প্রথম পর্দায় এসেই সকলকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। নায়িকাদের রোগা হওয়ার হিড়িকে তিনি যেন দেখিয়েছিলেন, এমন নায়িকাও হয়। প্রথম ছবি থেকে দ্বিতীয় ছবির সময়ের গ্যাপ বেশি। তবে আবার বিপরীতে অক্ষয়। আসছে টয়লেট এক প্রেম কথা। আর তার আগে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক-এর সৌমিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে একান্ত কথোপকথনে ভূমি পেড়নেকর।
টয়লেট নিয়ে, স্বচ্ছ ভারত নিয়ে এত কথা হচ্ছে, আপনাকে কখনও টয়লেট নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে?
ভূমি: হ্যাঁ, হয়েছে। অনেকবারই পরিবারের সঙ্গে রোড ট্রিপে বেরিয়ে রাস্তায় পাবলিক টয়লেট পাওয়া যেত না। মুম্বই-পুণে হাইওয়েতে প্রায়ই সমস্যা ছিল। এছাড়া শহরের মধ্যেও পাবলিক টয়লেটের অবস্থা এমন থাকত যে যাওয়া যেত না। সেক্ষেত্রে অগত্যা রাস্তায় এমন জায়গা বেছে নিতে হত যেখানে লোকজন নেই, বাচ্চাদের বলা হত রাস্তাতেই টয়লেট করে নিতে। কিন্তু মহিলাদের ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব হত না। বাকি সকলের মতো আমাকেও নানা সময়ে বিপদে পড়তে হয়েছে।
[ তামিল গান গেয়ে শ্রোতাদের বিক্ষোভের মুখে রহমান ]
ছবিতেও এই সমস্যাকেই তো তুলে ধরা হয়েছে…
ভূমি: হ্যাঁ। তবে এই ছবিটি একই সঙ্গে একটি প্রেমের ছবিও বটে। যার প্রেক্ষাপটে রয়েছে একটা সোশ্যাল মেসেজ।প্রথম যখন আমি স্ক্রিপ্টটা শুনি, এটা ভেবে অবাক হয়ে যাই যে, এরকমটাও হয়। আসলে আমি কখনও এরকম কোনও কিছু দেখিনি বা শুনিনি। তাই এটা একেবারেই আমার ভাবনা চিন্তার বাইরে। এরপর আমি পড়াশোনা করে জানতে পারি ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৫৪ শতাংশ মানুষ টয়লেট ব্যবহার করে না। ২০১৭-তে দাঁড়িয়ে বুঝতে পারছি, এটা শুধু অর্থনৈতিক সমস্যা নয় বা সরকারের সমস্যা নয়, এটা একটা মাইন্ড সেট, যেটা পরিবর্তন করা এত সোজা নয়। ছবির ট্রেলারে একটা জায়গায় শুনবেন বলা হচ্ছে, যেখানে তুলসী মঞ্চ রয়েছে সেখানে শৌচালয় কী করে বানানো যায়? এটা আসলে একটি মানসিক সমস্যা। কিন্তু তাঁর চেয়ে বড় কথা, বাড়ির মহিলাদের সমস্যা। ভাবুন ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা টয়লেটে যেতে পারেন না মহিলারা। এমনকী সূর্যাস্তের পর তাঁরা যখন বাইরে যায়, সেটাও কিন্তু সেফ নয়। একটা সমীক্ষায় জানা গেছে ৫০ শতাংশ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে যখন মহিলারা অন্ধকারে বাইরে শৌচকর্ম করতে যান। এটা ভেবেই আমি শিউরে উঠেছিলাম। তবে আমাদের ছবি কিন্তু একটা মিষ্টি প্রেমের গল্প যেখানে ভিলেন হয়ে ওঠে টয়লেট। আপনি যখন ছবি দেখে বেরোবেন তখন আনন্দে বেরোবেন, কিন্তু আপনার মাথায় এটাও থাকবে যে পরিবর্তন আনতে হবে।
হিন্দি বাণিজ্যিক সিনেমায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে। চিত্রনাট্যে সোশ্যাল ইস্যু উঠে আসছে, আপনি কী বলবেন?
ভূমি: ছবির বিষয়বস্তু আগের থেকে অনেক পালটে গিয়েছে। তাই আমার মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কাজ করছেন। বিভিন্ন সোশ্যাল ইস্যু তুলে আনা হচ্ছে পর্দায়। সেখানে শামিল হচ্ছেন সুপারস্টাররা। এরকম কাজ সমাজের জন্য খুবই ভাল। তাই সিনেমার এই পরিবর্তনকে অবশ্যই আমি সাধুবাদ জানাই।
ক্যামেরার পিছনে কেমন ছিল এই ছবির অভিজ্ঞতা?
ভূমি: আমার জীবনের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে এই ছবি। আমরা খুব যত্ন সহকারে এই ছবির শুটিং করেছি কিন্তু পাশাপাশি খুব মজাও করেছি। অক্ষয় স্যার, আমাদের পরিচালক শ্রী নারায়ণ-সহ পুরো টিম এমনভাবে কাজ করেছি যে বুঝতেই পারিনি কখন শুটিং শেষ হয়ে গেল। আমরা পুরো একটা পরিবারের মতো হয়ে গেছিলাম। এত ভাল ভাল অভিনেতা-অভিনেত্রী ছিলেন যে খুব ভাল সময় কাটিয়েছি। মথুরার গোবর্ধনে আমরা শুট করেছি। অক্ষয় স্যারের এনার্জি সবসময় আমাকে অনুপ্রাণিত করতো। সবসময় মজায় করতেন তিনি, এটা আশেপাশে সবার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি উনি খুবই প্রফেশনাল। অনেক কিছু শিখেছি আমি।
[ শুটিংয়ে নায়কের সামনেই পোশাক বিভ্রাটে প্রিয়াঙ্কা, কী করলেন তিনি? ]
আপনার প্রথম ছবি থেকে দ্বিতীয় ছবির জার্নিতে অনেকটা সময় লেগে গেল তো…
ভুমি: আসলে ‘দম লাগাকে হাইসা’র জন্য অনেকটা ওজন বাড়িয়ে ছিলাম, সেটা কমাতেই প্রায় একবছর লেগে গিয়েছে। আর তারপর হঠাৎই এই ছবির অফারটা আসে।
এই চরিত্রের জন্য কতটা প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?
ভূমি: আসলে আমি বেশ টেনশনে ছিলাম। শুধু মনে মনে ভেবেছিলাম যে, সেটে সময় মতো পৌঁছে যাব তারপর দেখা যাবে। কিন্তু প্রথমদিন থেকেই অক্ষয় স্যার সবকিছু এতটা সহজ করে দিয়েছিলেন যে আর কোন টেনশন ছিল না। পাশাপাশি আমাদের পরিচালকও খুব সাহায্য করেছেন। এই ছবি নিয়ে অনেক রিসার্চ করা হয়েছে। এমনকী আমি নিজেও শুটিং শুরুর দু’দিন আগে ওই গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিলাম, কথা বলেছিলাম গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে। রীতিমতো বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল ওঁদের সঙ্গে।
অক্ষয়ের কোন ছবি আপনি প্রথম দেখেছিলেন।
ভূমি: (অনেক ভেবে বললেন) খিলাড়ি। এত ভাল ভাল গান ছিল।
সব ছবিতেই আপনার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে?
ভূমি: হ্যাঁ, আর সব ছবিতেই পরিবারের কোনও চাপ নেই কিন্তু আমার চরিত্র বিয়ে করতে চাইছে। (হাসি) খুব তাড়াতাড়িই আসছে আমার আগামী ছবি ‘শুভমঙ্গল সাবধান’-এর ট্রেলার । দেখুন সেখানে কী হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.