সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: #MeToo তালিকায় নাম উঠেছে যাঁদের, তাঁদের সঙ্গে আর কাজ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিল বলিউডের মহিলা পরিচালকদের ব্রিগেড। এই প্রমীলা বাহিনীর মধ্যে রয়েছেন কঙ্কণা সেনশর্মা, জোয়া আখতার, নন্দিতা দাস, মেঘনা গুলজার, গৌরী শিন্ডে, কিরণ রাও, রিমা কাগতি, অলঙ্কৃতা শ্রীবাস্তব, নিত্যা মেহরা, রুচি নারায়ণ এবং সোনালি বোসের মতো প্রখ্যাত সব নাম। এক বিবৃতিতে তাঁরা জানিয়েছেন, ‘‘পরিচালক হিসাবে এবং সর্বোপরি নারী হিসাবে আমরা #MeToo-কে সমর্থন করছি। যে সব মহিলা এগিয়ে এসে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা এই মঞ্চে সততার সঙ্গে জানিয়েছেন, আমরা তাঁদের সাহসকে কুর্নিশ জানাই। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, যাদের বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে, আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করব না। ইন্ডাস্ট্রির বাকি সকলকেও আমরা একই পথ অনুসরণ করতে অনুরোধ জানাচ্ছি।”
অন্যদিকে, প্রযোজক-পরিচালক সুভাষ ঘাইয়ের বিরুদ্ধে ফের নতুন করে যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনলেন এক মডেল-অভিনেত্রী। শনিবার রাতে ভারসোভা থানায় ঘাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ রুজু হয়েছে। মডেল-অভিনেত্রীর দাবি, ৭৩ বছর বয়সি ঘাই তাঁর পিছু নিয়ে শৌচাগার পর্যন্ত চলে গিয়েছিলেন। তার পর তাঁকে অন্য ঘরে নিয়ে গিয়ে জোর করে চুম্বন করার চেষ্টা করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ঘাইয়ের আচরণ দেখে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হলে ঘাই তাঁকে ব্যঙ্গের সুরে বলেছিলেন, “চলে গিয়ে দেখাও! (যা কে দিখা)। সারা রাত তোমাকে আমার সঙ্গে এই ঘরেই কাটাতে হবে। না হলে তোমায় কোনও ছবিতে লঞ্চ করব না।” প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মহিমা কুকরেজা নামে এক লেখক বলিউডের ‘শো-ম্যান’ নামে বিখ্যাত ঘাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, মাদক মেশানো পানীয় সেবন করিয়ে ঘাই তাঁকে হোটেলের ঘরে ধর্ষণ করেছিলেন। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে মহিমা মোবাইলের স্ক্রিনশটও টুইটারে ‘পোস্ট’ করেছিলেন। কিন্তু সেবার সুভাষ সেই অভিযোগ সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছিলেন। এমনকী, #MeToo-কে ‘চলতি ফ্যাশন’ বলেও অবজ্ঞা করেছিলেন তিনি। কিন্তু ফের যৌন হেনস্তার অভিযোগ সামনে আসায় স্বভাবতই বিপাকে পড়েছেন ‘খলনায়ক’, ‘হিরো’ ছবির এই পরিচালক।
#MeToo আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন বলিউড অভিনেত্রী কৃতী শ্যানন। কৃতী ‘হাউসফুল ৪’ ছবির অভিনেত্রী, যে ছবির দুই কুশীলব-অভিনেতা নানা পাটেকর এবং পরিচালক সাজিদ খান যৌন হেনস্তার অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পর ইতিমধ্যেই ছবি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। কৃতীর বক্তব্য, “আমি সেই সব মেয়েকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা সাহস করে এই নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস দেখিয়েছেন। কিন্তু আমাদের এই আন্দোলনকে দায়িত্বপূর্ণভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, এর যেন অপব্যবহার না হয়।” সাজিদের স্থানে ছবিতে এসেছেন ফারহাদ সামজি। নানার স্থানে আসতে পারেন অনিল কাপুর বা সঞ্জয় দত্ত। অভিনেতা সইফ আলি খানের প্রতিক্রিয়া, “যৌন হেনস্তা হয়নি আমার সঙ্গে, কিন্তু কেরিয়ারে ২৫ বছর আগে আমিও হেনস্তার শিকার হয়েছিলাম। এখনও ভাবলে রাগ হয়। ব্যক্তিগতভাবে এমন পরিবেশকে আমি ঘৃণা করি, যেখানে মেয়েদের সম্মান দেওয়া হয় না বা তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়।” তবে কিছুটা অন্য পথে হেঁটে ‘সোনু কি টিটু কি সুইটি’ ছবির অভিনেত্রী নুসরত ভারুচা তাঁর ছবির পরিচালক লাভ রঞ্জনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। লাভ রঞ্জনের বিরুদ্ধেও সম্প্রতি যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। ছবি নির্মাতা নিশীথা জৈন যৌন হেনস্তার অভিযোগ দায়ের করেছেন সাংবাদিক বিনোদ দুয়ার বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, প্রবীণ তামিল গীতিকার ভৈইরামুথু এদিন তাঁর বিরুদ্ধে আনা যৌন হেনস্তার অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.