সুপর্ণা মজুমদার: সলমন, সলমন আর সলমন। ‘রাধে’ (Radhe) সিনেমার পোস্টারের নিতে ছোট ছোট হরফে লেখা ‘ইওর মোস্ট ওয়ান্টেড ভাই’। হ্যাঁ, ভাইজানের মহিমাতেই পরিপূর্ণ এই ছবি। যাঁরা সলমন খানের (Salman Khan) ভক্ত, তাঁদের অবশ্যই ভাল লাগবে। কারণ নিজের ইদ (Eid 2021) স্পেশ্যাল এই ছবিতে এক্সপেরিমেন্টের ধারকাছ দিয়েও যাননি সলমন থান। নিজের ‘ওয়ান্টেড’ ভাবমূর্তিই ধরে রেখেছেন তিনি। ছবি দেখে যা মনে হল পরিচালক প্রভু দেবার (Prabhu Deva) অ্যাকশন এবং কাট বলা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। কারণ সলমন খানের মহিমাই তাঁর সিনেমা এক এবং অদ্বিতীয় অবলম্বন। বাকি চরিত্ররা কেবল আউট অফ ফোকাসে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন।
করোনা (Corona Virus) পরিস্থিতিতে হাইব্রিড রিলিজের পথে হেঁটেছে ‘রাধে’ টিম। দেশের বাইরের যে সমস্ত স্থানে কোভিড (COVID-19) পরিস্থিতি একটু ঠিকঠাক, সেখানে সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। তবে ভারতবর্ষের প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে Zee 5 এবং Zee Plex প্ল্যাটফর্মই ভরসা। জি প্লেক্সে আবার আলাদা পেমেন্ট দিয়ে ছবিতে দেখতে পাবেন। রেকর্ড দর্শক ইতিমধ্যেই ওয়েব প্ল্যাটফর্মটি পেয়ে গিয়েছে। আর তার জন্য সলমন খানের ক্যারিশমাই দায়ী। সুশান্ত সিং রাজপুতের (Sushant Singh Rajput) মৃত্যুর পর বলিউডের মাদক যোগ নিয়ে বিস্তর চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই বিষয়টিকেই ‘রাধে’র চিত্রনাট্যে তুলে ধরা হয়েছে। অবশ্য এ ছবিটি কোরিয়ান ছবি ‘দ্য আউটলস’-এর অফিশিয়াল রিমেক। তবে সুমিত নামের চরিত্রের মুখে স্পেস সাইন্টিস্ট হওয়ার ইচ্ছের কথা শুনলে সুশান্তের কথা একবার মনে পড়বে। ‘দ্য আউটলস’-এর কিছু দৃশ্য অবিকল একইরকম রয়েছে ‘রাধে’তে। যেমন হেলমেট পরিয়ে ধৃতকে মারার দৃশ্যটি।
এবার একটু গল্পে আসা যাক। দিল্লি থেকে মুম্বই এসে মাদকের ব্যবসা ফাঁদে রাণা (রণদীপ হুডা) এবং তাঁর সঙ্গীরা। মানুষ মারতে তাদের হাত একটুও কাঁপে না। পড়ুয়াদের মাদকের নেশা আচ্ছন্ন করতেও দ্বিধা বোধ করে না। বিষেই বিষক্ষয় হয়। তাই এদের রুখতে পারে শুধমাত্র একজন পুলিশ অফিসার। কে বলুন তো? হ্যাঁ, অবশ্যই রাধে। অতএব বাকি দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের পালনের কথা নিশ্চয়ই আর বলে দিতে হবে না। সেটি নিজ খরচে দেখে নিতে পারেন। তবে হ্যাঁ, মাথায় যুক্তির ভাবনা রেখে এ ছবি একেবারেই দেখতে বসবেন না তাহলে সুপারম্যানের মতো সলমন খানের বহুতলের কাঁচ ভেঙে এন্ট্রির দৃশ্যটি উপভোগ করতে পারবেন না। কিংবা হেলিকপ্টার ক্র্যাশ করার পরই অক্ষত সলমন খানের বিষয়টিতেও আনন্দে আপ্লুত হতে পারবেন না।
এবার বাকি চরিত্রদের কথায় আসা যাক। ছবিতে সলমন খানের বিপরীতে দিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিশা পাটানি (Disha Patani)। নিজের জিম পারফেক্ট শরীর এবং হাসি প্রদর্শন করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না তাঁর। সাজিদ এবং প্রয়াত ওয়াজিদের সুরারোপিত গানগুলি সিনেমা না থাকলেও হতো। দিয়ার দাদা এবং সলমনের সিনিয়রের চরিত্রে অভিনয় করেছেন জ্যাকি শ্রফ (Jackie Shroff)। এত বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন তারকা শুধুমাত্র কমেডিয়ান হয়ে রয়ে গিয়েছেন। যদিও সেটিও ঠিক জমে ওঠেনি। দিশার পোশাক পরে নাচার দৃশ্যটি আমার অন্তত দেখতে বেশ কষ্টই হল। রণদীপ হুডা (Randeep Hooda) ঠিক ‘দাবাং’ সিরিজের ছেদি সিং কিংবা বাচ্চা সিংয়ের মতো ভিলেন ফিগার হয়ে ওঠার চেষ্টা করেননি, তিনি নিছক ড্রাগ ডিলার হিসেবেই থেকে গিয়েছেন। হ্যাঁ, অ্যাকশন ছবিতে ভালই করেছেন সলমন, সিক্স প্যাক অ্যাবও দেখিয়েছেন নায়ক। নিজের বিইং হিউম্যান সাইকেলের প্রচার যেমন করেছেন, তেমনই চেনা সংলাপ বলে ‘কমিটমেন্ট’ রেখেছেন। মোটের উপর নিজের ভক্তদের কথা মাথায় রেখেই এ সিনেমা তিনি তৈরি করেছেন। তাই সেই মানসিকতা নিয়েই দেখা ভাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.