Advertisement
Advertisement

Breaking News

Tar Galpo Review

Tar Galpo Review: নিজের জীবনকেই ক্যামেরায় ধরলেন পরিচালক, মন ভরাল সুদীপ্ত দের ‘তার গল্প’

এই ছবিতে দেখা গিয়েছে প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে।

Soumitra Chatterjee starrer Tar galpo or Her Story movie impress Audience | Sangbad Pratidin
Published by: Akash Misra
  • Posted:April 1, 2022 9:42 pm
  • Updated:April 2, 2022 1:37 pm  

নিমর্ল ধর: বাংলা সিনেমায় এমন ঘটনা সম্ভবত আগে কখনও ঘটেনি। পরিচালক সুদীপ্ত দে বছর তিন আগে “শীর্ষেন্দুর ডায়েরি” নামে একটি ছবি বানিয়েছিলেন। কিন্তু ফিল্ম সার্টিফিকেশন বোর্ড সেটিকে ছাড়পত্র দেয়নি। কমিউনিস্ট, বামপন্থী, বিপ্লব জাতীয় কিছু শব্দ ব্যবহার করায়! তিন বছর পর নতুন আর একটি ছবি বানাতে গিয়ে তিনি সেই পুরোনো ঘটনাকে দ্বিতীয় ছবিতে ব্যবহার করলেন নতুন গল্পের একটি অংশ হিসেবে। সঙ্গে জুড়ে দিলেন নিজের জীবনের আরও এক মর্মান্তিক ঘটনাও। নিজের স্ত্রীর মৃত্যু। সত্যিই সুদীপ্ত দের স্ত্রী কর্কট রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরিচালক সুদীপ্ত ‘তার গল্প’ ছবিতে জীবনের দুই গল্পকেই যেন ফুটিয়ে তুললেন।

কিঞ্চিৎ দীর্ঘ, কিন্তু জীবনের কষ্টকর, দুঃসহ অভিজ্ঞতা, মারণ রোগের ব্যয়বহুল চিকিৎসা,মানসিক যন্ত্রণা এবং একই সঙ্গে নতুন ছবি তৈরির আর্থিক সংকট, শুটিংয়ের নানান ঝামেলা – সব কিছুকেই সামলে এই ছবি তৈরির ইতিহাসকে ছবিতে বুনে দিয়েছেন সুদীপ্ত। ছবির শেষে এসেছে আবার সেন্সর বোর্ডের সঙ্গে সংঘাত। প্রথমে, কিছু অংশ কাটতে বলা। তাতে রাজি না হওয়ায় রিভিসিন কমিটিতে ছবি পাঠানো। সেখানেও সমস্যার সমাধান না হলে দিল্লিতে ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখি হয়ে সুহৃদ দাদার (জগন্নাথ বসু) যুক্তিপূর্ণ তর্কের পর ছবির মুক্তি পাওয়া ছাড় পত্র পাওয়া দিয়েই ছবির সমাপ্তি। কিন্তু ততক্ষণে ছবির নায়িকা, পরিচালকের স্ত্রী প্রয়াত। এক ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ছবির মুক্তির চেষ্টা করেন। এবং বাস্তবের ঘটনাও তাই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: পর্দায় শেষবার ঋষি কাপুর, ‘শমার্জি নমকিন’ ছবির আসল প্রাপ্তি অভিনয়ই ]

সুদীপ্ত নিজের জীবনে বয়ে যাওয়া ঝড়কে সম্বল করেই চিত্রনাট্যটি লিখেছেন। ফলে ছবিটা কিছুটা সাজানো হয়েছে তথ্যচিত্রের আকারে। জীবন ও ছবি একাকার হয়েছে। তবে ছবিটি সাধারন দর্শকের কাছে এক মানবিক দলিল মনে হতে পারে। এখানেই ছবির অভিনবত্ব। কিন্তু বিনোদনের উদ্দেশ্যে যাওয়া দর্শক কিঞ্চিৎ বিভ্রান্ত হবেন। তবে ছবি তৈরির নেপথ্যে ঘটে চলা ঘটনা জানা থাকলে এই ছবি অন্য এক উপলব্ধি তৈরি করবে দর্শকের মনে। সুদীপ্ত সহজ সরল পথে এগিয়ে নিয়েছেন গল্পকে। রোগীর যন্ত্রনা নিয়েও তেমন অতিনাটকীয় মুহূর্ত তৈরি করেননি। সবটাই ঘটে খুবই সাধাসিধে ভাবে। যদি দর্শকরা পরিচালকের আন্তরিকতার মর্যাদা দেন, তাহলে এই ছবি ভালো লাগার যথেষ্ট কারণ আছে।

এই ছবিতে নামী শিল্পী বলতে রয়েছেন প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। নায়িকার বৃদ্ধ বাবার চরিত্রে তিনি সারাক্ষণ দুঃখ, বিষাদের সুর তুলে গিয়েছেন নিজের বেহালার সুরে। প্রয়াত রমেন রায় চৌধুরী, বিমল বন্দ্যোপাধ্যায়, জগন্নাথ গুহরা রয়েছেন আরো তিনটি চরিত্রে। টালিগঞ্জের প্রিয়া মুখ জগন্নাথ কিন্তু বেশ জমিয়ে দিয়েছেন। প্রধান দুটি চরিত্র পরিচালক সুদীপ্ত নিজেই অভিনয় করেছেন এবং অসুস্থ স্ত্রীর ভূমিকায় সোমেন্দু  দে। দু’জনেই অনেকাংশে নতুন, তাই ক্যামেরার সামনে তেমন স্বচ্ছন্দ নন সেটা স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে। কিন্তু ঘটনার জোরে গল্প এগিয়ে যায়। আসলে নিজের জীবনের নানা সংকট নিয়ে এভাবে ছবি বানানোর সাহস বা এর আগে ক’জন পরিচালক দেখিয়েছেন!

[আরও পড়ুন: সত্যজিতের ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’র সঙ্গে ‘আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা’র মিল কতটা? পড়ুন রিভিউ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement