Advertisement
Advertisement

Breaking News

বিয়ে হওয়ার সঙ্গে কেরিয়ারের কোনও বিরোধ নেই, অকপট কোয়েল

১৫ বছরের জার্নি নিয়ে মুখোমুখি অভিনেত্রী।

Koel Mallick’s tollywood journey
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:December 21, 2018 5:03 pm
  • Updated:December 21, 2018 5:03 pm  

বিয়ে হওয়ার সঙ্গে কেরিয়ারের কোনও বিরোধ নেই ‘রক্ত রহস্য’-র শুটিংয়ের শেষ দিন একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন কোয়েল মল্লিক। অ্যাক্টর হিসেবে এক্সপেরিমেন্ট করতে তৈরি তিনি। শুনলেন বিদিশা চট্টোপাধ্যায়

কোয়েল এই বছর ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’ মুক্তি পেয়েছে এবং ‘রক্ত রহস্য’র শুটিং শেষ হল। কেরিয়ারের এই ফেজে এসে এইভাবেই ধীরেসুস্থে কাজ করতে চাও?

Advertisement

কোয়েল: আমি ওয়ার্কোহলিক কোনওদিনই ছিলাম না। আমার কেরিয়ারের শুরু হয় কলেজের সেকেন্ড ইয়ারে এসে। যখন আমি একটু উঁচু ক্লাসে তখন প্রভাত রায়ের কাছ থেকে প্রথম ফিল্মের অফার আসে। স্বাভাবিকভাবেই মা-বাবা তখন করতে দেয়নি। কারণ, বাঙালি বাড়িতে পড়াশোনার উপর সবসময়ই খুব জোর দেওয়া হয়। আর আমার স্কুললাইফ আর পাঁচটা বাঙালির মতোই। পড়াশোনার চাপটা ছিলই। কলেজের সেকেন্ড ইয়ারে এসে প্রথম ছবির কাজে হাত দিলাম। তো আমি নিজের জন্য নিজের মতো করে সময় কোনওদিনই পাইনি। অভিনয় করার আগে আমি ছিলাম স্টুডেন্ট। স্কুল আর বাড়ির ঘেরাটোপেই ছিল জীবন। আইদার পড়াশোনা, নয়তো বাড়ি। বন্ধুদের সঙ্গে দেদার আড্ডা, হইহুল্লোড় করা, বেড়াতে যাওয়া, সিনেমা দেখা- এইসব অভিজ্ঞতা আমার তেমন একটা হয়নি। পিকনিক গিয়েছি, তা-ও স্কুলের টিচারদের সঙ্গে। কাজ করতে গিয়ে কিছুদিন পরেই বুঝেছিলাম আমি ওয়ার্কোহলিক নই। কিন্তু যখন আমি কাজ করি, প্রচণ্ড সিরিয়াসলি, ফোকাসড হয়ে কাজ করি। কারণ আমি যে জায়গাটা পেয়েছি, সেটাকে টেকেন ফর গ্রান্টেড করে দেখিনি কখনও। প্রচণ্ড পরিশ্রম করে এই জায়গাটা তৈরি করেছি। অ্যান্ড ইটস নট ইজি টু অ্যাচিভ। আবার একই সঙ্গে এমনও নয় অভিনয় না করতে পারলে আমি মরেই যাব। ক্যামেরা ফেস করতে না পারলে সাফোকেশন হচ্ছে- তেমনও নয়। আমার একটা সুন্দর জীবন আছে আউটসাইড ফিল্মওয়ার্ল্ড! আই হ্যাভ বিউটিফুল ফ্যামিলি লাইফ। রানে এবং ওর পরিবার। আমি নিজেও জয়েন্ট ফ্যামিলিতে বড় হয়েছি। রানেদের ফ্যামিলিতেও অনেক সদস্য। সবাই মিলে স্নেহে, আদরে, সুন্দর একটা উষ্ণ পরিবেশের মধ্যে থাকি। সো আই ডোন্ট মিস ওয়ার্ক হোয়েন আই অ্যাম নট ওয়ার্কিং। কিন্তু একটা সময়ের পর থেকে আমার ইচ্ছে করছিল নতুন ধরনের কিছু কাজ করতে। এটা কবে থেকে, যদি জিজ্ঞেস করো, বলতে পারব না। তো তখন মনে হল এনাফ অফ দোজ ফিল্মস হুইচ আই হ্যাভ অলরেডি ডান। এমন নয় সেই ছবিগুলো করে আনন্দ পাইনি! কারণ ওই ছবিগুলো না করলে, আমি আজ এই জায়গায় পৌঁছতে পারতাম না। কিন্তু একই সঙ্গে একটা সময়ের পর যে ধরনের কাজ করতে চাইছিলাম যে ধরনের ছবিতে নিজেকে দেখতে চাইছিলাম, তেমন ছবি পেতে গেলে যে অপেক্ষা করতে হবে সেটা বুঝতে পেরেছিলাম। কারণ আমি চাইলেই তো হবে না। দর্শকদের তেমন ছবি দেখার জন্য প্রিপেয়ার্ড হতে হবে। এখন অডিয়েন্স প্রিপেয়ার্ড অন্য ধরনের আউট অফ দ্য বক্স কনটেন্টের জন্য। তেমন স্ক্রিপ্টের জন্য যদি আমাকে ছয়-সাত মাস বাড়িতে বসে থাকতে হলেও আপত্তি নেই, থাকব। এমন নয় যে, পাঁচ-ছয়মাস আমাকে দর্শক দেখেনি বলে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ব।

বাউয়া সিং মন ভরালেও নম্বর পেল না ‘জিরো’ ]

এই সূত্র ধরেই বলি, ‘নাটের গুরু’-র মতো কমার্শিয়াল ছবি দিয়ে শুরু করেছিলে, তারপর হার্ডকোর কমার্শিয়াল ছবির মধ্যেও সন্দীপ রায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বা সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে কাজ করেছ।

কোয়েল: আমার দ্বিতীয় ছবি, রাজা সেনের ‘দেবীপক্ষ’ তো হার্ডকোর কমার্শিয়াল ছবি ছিল না। আমি সবসময়ই চেষ্টা করেছি সব ধরনের জনারে কাজ করতে। অভিনতো হিসাবে ম্যাক্সিমাম অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছতে চেয়েছি সবসময়। আমার চয়েস অফ ফিল্মস দেখলে বুঝবে কেরিয়ারের প্রথম থেকেই সব ধরনের ছবি করতে চেয়েছি। ‘চাঁদের বাড়ি’, ‘জ্যাকপট’, ‘চার’, ‘হিটলিস্ট’ বা ‘হেমলক সোসাইটি’। যখনই সুযোগ পেয়েছি এই ধরনের ছবি করেছি। তখন এই ধরনের ছবি এমনিতেই কম হত। তবু যখন যেভাবে সুযোগ এসেছে কাজে লাগিয়েছি। শুধুই বেশি সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছানো, এটাই একমাত্র কারণ নয়। আমি চেয়েছিলাম নিজেকে চ্যালেঞ্জ করতে।

‘হেমলক সোসাইটি’-তে একেবারে অন্য কোয়েল মল্লিককে পেয়েছিলাম।

কোয়েল: সেই সময়ে দাঁড়িয়ে ওটা খুব ফ্রেশ লেগেছিল হয়তো, কিন্তু ‘রক্ত রহস্য’ মুক্তি পেলে বুঝতে পারবে এই ছবিতে আমি নিজেকে অনেকটা ভেঙেছি। ‘হেমলক’-এ আমাকে স্টিরিওটাইপ থেকে বেরিয়ে ডিপ্রেসড, সুইসাইডাল একটা চরিত্রে দেখেছিল দর্শক। কিন্তু এই ধরনের আউট অফ দ্য বক্স চরিত্র তো রোজ রোজ আসে না। কোন পরিচালক বা কোন স্ক্রিপ্ট আমাকে এই সুযোগটা দেবে সেটা দেখতে হবে। তো যা অফার পেয়েছি, তার মধ্যে যে চরিত্রগুলো আমাকে নিজের কমফোর্ট জোন থেকে টেনে বের করেছে- সেই চরিত্রে অভিনয় করেছি।

‘রক্ত রহস্য’ করতে রাজি হওয়ার কারণ কী?

কোয়েল: আমাকে যখন সৌকর্য স্ক্রিপ্ট শোনায়, সেদিন আমি শুটিং থেকে ফিরে ক্লান্ত। শুনছিলাম মন দিয়ে। শুনতে শুনতে বেশ কিছুক্ষণ পর আমি সোজা হয়ে বসলাম। গ্রাফটা একরকম চলছিল, তারপর দুম করে গল্পে এমন একটা মোড় আসে, যেটা আমাকে ফ্যাসিনেট করেছিল। গল্পটা যেমনটা ভাবছিলাম সেটা থেকে একেবারে অন্যরকম মোড় এল, যেটা দুর্দান্ত। আর আমার চরিত্রটা (স্বর্ণজা) খুব চ্যালেঞ্জিং। আমি কোনওদিন কোনও চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে এতটা মেন্টালি ডিসটার্বড ফিল করিনি। চরিত্রটার সঙ্গে হন্টিং কিছু ঘটনা ঘটে যেটা তাকে ভীষণ নাড়া দেয়। ‘স্বর্ণজা’র সেই ঘটনায় ভেঙেচুরে যায় কিন্তু ভিতরে ভিতরে তবু পুরোপুরি ভাঙে না। একটা মানুষ কষ্টের মুখে দাঁড়িয়ে সেটাকে সহ্য করে যাচ্ছে ক্রমাগত- এটা অনেক বেশি পেনফুল। শি ইজ স্ট্রেচিং হারসেলফ অ্যান্ড বাউন্সিং ব্যাক টু লাইফ। ‘স্বর্ণজা’ খুব ভাল মানুষ। কেউ তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও নিজেকে বদলায় না।

চন্দন রায় সান্যালের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?

কোয়েল: চন্দন ইজ ভেরি ট্যালেন্টেড অ্যাক্টর। বেশ কিছু দৃশ্য রয়েছে ওর সঙ্গে। ওর মধ্যে একটা ফ্ল্যামবয়েন্স আছে। খুব স্বতঃস্ফূর্ত! দারুণ লেগেছে ওর সঙ্গে কাজ করে।

এই ইন্ডাস্ট্রিতে তোমার প্রায় পনেরো বছর হল। যখন শুরু করেছিলে, একেবারে আনকোরা ছিলে। কী মনে হয় এই পনেরো বছরে তোমার মধ্যে কী পরিবর্তন এসেছে? অভিনয় থেকে, জীবন থেকে চাওয়া-পাওয়া কতটা বদলে গিয়েছে?

কোয়েল: অভিনেতা হিসাবে আমার খিদে বেড়েছে বলতে পারো। এমন নয় যে, আমাকে অনেক কাজ করতে হবে। ইটস নট ইন টার্মস অফ কোয়ান্টিটি বাট ইটস অ্যাবাউট কোয়ালিটি। এখন আমি অভিনেতা হিসাবে এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য তৈরি। নিজেকে বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে দেখতে চাই। এখন এমন একটা স্টেজে আছি যেখানে প্রতিটা মুহূর্তে নিজেকে চ্যালেঞ্জ করতে চাই। চরিত্রের কথা ভাবতে গিয়ে নিদ্রাহীন রাত কাটাতে চাই।

কী মনে হয়, এই পনেরো বছরে বাংলা ইন্ডাস্ট্রি কতটা বদলেছে?

কোয়েল: এখন কাজের ব্যাপারে অনেক প্রফেশনাল অ্যাপ্রোচ এসেছে। আগে ছিল না, এমন নয়, তবে এখন আগের থেকেও বেশি। টেকনিকালি আমরা অনেকটা এগিয়েছি। আগে সব কিছুর জন্য বম্বে ছুটতে হত। এখন সেটা কিছুটা হলেও কমেছে। দর্শক দেখছে বলে প্রোডিউসাররাও ইনভেস্ট করছে। আনকনভেনশনাল গল্প তৈরি হচ্ছে।

উন্মুক্ত স্তনের ছবি, নেটদুনিয়ায় আগুন জ্বালালেন হলিউড অভিনেত্রী ]

আর যারা একঝাঁক নতুন অভিনেতা কাজ করছে- তাঁদের সম্পর্কে কী মনে হয়?

কোয়েল: জেনারেলি আমার মনে হয় এখনকার অভিনেতারা সব ব্যাপারেই খুব শিওর। মেকআপ, কস্টিউম কোনটা কীভাবে হলে ভাল হবে সবটা বোঝে। আমি যখন অভিনয় শুরু করেছি, মেকআপ সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না। বিয়েবাড়িতে গেলে বড়জোর লিপস্টিক আর কাজল লাগাতাম-ওইটুকুই বুঝতাম। এখনকার ছেলেমেয়েদের সব কিছু নখদর্পণে। কোন অ্যাঙ্গেল হলে ভাল হবে, কেমন মেকআপ হলে ভাল হবে সবটাই জানে। আমি তো ট্রায়াল অ্যান্ড এরর মেথডে সব শিখেছি।

২০১৬-তে একটা ব্রেক নিয়েছিলে- সেটা কেন?

কোয়েল: খুব কনশাসলি ব্রেক নিয়েছি, এমন নয়। ‘বেশ করেছি প্রেম করেছি’-র পর নতুন স্ক্রিপ্টের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু অপেক্ষাটা প্রায় দু’বছরের হয়ে যাবে, বুঝিনি। এমন নয়, যে স্ক্রিপ্ট এসেছে সেগুলো খারাপ, কিন্তু সেই সব চরিত্রে অভিনয় করা আমার হয়ে গিয়েছিল। আমি নিজেকে রিপিট করতে চাইনি। আর আগেই বলেছি ক্যামেরা তেমন একটা মিস করিনি। তাই মনে হয়েছিল আবার যখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়াব তখন একটা প্রতিশ্রুতি নিয়ে দাঁড়াব যে, কোয়েল এবার অন্যরকম কিছু ডেলিভার করবে।

এই দু’বছরে নিজের সম্পর্কে নতুন কোনও রিয়ালাইজেশন?

কোয়েল: আমি এমনিতে খুব শান্ত মানুষ। খুব বেশি অধৈর্য হয়ে যাই না। আমি মনে করি সব কিছুরই একটা সময় আছে। আমি তাড়াহুড়ো করে সেটাকে এগিয়ে আনতে পারব না। উই জাস্ট নিড টু অ্যাকসেপ্ট দ্যাট। আর এই দু’বছরে বুঝেছি যে, যতটা ধৈর্যশীল নিজেকে ভেবেছিলাম, তার চেয়েও বেশি ধৈর্য আমার আছে। নিজেই অবাক হয়ে গিয়েছি এটা আবিষ্কার করে। আর এই গ্যাপটা এসেছে আমার কেরিয়ারের প্রাইম টাইমে। পরপর কাজ করছিলাম, তারপরই হঠাৎ করে এই গ্যাপ, যখন কাজ করছি না। আর বিয়ের কারণে এই গ্যাপ নয়। সবাই যখন বলা শুরু করেছিল- বিবাহিতা, ছবি চলবে কি না, তখনই আমার কেরিয়ারের বড় হিট ‘রংবাজ’। এটা আমার বিয়ের ঠিক পরেই।

তোমার কী মনে হয়, নায়িকাদের বিয়ে হয়ে গেলে খরচের খাতায় ফেলে দেওয়া ব্যাপারটা মিথ হয়ে গিয়েছে এখন?

কোয়েল: বিয়ের সময়ও বলেছিলাম, এখনও বলব, র‌্যাদার একটা নাম নেব। বিয়ের পরে কাজ করতে এসে দারুণভাবে সফল এবং কিংবদন্তি, তিনি হলেন সুচিত্রা সেন। এর থেকে বড় উদাহরণ আর হয় না। প্রথম ছবি যখন করেছিলেন তখন মুনমুন মাসির জন্ম হয়ে গিয়েছে।

তুমি কোনও প্রেশার ফিল করোনি?

কোয়েল: প্রেশার তখনই ফিল করব, যখন এটা নিয়ে আমার কোনও কনসার্ন থাকবে বা এটা নিয়ে খুব ভাবনাচিন্তা করব। আমার মনে হয় কাজের ক্ষেত্রে বিয়ে হল কি হল না- এটা কনসিডার করার মতো ফ্যাক্টরই না।

কী মনে হয়, মল্লিকবাড়ির মেয়ে হওয়া বা রানের বাড়ির সদস্য হয়ে যাওয়াটা একটা প্রিভিলেজের মতো কাজ করেছে?

কোয়েল: আই ডোন্ট থিংক সো। ইট’স মাই নেচার। আমার মনে হয় খ্যাতি এবং ব্যাকগ্রাউন্ড দুটো কমপ্লিটলি আলাদা জিনিস। দুটো কমপ্লিট আলাদা স্পেস। বিয়িং সিকিওর বা ইনসিকিওর- এটা প্রত্যেকের মাথার ভিতরে থাকে। ব্যাকগ্রাউন্ড সেটা পুরোপুরি কন্ট্রোল করতে পারে না, আর আমি যদি এতটাই ইনসিকিওর থাকতাম তাহলে দু’বছরের এই গ্যাপটা নিতে পারতাম না।

#Metoo অভিযোগের পালটা, গায়িকা সোনা মহাপাত্রকে তোপ সোনু নিগমের ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement