Advertisement
Advertisement
Rabindranath Ekhane Kokhono Khete Asenni Review

Rabindranath Ekhane Kokhono Khete Asenni Review: কেমন হল সৃজিতের দ্বিতীয় ওয়েব সিরিজ?

এই সিরিজ থেকেই এপার বাংলায় পা রাখলেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন।

Rabindranath Ekhane Kokhono Khete Asenni Review: Srijit Mukherji new series on hoichoi fail to impress audience | Sangbad Pratidin
Published by: Akash Misra
  • Posted:August 13, 2021 1:59 pm
  • Updated:August 14, 2021 10:45 am  

আকাশ মিশ্র: ‘কোনও প্রমাণ ছাড়া আপনি কি শুধু অনুমানের ভিত্তিতে ভদ্রমহিলাদের ছেলেধরা উপাধিতে ভূষিত করেন?’ মুসকান জুভেরি বলে উঠল নিরুপম চন্দকে। হালকা আলো, হাতে কফির কাপ। বাহারি সোফায় বসে রয়েছেন সৃজিতের নতুন ওয়েব সিরিজ ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’-র রহস্যময়ী চরিত্র বা বলা ভাল কেন্দ্রীয় চরিত্র মুসকান জুবেরি ওরফে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন (Ajmeri Hok Badhan)। আর নিরুপম চন্দ হলেন রাহুল বসু (Rahul Basu)। তাঁদের কথোপকথন থেকে নেওয়া এটি একটা অংশমাত্র। থুড়ি পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের কাছে অবশ্য এটা ‘ইন্টারোগেশন’। আর বাদ বাকিটা যা দাঁড়াল…

মুসকান জমিদার বাড়িতে বড্ড একাকীত্ব অনুভব করে। সুযোগ পেলেই রবিঠাকুরের গান গেয়ে ওঠে। এ ঘর, ও ঘর ঘুরে বেড়ায়। সিঁড়ি দিয়ে ওঠে, নামে। ল্যাবোরেটরি বা রান্নাঘর যেটাই হোক, সেখানেই রান্না করে। কিন্তু সব সময়ই মুসকানের কণ্ঠে রবিঠাকুরের গান। কখনও তা দৃশ্যের সঙ্গে মিলিয়ে কখনও আবার জাস্ট এমনিই! মুসকানের একটা রেস্তরাঁ রয়েছে। যার খাবারের নামডাক চারিদিকে। দূর দূর থেকে এখানে খেতে আসেন মানুষ। এই রেস্তরাঁর স্পেশাল মেনুটি নিজে হাতেই বানায় মুসকান। তার স্বাদ ভোলার মতো নয়। সব মিলিয়ে মুসকান ও তার রেস্তরাঁর অন্দর থেকেই রহস্যের জন্ম! যেখানে রবীন্দ্রনাথ কখনও খেতে আসেননি!

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘Dial 100’ Film Review: পুলিশের চরিত্রে এবার মন জয় করতে পারলেন Manoj Bajpayee?]

পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের (Srijit Mukherji) দ্বিতীয় ওয়েব সিরিজ ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’ (Rabindranath Ekhane Kakhono Khete Asenni)-র ট্রেলার দেখে বোঝাই গিয়েছিল, সৃজিতের এই সিরিজ একেবারে রহস্যঘেরা হবে।  একদিকে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। আরেক দিকে মোটামুটি জনপ্রিয় এই উপন্যাস। তার উপর সিরিজে বাঘা বাঘা সব অভিনেতারা। স্বাভাবিকভাবেই এই সিরিজ নিয়ে কৌতুহল তো ছিলই। তবে সেই কৌতুহলের পরিণতি যে এরকমটা ঘটবে, তা ভাবা যায়নি। অন্তত, ট্রেলার দেখে তো বড্ড আশা জন্মেছিল। সে যাই হোক!

রহস্য মোড়া সিরিজ যখন, তখন এই সিরিজের পুরো গল্প বলে দেওয়া একেবারেই অনুচিত।  যাঁরা উপন্যাস পড়েছেন তাঁরা জানেন, আর যারা পড়েননি! অল্প করে বলতে হলে, এই রেস্তরাঁ, রেস্তরাঁর রহস্যময়ী মালকিন মুসকান মানবি নাকি ডাইনি, তা নিয়ে গুজব। কয়েকটি মানুষের নিখোঁজ হয়ে যাওয়া। আর এরই তদন্ত করতে গিয়ে রোমহর্ষক এক ঘটনার সম্মুখীন! ৯টা এপিসোড। প্রত্যেকটির সময়সীমা মেরেকেটে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট।

সৃজিতের এই সিরিজের ভাল দিকগুলো নিয়েই প্রথমে বলা যাক। কয়েকটি দৃশ্যের দৃশ্যায়ন বা সিনেম্যাটোগ্রাফি অসাধারণ। বিশেষ করে রাতের অন্ধকারে টর্চের আলোতে যেভাবে বেশকিছু দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে তা দেখলে সত্যিই ফ্রেমের থেকে চোখ সরবে না। সিরিজের একেবারে শুরুতে বরফ মোড়া পাহাড়ের কোলে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ভগ্নাংশ। একে একে বিমানের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসছেন প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা। যেভাবে সৃজিত এই দৃশ্যকে সাজিয়েছেন তা সত্যিই রহস্য তৈরি করে। এই দৃশ্যায়নগুলোই সৃজিতের এই সিরিজের থেকে পাওয়া প্রাপ্তি। আর এখানেই সিরিজের ভাল সব কিছুর ইতি।

সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’ সিরিজের সবচেয়ে দুর্বল জায়গাই হল, একেকটি দৃশ্যেকে অতিরিক্ত টেনে নিয়ে যাওয়া। আর দৃশ্য টানতে গিয়ে অতিরিক্ত ভারী ভারী সংলাপের ব্যবহার! যার ফলে সিরিজ, সিরিজের ছন্দে এগোতে থাকলেও, রহস্যের শক্ত বুনোট হালকা হতে থাকে। হয়তো সৃজিত বাংলাদেশের গল্পকে নিয়ে সিরিজ তৈরি করেছেন বলেই বাংলাদেশি সিরিজের স্টাইলেই ধীরগতিতে গল্প বলেছেন। হয়তো বাংলাদেশের দর্শকদের ধরতেই সৃজিতের এই ছক। তবুও রহস্যের গল্প বলতে গিয়ে এই ধীরগতি একেবারেই কাজ করেনি। বিশেষ করে মুসকান জুভেরির চরিত্রকে দর্শকদের সামনে রহস্যময়ী করে তুলতে রবিঠাকুরের গানের ব্যবহার, কঠিন শব্দের সংলাপ আর অভিনেত্রীর মুখে বাঁকা হাসি নাই বা দিতে পারতেন সৃজিত। রাতের অন্ধকার, কবর খোঁড়ার দৃশ্য, তদন্তে নেমে রাহুল বসু আড়ি পেতেছেন গাছের পিছনে থেকে। হাতে টর্চ নিয়ে ওরকমটা গা ছমছমে দৃশ্যে রবিঠাকুরের গান ব্যবহার না করলেই কি হত না! ওই সময়ও কি রবিঠাকুরের প্রতি মুসকানের ফ্যানগার্ল মোমেন্ট দেখাতেই হতো? আরেকটি দৃশ্যের কথা বলা যাক, অনির্বাণ ভট্টাচার্য কবরে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে রাহুল বসু মাটি খোঁড়ার বদলে জঙ্গল সরাচ্ছেন! এরকম একটি দৃশ্যে এত শিথিল অভিনয়?

রাহুল বসু, অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacharya), অনির্বাণ চক্রবর্তী (Anirban Chakroborty), অঞ্জন দত্তর (Anjan Dutt) মতো একঝাঁক ভাল অভিনেতা। এটাই হতে পারত সৃজিতের এই সিরিজের সবচেয়ে স্ট্রং পয়েন্ট। সে জায়গায় দাঁড়িয়ে ডুবল প্রায় সবাই। অনির্বাণ ভাল অভিনেতা। তবে তিনি আতর আলির চরিত্রে ঠিকঠাক মানানসই নয়। অনেক জায়গাতেই বেখাপ্পা লেগেছে তাঁকে এই চরিত্রে। রাহুল বসু বেশিরভাগ ফ্রেমেই কেমন যেন আড়ষ্ট! অঞ্জন দত্ত রয়েছেন স্বমহিমায়। এক্ষেত্রে বেশি শব্দ না ব্যবহার করাই শ্রেয়! পাছে যদি তিনি রেগে যান। এই সিরিজে যাঁকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা অর্থাৎ বাংলাদেশি অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন, তাঁকে দেখতে খুব সুন্দর লেগেছে ছবিতে। তবে গল্পের ‘মুসকান’ হয়ে উঠতে পারেননি তিনি। কারণ, মুসকান শুধুই সিডাকটিভ চরিত্র নয়। আজমেরী ‘মুসকান’ চরিত্রের নানা স্তর থেকে অনেক দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

অবশেষে বলা যায়, এই গল্পে রবীন্দ্রনাথ না আসার ব্যাপারটি খুবই সামান্য একটি বিষয়। যে জমিদার বাড়িকে নিয়ে এত কাণ্ড, সেই জমিদারের নিমন্ত্রণে আসেননি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেটাই নামের সূত্র। তাছাড়া সিরিজে এর কোনও তাৎপর্য নেই। সিরিজটি অবশ্যই দেখুন, তবে এর থেকে দারুণ থ্রিলার, সাসপেন্স, আশা না করাই ভাল। না হলে আশাহত হবেন।

[আরও পড়ুন: Movie review: নয় অনুভূতি নিয়ে ৯টি ছবি, কতটা জমল মণিরত্নমের Navarasa?]

 

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement