সুলয়া সিংহ: ১৯৯৫-এর পর পাক্কা ২৫টা বছর কেটে গিয়েছে। আর এই দীর্ঘ সময়ে বহু কিছু বদলে গিয়েছে। বিজ্ঞান থেকে রাজনীতি, ফ্যাশন থেকে ফুড। আর সর্বোপরি বদলেছে মানুষের চিন্তাশক্তি। কিন্তু ভাবলেও অবাক লাগে ডেভিড ধাওয়ানের ক্ষেত্রে এসব কিছুই প্রযোজ্য নয়। এত বছর পরও বড়দিনে সেই একই গল্প উপহার দিলেন তিনি। শুধু খানিক বদলে গেল চরিত্রগুলির মুখ। ২০২০-তে দাঁড়িয়ে এমন মাথামুন্ডুহীন, উদ্ভট একটি সিনেমা দর্শকরা কেন দেখবে বলতে পারেন? ১৩৪টা মিনিট রীতিমতো নষ্ট কেন করবে?
হাস্যরসে ভরা অনেক মজাদার ছবি দর্শককে অতীতে উপহার দিয়েছেন ডেভিড ধাওয়ান। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তো সিনেমার প্রেসেন্টেশনের ধরনেও আমূল পরিবর্তন এসেছে। সেখানে একটা বস্তাপচা গল্পের গায়ে নতুন করে লিপস্টিক লাগিয়ে আর আধুনিক পোশাক পরিয়ে নামিয়ে দিলে কীভাবে চলবে? হাসির ছবি হিসেবে কেউ যদি বরুণ-সারার কাণ্ডকারখানা দেখতে বসেন, তাহলে হাসি তো দূর, এতটা সময় নষ্ট হওয়ার জন্য শেষমেশ মেজাজই হারাবেন তিনি। গল্পে নতুনত্বের ছিঁটে ফোঁটা তো নেই-ই, বরং এক-একটা দৃশ্য দেখে দেওয়ালে মাথা ঠুঁকতে ইচ্ছা করে। বিশেষ করে চলন্ত ট্রেনের সামনে থেকে শিশুকে বাঁচানোর দৃশ্যটি। কেন, মানে কেন?
ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এখন হাজারো ভাল কনটেন্ট। একে অপরকে পাল্লা দিয়ে চলেছে সারাক্ষণ। সেখানে বরুণ ধাওয়ানের (Varun Dhawan) ওভার অ্যাক্টিং দেখার কারণ তো খুঁজে পেলাম না। একজন স্টেশনের কুলি বড়লোকের বাড়ির ছেলের বেশ ধরে নায়িকাকে ‘পটিয়ে’ বিয়ে করে ফেলছে। আর মেয়ের বাবা সব বুঝেও বুঝতে পারছে না। কখনও শ্বশুরমশাইকে যজম ভাই হয়ে ধন্দে ফেলে দিচ্ছে জামাই তো কখনও মেয়ে সেজে শ্বশুরের সঙ্গেই ফ্লার্ট করছে সে। ২৫ বছর আগে দেখে ফেলা দৃশ্যগুলো ফিরলেও মুখে হাসি ফুটল না।
বরুণ ধাওয়ানের কথা যত কম বলা যায়, ভাল। এই ধরনের ছবি করে আয়ুষ্মান খুরানা, রাজকুমার রাওদের সঙ্গে তিনি কতদূর পাল্লা দিতে পারবেন, কে জানে। সারা আলি খান অভিনয়টা জানেন। তাই মনে হয় তাঁর এবার বাছাই করে ছবি করার সময় এসেছে। পরেশ রাওয়াল, জাভেদ জাফরিরা ডুবন্ত নৌকাকে কোনওক্রমে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু গল্পের গরু গাছে চড়লে তাঁরাই বা আর কী করবেন। ছবির সঙ্গে গানের সিকোয়েন্সের দূর-দূরান্তের কোনও সম্পর্ক নেই।
ছবির ভাল দিক? উমম….। নাহ, মাথায় আসছে না। তাই একটাই পরামর্শ। বছর শেষে জীবনের মূল্যবান সময় বাঁচাতে চাইলে ‘কুলি নম্বর ওয়ান’ (Coolie no. 1) দেখার প্রয়োজন নেই। আর নেহাতই টাইমপাস করার ইচ্ছে হলে আমাজন প্রাইম অন করে ফেলুন। ভাগ্য ভাল এর জন্য কষ্ট করে সিনেমা হল পর্যন্ত যেতে হবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.