Advertisement
Advertisement

Breaking News

টানটান উত্তেজনা আর রহস্যে ভরা ‘লালবাজার’-এর অন্দরমহল, অনবদ্য অভিনয় কৌশিকের

শেষ এপিসোড পর্যন্ত সাসপেন্স জিইয়ে রেখেছেন পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল।

Sayantan Ghosal's web series Lalbazar portray the life of police
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:June 20, 2020 5:09 pm
  • Updated:June 20, 2020 6:53 pm  

বিশাখা পাল: লালবাজার। কলকাতা পুলিশের হেডকোয়ার্টার। রোজ এখানে কত কিছুই না ঘটে। রোজ নতুন ক্রাইম, নতুন কোনও ঘটনা বা পুরনো ঘটনার নতুন মোড়। এইসব অপরাধ নিয়ে নিত্য নাড়াঘাঁটা করতে হয় এখানকার পুলিশকে। অপরাধী কখনও নতুন কোনও চুনোপুঁটি, কখনও আবার পুরনো রাঘব বোয়াল। এই লালবাজারকে কেন্দ্র করেই ক্রাইম থ্রিলার বানিয়েছেন পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল। তবে ছবি নয়, তিনি বেছে নিয়েছেন ওয়েব সিরিজকে। ১৯ জুন জি-ফাইভে মুক্তি পেল তাঁর পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘লালবাজার’।

রহস্যের খাসমহল

Advertisement

লালবাজারে কর্মরত কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার সুরঞ্জন সেনের অতীতে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল। তাঁর খুব কাছের এক মানুষকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারে দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনা তাড়া করে বেড়ায় সুরঞ্জনকে। কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার প্রধান সে। জাঁদরেল অফিসার হলেও সে আসলে খুব একা। কতটা তার অতীতের কারণেই। ওই দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তলে তলে সে সন্ধান চালায়। লালবাজারে তার তিন সহকর্মীকে নিয়ে অনেক বেয়াড়া রকম মামলার সমাধান করে সুরঞ্জন। এর মধ্যে শহরের একটি যৌনপল্লিতে এক যৌনকর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় থানা ওসি সাবির আহমেদ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। কিন্তু তদন্ত বন্ধ করার জন্য তার কাছে আসতে থাকে হুমকি ফোন। অপহৃত হয় তার মেয়ে। এক যৌনকর্মীর মৃত্যু নিয়ে এত জলঘোলা কেন? প্রশ্ন উঠতে থাকে সাবিরের মনে। তদন্ত করতে গিয়েই সাবির জানতে পারে গ্যাংস্টার গাজির কথা। মৃত যৌনকর্মীর সঙ্গে গাজির যোগসূত্র খুঁজে পায় সাবির। এদিকে সরাসরি না হলেও এই মামলার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে সুরঞ্জনের জীবনও। কীভাবে? তা উদঘাটিত হবে একেবারে শেষ এপিসোডে।

lalbazar 1

পরিচালকের সাফল্য

‘লালবাজার’ ওয়েব সিরিজে একটিমাত্র ঘটনার উপর ভিত্তি করে গল্প সাজাননি পরিচালক। আর এখানেই তিনি মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। লালবাজারের পুলিশ কখনও একটা মামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পারে না। একাধিক ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় তাদের। ওয়েব সিরিজের সঙ্গে নামকরণের সঙ্গে এখানেই সাযুজ্য বজায় রেখেছেন তিনি। যদিও প্রথম কয়েকটি এপিসোড জগাখিচুড়ি হয়ে যেতে পারে দর্শকের কাছে। কিন্তু এই একাধিক গল্পের কারণেই প্রথম এপিসোডগুলি কোথাও টেনে বাড়ানো হয়েছে বলে মনে হয়নি। একটি ঘটনা নিয়ে এগোলে হয়তো দর্শকের বুঝতে সুবিধা হত, কিন্তু লালবাজারের পুলিশকর্তাদের চরিত্রাঙ্কন সম্ভব হত না। মূলত পুলিশের নানা চেহারার কথা তুলে ধরেছে ‘লালবাজার’। তাদের ব্যক্তিগত জীবন, পেশাগত জীবন, ভয়, প্রেম, আবেগ সবই উঠে এসেছে ওয়েব সিরিজে। পরিচালকের আরও একটি দূরদর্শিতার পরিচয় হল হিন্দিতে ওয়েব সিরিজটি বানানো। বাঙালি দর্শকের মধ্যে আবদ্ধ না থেকে ‘লালবাজার’ যাতে গোটা ভারতে ছড়িয়ে পড়তে পারে, তা জন্য পরিচালকের এই পদক্ষেপ প্রশংসার যোগ্য। 

lalbazar 2

অভিনয়ের পোস্টমর্টেম

সুরঞ্জনের চরিত্রে অদ্বিতীয় কৌশিক সেন। এমনিতেই তিনি জাঁদরেল অভিনেতা। তাই রাফ অ্যান্ড টাফ, একাকী, অনুভূতিপূর্ণ, প্রেমিক এক পুলিশ অফিসারের চরিত্র পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে তাঁর খুব একটা অসুবিধা হয়নি। সিরিজের সেকেন্ড প্রোটাগনিস্ট গৌরব চক্রবর্তী যথাযথ। আর এক পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় সুব্রত দত্ত নিজের অভিনয়ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন। সব্যসাচী চক্রবর্তীর তেমন কিছু করার ছিল না। একই কথা সাংবাদিক হৃর্ষিতা ভাটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সৌরসেনী মৈত্র, অনির্বাণ চক্রবর্তী, দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, বিদীপ্তা চক্রবর্তী যে যার ভূমিকায় ভাল অভিনয় করেছেন। তবে গোটা ওয়েব সিরিজে মাঝে মধ্যে কানে লাগে উচ্চারণের জড়তা। সিরিজের প্রত্যেক অভিনেতা অভিনেত্রীই বাঙালি। অথচ সিরিজটি হিন্দিতে করা। ফলে অনেকেরই জিভের জড়তা সম্পূর্ণ কাটেনি। তবে ওটুকু বাদ দিলে ক্রাইম থ্রিলার হিসেবে সফল ‘লালবাজার’। উইকএন্ডে দেখে ফেলতেই পারেন ওয়েব সিরিজটি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement