Advertisement
Advertisement
সাঁঝবাতি

অভিনয়ের আলোতেই ‘সাঁঝবাতি’ জ্বালালেন দেব-সৌমিত্র

অল্প সময়ের উপস্থিতিতে নজর কেড়েছেন সোহিনী।

Read the review of Dev-Soumitra's movie Sanjhbati
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:December 21, 2019 12:23 pm
  • Updated:December 21, 2019 4:33 pm  

নির্মল ধর: বাংলা সিনেমায় পয়লা ছবিতেই সাফল্যের জুটি শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়-লীনা গঙ্গোপাধ্যায় যে দর্শক মনস্কতার পরিচয় রেখেছিলেন, তাঁদের দ্বিতীয় ছবি ‘সাঁঝবাতি’তেও সেই ধারা অব্যাহত। সংখ্যাগুরু বাঙালি দর্শকের কী ভাল লাগতে পারে সেটা বুঝেই গল্প সাজিয়েছেন লীনা। ছোটপর্দায় এতদিন কাজ করার সুবাদে আমদর্শকের নাড়িটা তিনি বোঝেন। সুতরাং ভাল আর মন্দের মাঝে কোনও ধূসর জোন নেই।

বাবা-মা তাঁদের জীবনের সেরা সময়টা ছেলেময়েদের ‘সফল’ (মানুষ নয়) করে তোলার কাজে খরচ করেন। বিনিময়ে প্রবাসী সন্তানদের কাছ থেকে অবজ্ঞা, অবহেলা, অসম্মানই পান। এটা যেন স্বতঃসিদ্ধ। সৌমিত্র এবং লিলির সন্তানরা সেই রকমই। কলকাতার বাড়িতে বিপত্নীক-বিধবা দু’জনকে দেখাশোনার দায় ‘কাজের লোক’ ফুলি (পাওলি) আর চাঁদুর (দেব) উপর। তাঁরা দু’জনেই অতি সৎ, স্নেহপ্রবণ, মালকিন অন্তপ্রাণ। লিলির প্রবাসী সন্তান সুদীপ চান বাড়িটা বিক্রি করতে। সৌমিত্র’র ছেলেমেয়ে দু’জনেরই মত বৃদ্ধ বাবাকে ‘বুড়োদের জেলে’ পাঠানোয়। এরই মধ্যে উপকাহিনি হিসেবে টেলি-সিরিয়ালের ঘরানায় রাখা হয়েছে চাঁদুর অতীত প্রেমিকা সায়নীকে। আর লিলির প্রয়াত সন্তানের উকিল প্রেমিকা মুন্নিদি অর্থাৎ সোহিনীকে। এঁরা সবাই গুডি-গুডি মার্কা ভাল মানুষ। আপাত মুখরা ফুলির সঙ্গে নীরব দেবের বিনিসুতোর সম্পর্ক গড়ে ওঠার ব্যাপারটা মিঠে-কড়া কায়দায় চিত্রনাট্যে বুনে দেওয়া হয়েছে। স্টাইল- সেই ষাট-সত্তরের দশকের বাংলা সিনেমার। শেষ পর্যন্ত গল্পের পরিণতি কী ঘটবে দর্শক নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারবেন, হয়েছেও তাই। কিন্তু লিলির তৈরি দলিল ছিঁড়ে ফেলার পর ওই বাড়ি কি সত্যিই প্রোমোটারের দালাল বিশুর (সপ্তর্ষি) হাতে গেল, নাকি অন্য কিছু হল?

Advertisement

sanjhbati

[ আরও পড়ুন: দাগ কাটল না গল্প, অতিরিক্ত মশলাতেই স্বাদ নষ্ট সলমনের ‘দাবাং থ্রি’র ]

তা যাক গে। দর্শক তো খুশি। তাঁরা হল থেকে বেরোচ্ছেন দেব-পাওলির বিয়ে আর সৌমিত্রর বাড়িতে তাঁদের নতুন ‘সাঁঝবাতি’ জ্বালানোর সুখানুভূতি নিয়ে। পুরো ছবির কাঠামো যেমন গোলগাল-ইচ্ছাপূরক, ছবির ন্যারেশন-গতি-নাটকের চেনা বাঁক-ঘটনার চর্বিতচর্বনও তেমনই ফরমুলায় বাঁধা। তবুও এই ছবি শুরু দর্শকের ভাল লাগতে পারে চারজন শিল্পীর সমন্বিত অভিনয়ের কোরাসে। সৌমিত্র তো তুলনাহীন। তাঁর কয়েকটি হাসির মুহূর্ত, হাতের সঞ্চালন, দাঁড়ানোর ভঙ্গি এবং সংলাপ বলার অনুকরণীয় স্টাইলে ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো। লিলি চক্রবর্তীও সঙ্গত করেছেন সমানে। অবাক করেছেন বটে দেব। নাটুকে অভিনয়ের মধ্যেও দেব অনেক সংযত। স্বাভাবিক। কিছু নীরব মুহূর্তেও তিনি যেন অপরিচিত এক দেব। তাঁর এই ট্রান্সফর্মেশন সত্যিই প্রশংসার। পাওলি দামের ফুলি বেশ টগবগে, উচ্ছ্বল, কখনও প্রগলভ আবার প্রতিবাদে সোচ্চারও। তিনি স্পন্টেনিয়াসলি অভিনয়টা করেছেন। স্বল্প সময় পেয়েও সোহিনী নজর কেড়েছেন। শীর্ষ রায়ের ক্যামেরা কাজ পুরো ছবির ‘ফুলটুস’ মুড মেনেই ফ্ল্যাট ভাঙচুর নেই। অনুপম রায়ের সুরে নিজেরই গাওয়া ‘মন কারও ভাল নেই’ গানটি কানে ভাল লাগে কিন্তু ছবির সঙ্গে মিশে যায় না। তবে পুরো ছবিটাই তো দর্শকের খুশির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। আর কী চাই!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement