Advertisement
Advertisement

Breaking News

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় তাসের ঘর

‘তাসের ঘর’ রিভিউ: সুখী সংসারের অন্দরে নারীর একাকীত্বের গল্প, অনবদ্য স্বস্তিকা

সিনেমা দেখার আগে চোখ বুলিয়ে নিন রিভিউয়ে।

Swastika Mukherjee's new film Tasher Ghawr review
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:September 4, 2020 7:33 pm
  • Updated:September 4, 2020 7:51 pm  

সুগৃহিনী থেকে খুনি। গল্প করার ছলে আলতো করে গলার নলিতে ছুরি বুলিয়ে যাওয়া এক মধ্যবিত্ত সংসারের সন্তানহীন ‘ট্র্যাজেডি ক্যুইন’ চরিত্রে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। হইচই-এ সদ্য মুক্তি পাওয়া তাসের ঘর’ দেখে লিখছেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ

হেঁশেলের তাকে থাকা মশলার কৌটো, ফ্রিজে রাখা ফ্রুট স্যালাড, ময়দা-বেকিং সোডা ঠাসা গরম মাফিন, রোদ্দুর গায়ে মাখা ছাদের গাছপালা আর পোশাকের আড়াল থেকে উঁকি মারা গত রাতের কালশিটে… এই নিয়েই ‘সু’গৃহিনী সুজাতা সেনগুপ্তর ‘তাসের ঘর’। সংসার বলতে অজ্ঞান। মন আছে তবু নেই! আনমোনা, নিভৃতবাসিনী প্রেয়সী। ঘ্রাণের প্রতি যার অগাধ প্রেম। ওষুধপাতি, মলম, মাছের আঁশটে গন্ধ সবেতেই নিজেকে খুঁজে পাওয়ার এক আপ্রাণ চেষ্টা সুজাতার। ‘তাসের ঘর’ (Tasher Ghawr) সিনেমার মুখ্য চরিত্র। যে ভূমিকায় অভিনয় করেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee)।

Advertisement

Tasher Ghawr

রাঁধুনী, সুখী গৃহকোণের গিন্নি সুজাতার চরিত্রটা আর পাঁচজন সাধারণ নারীর মতোই। তবে কোথাও গিয়ে রোজকার ‘তেনা’ শাড়ি, সায়া-ব্লাউজ পরনে অতি সাধারণ নারীটিও অন্য অনেকের থেকে আলাদা। বাস্তবের প্রেক্ষাপটে সংসারের হাল ঠেলে আর পাঁচজন যেটা মনে মনে ভাবে, কিন্তু কাজে করে উঠতে পারে না, তাদের মনের সেই সুপ্ত বাসনার সলতেতেই শলাকা ঠেলে দিল সুজাতা। যেন বর্ষার আলসে দুপুরের চোখ লেগে আসা ঘুমের মধ্যেকার এক স্বপ্ন। অতীব সূক্ষ্ম চারুকাজে সুজাতার ক্যারেক্টার বুনেছেন পরিচালক সুদীপ্ত রায়।

[আরও পড়ুন: সড়ক ২’ রিভিউ: গাঁজাখুরি প্লটে সিনেমার ভরাডুবি]

বেশ সুন্দরভাবে নারী জীবনের একাকীত্বের সঙ্গে বাস্তব গৃহবন্দি দশার মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন ‘তাসের ঘর’-এর পরিচালক। নিপুণ হাতে সংসার সামলানোটাও যে একটা আর্ট, লকডাউনে এই চিরন্তন সত্যটা প্রায় প্রত্যেকেরই মাথায় ঢুকে গিয়েছে। কিন্তু সংসার বলতে কি আর শুধু হেঁশেলের টুকিটাকি, ছাদের গাছে জল দেওয়া কিংবা সোফার কুশন ঠিক করা সুগৃহিনীর রোজনামচা? আজ্ঞে না! সংসার দুটো মানুষকে নিয়ে। দুটো আত্মা নিয়ে। কিন্তু তৃতীয় কোনও ব্যক্তির প্রবেশে যখন নির্লিপ্ত হয়ে যায় দুটো মন, পড়ে থাকে শুধুই রাতশয্যার বাসি অন্তর্বাস, তা আর যাই হোক, সংসার নয়! ওই ঘর আছে তবু মনের মানুষের কাছে ফেরার উপায় নেই গোছের খানিকটা। নিপুণ হাতে সৃজনশৈলী ভাবনায় তাসের ঘর তৈরির মতো অনেকটা। সুজাতার সংসারও তাই। পালঙ্ক কাপানো পৌরুষত্বের পর আর স্বামীর সোহাগ নেই। ‘তাসের ঘর’ই বটে! দমকা হাওয়ায় যা যে কোনও মুহূর্তে শেষ করে দিতে পারে।

Tasher Ghawr

মর্ডান ‘তাসের ঘর’-এর গল্পের নেপথ্যে সাহানা দত্ত। ৪৬ মিনিটের এই সিনেমার ন্যারেশন চলতি বাংলা সিনেমার প্যারালাল গল্প বলার ধরনকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। একেবারে ‘আউট অফ দ্য বক্স’ ভাবনা।

নারী জীবনের একাকীত্ব, আলসে দুপুরে হেঁশেলের তাকে থাকা মশলার কৌটোর মতো! বাইরের খা-খা করা একচিলতে রোদ্দুর এসে তাতিয়ে চলে যায়। অথচ, কী অবলাভাবে রাঁধুনির হাতের ছোঁয়ার অপেক্ষায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। সেই একাকীত্বের গল্প বেশ পারদর্শীতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন স্বস্তিকা। সুগৃহিনী থেকে হঠাৎই হয়ে উঠেছেন খুনি। কীভাবে? সেই গল্প জানতে হলে চোখ রাখতে হবে হইচই-এর (Hoichoi) পর্দায়।

[আরও পড়ুন: ‘ক্লাস অফ 83’ ফিল্ম রিভিউ: আন্ডারওয়ার্ল্ডের সব বারুদ মজুত থাকলেও আগুন জ্বালাতে ব্যর্থ ববি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement