চারুবাক: সত্যি বলতে কি, ‘উড়ান’ ছবি দেখতে যাওয়ার কারণ ছিল একটাই। চিত্রনাট্যকার পদ্মনাভ দাশগুপ্ত। এই মুহূর্তের বাংলা ছবির জগতে যিনি একজন শিক্ষিত, রুচিবান, সামাজ সচেতন এবং ফিল্ম জানা ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তাঁর লেখা একাধিক চিত্রনাট্য পরিচালক-প্রযোজককে উতরে দিয়েছে। শুধু বক্স অফিসের টালমাটাল বৈতরণী নয়। সিনেমা-সাহিত্যের যোগাযোগ ঘটানোতেও।
কিন্তু ‘উড়ান’ দেখতে বসে বিস্মিত হতে হয়। দু’ঘণ্টার ছবিতে একটা দৃশ্যও মনে রাখার মতো লাগল না। স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল উপরোধে ঢোঁক গিলেছেন। কখনওসখনও ফরমায়েসি চিত্রনাট্য লিখতে হয় বইকি। কিন্তু ‘উড়ান’-এর টেক-অফ পয়েন্ট কোনটা, সত্যিই কি উড়তে পারল ছবি বা গল্প? উত্তর স্পষ্ট। না। ত্রিদিব রমন নামে পরিচালকমশাই চিত্রনাট্যের ইঞ্জিনে এতটুকু আগুন জ্বালাতে পারেননি। ফলে তাঁর উড়ান ভারতীয় মহাকাশযানের মতো আকাশের সীমা পেরোনোর আগেই হাউইবাজির মতো পপাত ধরণীতলে উইথ লটস অফ দুঃখ ও অর্থের বোঝা।
মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিল ‘উড়ান’ কি এই রাজ্যের একটা গ্রামে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল সরবরাহের জন্য সুলভ নামে কোম্পানির কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পেয়েছে? একটি পাঁচতারা হোটেলের প্রোমোশনের জন্যই কি ‘উড়ান’? নাকি স্রেফ রমিত (সাহেব) পৌলমীর (শ্রাবন্তী) প্রেম নিয়ে এক প্যাঁচালো গল্প? চিত্রনাট্যে কোনওটাই সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছয়নি। পরিচালক বেচারির হাতে প্রায় প্রাণহীন অবাস্তব চিত্রনাট্য মৃত্যুর দরজায় পৌঁছে গিয়েছে। গান-নাচ-হোটেল-সিঙ্গার কোনওটাই বাদ নেই। এমনকী আরিফ (সুব্রত দত্ত) নামের এক রঙিন পোশাকি বাউলের মুখে নচিকেতার গানও বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুরকার জয় সরকারের অবস্থা পদ্মনাভ’র চেয়ে কম কৌতুকপূর্ণ নয়। এমনকী প্রধান দুই শিল্পী শ্রাবন্তী ও সাহেব সম্ভবত ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থায়। সুব্রত দত্তর তো অবস্থা আরও করুণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.