ছবি: প্রতীকী
বিশাখা পাল: দিনটা ভালই বেছেছিলেন ইমতিয়াজ আলি। ভ্যালেন্টাইনস ডে’র দিনই মুক্তি পায় ‘লাভ আজ কাল’। স্টারকাস্টও ছিল জমজমাট। কার্তিক আরিয়ান আর সারা আলি খানের প্রেমের খবর এমনিই বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। সেই কেমিস্ট্রিটাই কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন ইমতিয়াজ। কিন্তু যদি আপনি ২০০৯ সালের ‘লাই আজ কাল’ দেখে থাকেন, তবে এই ছবি আপনার না দেখাই ভাল।
চিত্রনাট্য, গান সর্বত্রই পুরনো ‘লাভ আজ কাল’-এর ছোঁয়া। ঋষি কাপুর আর সইফ আলি খানের গল্পটাই যেন ২০২০ সালে বসে পুনর্নির্মাণ করেছেন সারা আলি খান আর রণদীপ হুডা। সেখানে যেমন নিজের যৌবনের গল্প সইফকে শুনিয়েছিলেন ঋষি, এখানেও সারাকে রণদীপ নিজের পুরনো দিনের গল্প শুনিয়েছেন। ঋষি কাপুরের সঙ্গে রণদীপ হুডার গল্পের কোনও ফারাক নেই। প্রথমাংশ তো হুবহু এক। দু’জনেই প্রেমের জন্য ঘর ছেড়েছিলেন। তবে তারপর ছোট্ট এক টুইস্ট আনতে চেয়েছিলেন পরিচালক। ২০০৯-এর ছবিতে ঋষির প্রেমকাহিনির হ্যাপি এন্ডিং হয়েছিল। কিন্তু রণদীপের জীবনে এক নয়, একাধিক মেয়েসঙ্গের কথা বলেছেন পরিচালক। অবশ্য সব শেষে পুরনো প্রেমের কাছে ফিরে যাওয়ার কথাও আছে। কিন্তু ততদিনে পুরনো প্রেমিকা অন্যের ঘরনি। রণদীপের প্রেমিকার চরিত্রে নবাগতা আরুষি যেন বড় বেশিই আড়ষ্ঠ। তবে উভয়ের একসঙ্গে কোনও দৃশ্য নেই। আগের ছবিতে সইফ যেমন যুবক ঋষি কাপুরের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, এখানেও তেমনই ২০ বছর আগের রণদীপের চরিত্রে অভিনয় করেছেন কার্তিক। এখানেও নতুন কিছু দর্শকদের দেখাতে পারেননি ইমতিয়াজ।
সইফ-দীপিকা-কার্তিক-সারা সবাই যেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এক। ২০০৯ সালের ‘লাভ আজ কাল’ আর ২০২০’র ‘লাভ আজ কাল’ যেন থোড় বড়ি খাড়া আর খাড়া বড়ি থোড়। কিন্তু দীপিকা আর সইফ সেই সময় যে অভিনয় প্রতিভার পরিচয় দিয়েছিলেন তার ধারকাছ দিয়েও ঘেঁষতে পারলেন না কার্তিক বা সারা। বিশেষ করে কার্তিকের সুযোগ ছিল প্রচুর। কিন্তু তার এক বিন্দুও কাজে লাগাতে পারলেন না অভিনেতা। বরং তাঁর অভিনয়ের চেয়ে মেকআপ নজর কেড়েছে বেশি। দু’রকম চেহারায় তাঁকে অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছিল চিত্রনাট্য। কিন্তু তিনি ডাহা ফেল। অন্যদিকে সারার কেরিয়ারে এই ছবিটি নিচের দিকে থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। ‘হাইওয়ে’ ছবিটি যেমন আলিয়ার কেরিয়ারে টার্নিং পয়েন্ট ছিল, ‘লাভ আজ কাল’ সারাকে সেই সুযোগ দেবে না। রণদীপ হুডার মতো অভিনেতাকে পেয়েও সদ্ব্যবহার করতে পারলেন না ইমতিয়াজ। তাঁর মতো একজন ভার্সেটাইল অ্যাক্টর ছবিতে একেবারেই ম্রিয়মাণ।
ছবির চিত্রনাট্য নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। বরং চিত্রনাট্য নতুন নয় কেন, সেই প্রশ্নটাই উঠতে পারে। যদি রিমেকই করতে হত, তবে আগে থেকেই কেন তা জানালেন না পরিচালক? তবে হিমালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে খুব ভালভাবে তুলে ধরেছেন ইমতিয়াজ। তেমনই প্রশংসাযোগ্য সিনেমাটোগ্রাফির কাজ। কিন্তু চিত্রনাট্য যদি ঠিক না হয় তবে সবই যে মাঠে মারা যায়। তাই আপনি যদি ইমতিয়াজ আলির ছবির অনুরাগী হয়ে থাকেন, তবে এই ছবি দেখতে না যাওয়াই ভাল। ‘যব হ্যারি মেট সেজল’ দেখে যদি আপনি হতাশ হন, তবে বলতেই হবে ‘লাভ আজ কাল’ আপনাকে হতাশার অন্ধকারে ডুবিয়ে দেবে। সিনেমাহল থেকে বেরিয়ে মনে হতেই পারে ২০০৯ সালের ছবিটা আর একবার দেখে নিলে হত না?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.