‘অ্যাডভেঞ্চার্স অফ জোজো’-র শুটিংয়ের গল্প বলতে গিয়ে হাসতে হাসতে অনেক কথাই জানাল সামিউল আলম। শুনলেন শম্পালী মৌলিক।
‘সহজ পাঠের গপ্পো’ মুক্তি পেয়েছিল ২০১৬-তে। এই ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে সেরা শিশু অভিনেতা নির্বাচিত হয়েছিলেন নুর ইসলাম এবং সামিউল আলম। একজন হল ছবির ‘ছোটু’। অন্যজন বড় ভাই ‘গোপাল’। মনে পড়ে গোপালকে?
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তালনবমী’র আধারে ডানা মেলেছিল মানস মকুল পালের সে ছবির গল্প। এবার নিশ্চয়ই পাঠক চিনতে পারছেন। সেই গোপাল এখন নবম শ্রেণির পড়ুয়া। ঠোঁটের ওপর হালকা গোঁফের রেখা দেখা দিয়েছে। কিন্তু সারল্যমাখা বুদ্ধিদীপ্ত চোখদুটো তার এখনও একইরকম। সেই সামিউল আলমকে এবার পাওয়া যাবে রাজ চক্রবর্তীর নতুন ছবি ‘অ্যাডভেঞ্চার্স অফ জোজো’-তে। প্রসঙ্গত ‘সহজ পাঠের গপ্পো’ দেখেই রাজ তাকে পছন্দ করে ফেলেন।
‘জোজো’-তে সামিউল মাহুতের ছেলে ‘শিবু’র ভূমিকায়। যার সঙ্গে বড়পাহাড়ির জঙ্গলে বেড়াতে আসা জোজোর (যশোজিৎ) বিরাট বন্ধুত্ব হয়ে যাবে। তারপর দুই খুদে মিলে নানান কাণ্ড ঘটাবে। যেখানে রয়েছে জঙ্গল, হাতি, চেঙ্গিস বাঘ, আরও নানা জন্তুজানোয়ার এবং অবশ্যই চোরাশিকারি। এই নিয়েই জমে উঠবে রাজ চক্রবর্তীর প্রথম বাচ্চাদের ছবি।
কথা হচ্ছিল সামিউলের সঙ্গে। সে এখন খুব ব্যস্ত, কারণ নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। ‘‘আমার খুব ভাল লেগেছে কাজটা করতে, ‘সহজ পাঠের গপ্পো’-তে যেমন করেছিলাম, এটা তার থেকে একদম অন্যরকম। অরুণাচল, শিলিগুড়িতে শুটিং করেছি আমরা। বিভিন্ন ধরনের জঙ্গলে ঘোরা হয়েছে। সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করেছি। মা-বাবা খুব এক্সাইটেড অ্যাকচুয়ালি। কারণ আমি আবার সিনেমায় কাজ করছি। সবাই খুব খুশি। শুটিংয়ে আমার সঙ্গে দাদু গিয়েছিল।” বলল সে।
[ ‘ক্যারেক্টর ঢিলা’! ম্যানেজারের নামে থানায় অভিযোগ জারিনের ]
এবারে সামিউলের লুক একেবারে আলাদা। বেশ বড় চুল ট্রেলারে দেখা যাচ্ছে। অস্বস্তি হয়নি? সে প্রসঙ্গে তাকে জিজ্ঞেস করতেই স্পষ্ট উত্তর তার- “ভাল লেগেছে নতুন রোল পেয়ে। কষ্ট হবে কেন? একটা ভাল জিনিস যদি হয়, তার জন্য কষ্ট তো করতেই হবে। আমাকে প্রথমে রাজ চক্রবর্তীর প্রোডাকশন থেকে ফোন করেছিল। তারপর আমি গিয়ে দেখা করি। মানসকাকু ট্রেলার দেখে ভাল বলেছে। বাড়ির সবারও খুব ভাল লেগেছে। স্কুলের বন্ধুরাও এখন ‘জোজো’র কথা জেনে গিয়েছে। আমার সঙ্গে যশোজিতের খুব ভাল বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে। যেমন ‘সহজ পাঠ’-এ নুরের সঙ্গে হয়ে গিয়েছিল। আমার সঙ্গে যশোজিতের প্রায় প্রতিদিনই ভিডিও কলে কথা হয়। সিনেমার শুটিংয়ে হাতি চড়তে হবে প্রথমেই বলেছিল। আমি জানতাম যে, হয়তো কোনও সিঁড়িটিড়ি দিয়ে দেবে তারপর উঠে যাব। ওখানে গিয়ে দেখলাম, সেটা একদমই না! যে মাহুতের কাছে আমি ট্রেনিং নিয়েছিলাম, দেখলাম সে হাতির কান ধরল, তারপর ব্যালেন্স করে শুঁড়ে পা দিয়ে উঠে পড়ল। প্রথমে আমাকে ঠেলেঠুলে হাতির পিঠে তুলে দেওয়া হয়েছিল। যেদিন শুটিং ছিল না, প্র্যাকটিস করেছি, সেদিন একটু ভয় লাগছিল। তারপর হাতিকে খাওয়ালাম। একটু একটু করে ভয় কাটছিল। ওখানে তো হিন্দি কথা চলে, আমি হাতির সঙ্গে বাংলায় কথা বলতে শুরু করলাম। ‘বোস’, ‘বোস’ বলতাম। আমি ওকে বাংলা শিখিয়ে ফেলেছিলাম। প্রথম প্রথম বুঝতে পারত না। বলতাম, ‘ওঠ’, ‘চল’। এই করে একসময় আমার কথা শুনে চলতে শুরু করল। তারপরে রাজদা একদিন ডেকে বলল, ‘মাহুত যেরকম শুঁড়ে পা দিয়ে উঠছে তেমন করে উঠতে পারবি?’ বললাম, ‘হ্যাঁ, আমি পারব। করে দেব।’ তখনও কিন্তু কী করে পারব, নিজেও জানি না। হ্যাঁ বলে দিয়েছিলাম। মাহুত যেমন বলল, এখানে ধরো, শুঁড়ে পা দাও। করতে দেখলাম, হাতি আমাকে তুলে নিল। একবারেই করেছিলাম।” হাসতে হাসতে সামিউল জানাল তার শুটিংয়ের অভিজ্ঞতার কথা। তার তখনও বাকি চারটে পরীক্ষা। তারপরেই বড়দিনের মুখে (২১ ডিসেম্বর) এসে পড়বে ‘অ্যাডভেঞ্চার্স অফ জোজো’-র পরীক্ষা।
[ শ্লীলতাহানির অভিযোগে দুবাইয়ে গ্রেপ্তার মিকা সিং ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.