আকাশ মিশ্র: স্ক্রিনে একটা গল্প চলছে। আর সেই গল্পের সূত্র ধরে আগে থেকেই আপনার মগজে আরেকটা গল্প। ঠিক যখন পরিচালকের ধারনার সঙ্গে আপনার ভাবনার প্লট মেলার সুযোগ ঘটে, সেই সময়ই টুইস্ট! আর তারপর যা ঘটবে, তা কিন্তু আপনি আঁচও করেননি। ভাল রহস্য গল্পের এটাই ছক। এই ছক যদি ছবির শেষ পর্যন্ত পরিচালক ধরে রাখতে পারেন, তাহলে ছবি দর্শকদের ভাল লাগবেই। পরিচালক পবন কৃপালিনির ছবি ‘গ্যাসলাইট’ (Gaslight) ঠিক এই ধরনেরই ছবি। যা শুরুটা দারুণ হয়েও, শেষের দিকে গিয়েই গণ্ডগোল পাকিয়ে দেয়।
প্রথমেই ছবির নামকরণ নিয়ে দু’এক কথা বলা যাক। সাইকোলজিতে গ্য়াসলাইট বিষয়টি বেশ গুরুতর। এর অর্থ কোনও মানুষকে এমনভাবে সাজানো এক গল্পের মধ্যে ফেলে দেওয়া, যে গল্পে সে বিশ্বাস করতে শুরু করে। এই ছবিতে সেই রকমই ন্যারেটিভকে তুলে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ ছবিতে সারা আলি খানের চরিত্রটি সাজানো ন্যারাটিভের ফাঁদে পড়ে যায়। আর তা থেকেই রহস্য়ের জন্ম।
গল্পটা একটু ছুঁয়ে নেওয়া যাক। বহু বছর পর নিজের পুরনো বাড়িতে ফেরে মিশা ওরফে সারা আলি খান। বাড়িতে তাঁকে ওয়েলকাম জানায় সৎমা রুক্মিণী ওরফে চিত্রাঙ্গদা সিং। তবে হুইল চেয়ারে। বাড়িতে এসে মিশা জানতে পারে তাঁর বাবা রতন ওরফে অভিনেতা শতফ ফিগার বিজনেস ট্রিপে গিয়েছেন। তবে দিন এগোতেই বাড়িতে অলৌকিক কাণ্ড ঘটতে থাকে। এমনকী, মিশা দেখতে পায় তাঁর বাবাকেও। হঠাৎ করে মিশা আবিষ্কার করে তাঁর বাবার মৃতদেহ। গল্প মোড় নতুন রহস্য়ের দিকে। এটুকুই থাক। কারণ, এরপর গল্প নিয়ে এক শব্দ বললেই সব টুইস্ট ফাঁস করা হবে।
অভিনয়ের দিক থেকে এই ছবিতে সারা বেশ স্বতঃস্ফূর্ত। সারার অসাধারণ অভিব্যক্তি ছবির থমথমেভাবকে ধরে রাখে। বিক্রান্ত মাসে বেশ ভাল। তবে তাঁর চরিত্রটি আরেকটু জায়গা পেতে পারত। বহুদিন পর চিত্রাঙ্গদাকে স্ক্রিনে ভাল লাগে। কিন্তু চিত্রনাট্য়ে চিত্রাঙ্গদার রুক্মিণী চরিত্র আরেকটু জায়গা পেতে পারত। অল্প পরিসরে পুলিশের চরিত্রে রাহুল দেব ভাল।
এই ছবি একেবারেই গল্প নির্ভর। ছবির শুরু বেশ আশা জায়গায়। কিন্তু দুর্বল সম্পাদনার জন্য় ছবির শেষপর্যায়টি খুব একটা জমজমাট নয়। সব মিলিয়ে গ্যাসলাইট একবার দেখার মতো ছবি। গল্প বলার ধরনে নতুনত্ব থাকায় দেখতে ভালই লাগে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.