সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর কোনও ছবি নয়। এবার রাজনীতিকেই নিবেদিত প্রাণ করতে চান অভিনেতা কমল হাসান। তামিলনাড়ুর বাসিন্দাদের জন্যই এহেন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। চলতি মাসের ২১ তারিখেই তাঁর নব গঠিত রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তিনি। সেদিনই রাজনৈতিক দলের নতুন নামও প্রকাশ করবেন এই অভিনেতা। অভিনেতা থেকে রাজনীতিকে বদলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বুধবার নিজেই ঘোষণা করলেন তিনি। এক টিভি সাক্ষাৎকারে জানিয়ে দিলেন, ব্যাংক ব্যালেন্স বাড়াতে রাজনীতিতে আসছেন না। অভিনেতা হিসেবে যা উপার্জন করেছেন তা অনেক। শুধুমাত্র তামিলনাড়ুর বাসিন্দাদের কথা ভেবেই তিনি রাজনীতিতে আসছেন। ভোটে দাঁড়ালে হারতেও পারেন। তবে সততার সঙ্গে বাঁচার নীতি রয়েছে তাঁর। তাই হার নিয়ে মাথা ঘামান না, এই তেষট্টি বছরের অভিনেতা।
আত্মবিশ্বাসী তামিল সুপারস্টারের সাফ যুক্তি, “রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলেও ৩৭ বছর ধরে সমাজেরই সেবা করছি। এই ৩৭ বছরে ১০ লক্ষ বিশ্বস্ত কর্মী পেয়েছি। তাঁরা বিগত ৩৭ বছর ধরে আমার সঙ্গেই আছেন। আমার নির্দেশে, আরও তরুণকে উন্নয়নমূলক কাজে টেনে নিয়ে আসছেন। প্রায় ২৫০জন আইনজীবীও এই কাজে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে প্রচুর রোজগারের উদ্দেশ্যে রাজনীতিতে আসছি না। এখনও উপার্জনক্ষম। চাইলে জনপ্রিয় ফিল্মি জীবন থেকে অবসর নিয়ে সুখে দিন কাটাতে পারি। তবে অভিনেতা হিসেবে মরতে চাই না। মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই। এজন্য নিজের কাছেই নিজে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছি।”
তাঁর রাজনীতির রং হচ্ছে কালো। ভৌগলিক দিক থেকে বিচার করলে দ্রাবিড় জাতির গাত্রবর্ণ কালো। তাই কালো রংই তাঁর রাজনৈতিক দলের প্রতিচ্ছবি হোক। এই রং সংস্কৃতিগত দিক থেকেও তামিলদের জন্য যুক্তিযুক্ত। তবে অদূর ভবিষ্যতেও বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই। ভারতের ইতিহাস বলছে রাজনীতি পরিবর্তনশীল। এই পরিবর্তন ভালর জন্যই হয়। তিনিও পরিবর্তনে বিশ্বাসী। তাই বলে বিদ্বেষমূলক ধ্বংস্বাত্মক পরিবর্তনকে তিনি সমর্থন করেন না। কথা প্রসঙ্গে চলে আসে তামিল সুপারস্টার রজনীকান্তের কথা। রজনীকান্তও রাজনীতিতে আসতে চলেছেন। দুই সুপারস্টারের রাজনৈতিক জীবন একই খাতে বইবে কিনা তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলতে নারাজ তিনি। তবে রজনীকান্ত যদি বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া না বাঁধেন, তাহলে জোটে যেতে রাজি আছেন কমল হাসান। নেহরু, গান্ধী দুজনেরই ভক্ত তিনি হিন্দু বিরোধী তিনি নন। তিনি শুধু হিন্দুত্বের চরমপন্থী ভাবাদর্শের বিরোধী। যা কিনা ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিচ্ছে।
এই মুহূর্তে হাতে দুটি ছবির কাজ রয়েছে। এই কাজ শেষ হলেই অভিনয়ে ইতি টানবেন তিনি। তবে আজকেই যে রাজনীতি নিয়ে ভেবেছেন এমন নয়। ১০-১২ বছর আগেই রাজনীতিতে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু কীভাবে আসবেন। কী তার গতিপথ হবে সেসব কিছুই সেদিন নির্দিষ্ট হয়নি।
তিনি নিজে কখনও রাগতে পারেন না। নালিশ প্রিয়ও নন। শুধু চান তামিলনাড়ুবাসীর উন্নতি। সেজন্য রাজনীতি ছাড়া অন্য কোনও মাধ্যম তাঁর নেই। ভোটের আশা করে রাজনীতিতে আসছেন না। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ারও স্বপ্ন নেই। একটাই স্বপ্ন, মানুষের জন্য কাজ করছেন। খুব শিগগির রজনীকান্তকে নিয়ে রামেশ্বরম, মাদুরাই ও শিবগঙ্গা এলাকায় যাবেন। সেখানের একটি দরিদ্রতম গ্রামকে দত্তক নিতে চান দু’জনে। পৌঁছে দিতে চান স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, পানীয়জলের মতো গ্রাসাচ্ছাদনের যাবতীয় সুযোগ। ইতিমধ্যেই যে গ্রামগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলি আক্ষরিক অর্থেই হতদরিদ্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.