শম্পালী মৌলিক: রহস্য-গল্পের যে মার নেই, সে বোঝা গিয়েছে বিগত কয়েক বছরেই। অন্তত বাংলা ছবির বক্স অফিস ধরার ক্ষেত্রে ধাঁধা আর গোয়েন্দাগিরি যে অব্যর্থ তা বুঝতে আজ আর বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এতদিন রহস্য ছবি মানেই ছিল সাহিত্য-নির্ভর। এই প্রথম সাহিত্য-নির্ভর না হয়েও অরিজিনাল কাহিনি নিয়ে তুমুল সাফল্য পেল কোনও সত্য-অনুসন্ধানী চরিত্র অর্থাৎ ‘সোনাদা’-র কথা বলছি। প্রথম ছবি থেকেই সফল ফ্র্যাঞ্চাইজি হয়ে ওঠা নিশ্চিত করে ফেলেছে আবির চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘সুবর্ণ সেন’, ওরফে ‘সোনাদা’ চরিত্রটি। প্রথম সপ্তাহে বক্স অফিসের তুঙ্গস্পর্শী সাফল্যের জেরে ভেঙ্কটেশ ফিল্মস ‘গুপ্তধনের সন্ধানে’ ছবিটির সিক্যুয়েল ঘোষণা করে দিল। প্রকাশ্যে এল ছবির ফার্স্টলুকও।
স্পষ্টতই ডেবিউ পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় উচ্ছ্বসিত। যাঁকে প্রথমবার প্রেজেন্ট করেছেন অরিন্দম শীল। যিনি প্রথম থেকেই ধ্রুবর মেকিং-এর ওপর ভরসা করেছিলেন এবং ভূয়সী প্রশংসাও করেন। ছবিটি নিয়ে দর্শকের বিপুল আগ্রহ প্রমাণ করে দিল প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা ঠিক পরিচালকের ওপরেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ফলে ছবি মুক্তির এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই ‘গুপ্তধনের সন্ধানে’র সিক্যুয়েল নিশ্চিত হয়ে গেল।
[মায়ের শাড়ি পরে জাতীয় পুরস্কার নিতে গেলেন শ্রীদেবীর মেয়ে জাহ্নবী]
পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়কে মোবাইলে ধরতেই খুশিঝরা কণ্ঠে বলে উঠলেন, ‘আমার মনে হয় প্রত্যেকের একটা দাবি তৈরি হয়ে গিয়েছে যে, আবার সোনাদাকে চাই! এটা যে কতটা আনন্দের কী বলব! একটা নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি সোনাদা, আবির, ঝিনুককে নিয়ে, মানুষ যেভাবে গ্রহণ করেছে কী বলব। বাঙালিয়ানায় মোড়া ছবি। সব প্রজন্মের সকলের কাছ থেকেই আমরা প্রশংসা পাচ্ছি। বহুকাল বাদে শুনছি বাঙালি ছবি দেখতে থিয়েটারে এসে টিকিট না পেয়ে ফিরে গিয়েছে। অভাবনীয়! একের পর এক থিয়েটারে এটা ঘটেছে।’
শবর, ফেলুদা, ব্যোমকেশ, কাকাবাবু, কিরীটী থাকা সত্ত্বেও আরও এক নতুন সত্যান্বেষীকে তুলে আনা বড় চ্যালেঞ্জ নয় কি?
মৃদু হেসে ধ্রুব বললেন, ‘আমরা এটাকে কোনওদিন চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিইনি। কারণ নিজেরাই তো ওদের ভক্ত। ওদের গুণমুগ্ধ দর্শক। আমি আর শুভেন্দু একেবারেই নিজেদের মতো করে আরেকটা চরিত্র তৈরির চেষ্টা করেছি মাত্র। কোনও চ্যালেঞ্জ নেই। ওই ক্যারেক্টারগুলো তো পাহাড়ের মতো করে দাঁড়িয়ে আছে, তার সঙ্গে কোনও তুলনাই চলে না। আমরা যে নতুন কিছু করতে পেরেছি এবং দর্শক সেটাকে নিয়েছেন, সেটাই বিরাট ব্যাপার।’
[খাবারের স্বাদে মানবচরিত্রের রহস্য ফাঁস করল প্রতীমের ‘মির্চি মালিনি’]
সিক্যুয়েল যখন হচ্ছে অতএব সোনাদা, আবির, ঝিনুকের চরিত্রে যথাক্রমে আবির চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন চক্রবর্তী এবং ইশা সাহা দ্বিতীয়বারের জন্য এক্ষেত্রেও বড়পর্দায় ফেরত আসবেন। এই ট্রায়ো এবার মণিকান্তপুর ছেড়ে অন্য জায়গায় রহস্য সন্ধানে যাবে। পাশাপাশি আবির-ঝিনুকের প্রেম কতটা পরিণত হবে, সেটাও দেখার। ইতিমধ্যেই লোকেশন রেকি হয়ে গিয়েছে। স্ক্রিপ্ট লেখা শুরু হয়েছে। তবে বাকি কাস্টিং এখনও চূড়ান্ত নয়। যদিও খুব শিগগিরই হয়ে যাবে। তাই আবারও বাঙালির জানা ইতিহাস থেকে অজানা দিক খুঁজে বের করতে চলেছেন ধ্রুব এবং শুভেন্দু নিশ্চিত ভাবে বলা যায়। পুরো টিম একই থাকছে। মিউজিকে বিক্রম ঘোষ, ক্যামেরায় সৌমিক হালদার। এই মুহূর্তে পরিচালক-চিত্রনাট্যকার গল্পে কনসেনট্রেট করছেন। শুটিং শুরু হতে খুব দেরি নেই এবং পরের বছর এপ্রিল রিলিজ টার্গেট করেই কাজ এগোবে। আবারও ইতিহাস-ছোঁয়া গল্প এবং জানা যাবে অজানা দিক।
[‘মাটি’র টানে এক ফ্রেমে পাওলি-আদিল, দেখুন ছবির ট্রেলার]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.