয়রে ভোট। আর ঠিক এখনই সিঁদুরে মেঘ দেখছে গেরুয়া শিবির। বিজেপিকে বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য একত্রিত দেশের তাবড় তাবড় শিল্পীরা। গোটা দেশ থেকে সম্প্রতি ৬০০ জন একত্রিত হয়ে এই আবেদন জানিয়েছেন। তার আগে ১০০ জনেরও বেশি দক্ষিণী চিত্রপরিচালক বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। এবার সেই বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
একটি সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, কারা এই আবেদন জানাচ্ছেন, তা তিনি জানেন না। একশ্রেণির মানুষ রয়েছে যারা আগের সরকারের সবকিছুকে ইতিবাচক মনে করত। এই ৬০০ শিল্পী ও ১০০ চিত্রপরিচালককে তাদেরই আওতাভুক্ত করেছেন মোদি। সরাসরি না হলেও প্রধানমন্ত্রীর তির যে বিরোধীপক্ষের দিকে, তা আর বলে দিতে হয় না। যে শিল্পীরা যৌক্তিভাবে বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আবেদন জানিযেছেন, তাঁদের বক্তব্য এই দেড় লাইনেই ধূলিসাৎ করে দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
[ আরও পড়ুন: শুটিংয়ে গিয়ে একাধিকবার কেঁদে ফেলছিলেন সানি, জানেন কেন? ]
গতমাসে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আবেদন জানান ১০০-রও বেশি চিত্রপরিচালক। তাঁদের স্লোগান ছিল- ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ (Save the democracy)। এই ১০০ জন চিত্রপরিচালকের তালিকায় ছিলেন মালয়ালম পরিচালক আসিক আবু, ভেত্রিমারন, রঞ্জিত, সানাল শশীধরন, বীণা পাল, লীনা মণিমেখলাই ও মধুপালের মতো ব্যক্তিত্ব। জনগণের কাছে তাঁদের আবেদন ছিল, এবারের নির্বাচনে তারা যেন এমন একটি সরকার নির্বাচন করে, যারা দেশের সংবিধানকে শ্রদ্ধা করবে। সমস্ত রকম সেন্সরশিপ থেকে যেন অব্যাহতি পাওয়া যায় আর বাক স্বাধীনতা যাতে লঙ্ঘন না হয়। দেশের সাংস্কৃতিক ও ভৌগলিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে এই নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। গণপিটুনি, দলিত ও মুসলিমদের অধিকার খর্ব করা, সেনার প্রতি ‘আদিখ্যেতা’ এই সবই করছে এই সরকার। এর থেকে উদ্ধার পাওয়ার এটাই শেষ সুযোগ। দেশাত্মবোধকে ট্রাম্প কার্ড করে ভোট ব্যাংকে নিজেদের পাল্লা ভারী করতে চাইছে বিজেপি। এরপরই নাম না করে গৌরী লঙ্কেশের কথা বলেন তাঁরা। জানান, এই সরকারের রাজত্বকালে একাধিক সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। কারণ তাঁরা সত্য উদঘাটনের সাহস দেখিয়েছিলেন।
এরপর শুক্রবারই খবরে আসে আরও ৬০০ জন শিল্পীও এই একথা কথা বলেছেন। এবার যাঁরা মুখ খুলেছেন তাঁর ভারতে তো বটেই, গোটা বিশ্বের কাছে পরিচিত মুখ। এই ৬০০ জন শিল্পীর মধ্যে রয়েছেন নাসিরউদ্দিন শাহ, রত্না পাঠক, অমল পালেকর, অনুরাগ কাশ্যপ, কঙ্কনা সেনশর্মা, লিলেট দুবে ও মানব কউলের মতো ব্যক্তিত্ব। বিবৃতিতে শিল্পীরা বলেন, ভালবাসা, সহানুভতি, সাম্যতা ও সামাজিক বিচারবোধকে গুরুত্ব দিয়ে ভোট দেওয়া উচিত। বিজেপি হিন্দুত্বে কোনও লাগাম রাখেনি। রাজনীতিতে সুবিধা পাওয়ার জন্যই এই কৌশল ব্যবহার করেছে গেরুয়া শিবির। এমনকী হিংসা ও ঘৃণা ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই ৬০০ শিল্পীর অভিযোগ, পাঁচ বছর আগে যে মানুষটি দেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল, সে রাজনীতির সাহায্যে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন নষ্ট করছে। প্রশ্ন, বিতর্ক, বিরোধীদের প্রতিরোধ ছাড়া গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না। এই সরকার সে সবই একসঙ্গে শেষ করে দিয়েছে।
[ আরও পড়ুন: রহস্যে মোড়া ‘বসু পরিবার’-এর অন্দরমহল, জানতে একবার ঢুঁ মারতেই পারেন ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.