Advertisement
Advertisement

সমাজের ভেদাভেদ নিয়ে কোন বার্তা দিল ‘টুসকি’?

হলে যাওয়ার আগেই জেনে নিন।

Know the review of Bengali movie Tuski
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:August 24, 2018 2:56 pm
  • Updated:August 24, 2018 2:56 pm  

চারুবাক: গরিব বড়লোকের ভেদাভেদ, পারস্পরিক স্ট্যাটাস নিয়ে সংঘাত সেই উত্তম-সুচিত্রা যুগ থেকে ছবি হয়ে আসছে। প্রাথমিক আকচা-আকচির পর অবশ্যই মিলন সূত্র চিত্রনাট্যে এসেই পড়ে শেষ পর্বে। সেদিক থেকে বিচার করলে অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের ‘টুসকি’র কাহিনিতে তেমন কোনও ব্যতিক্রম নেই। নামকরা স্কুলে কেবল দামি মানুষের সন্তানরাই পড়বে। শান্তিনগর কলোনির গরিবগুবোদের সন্তান কর্পোরেশনের বিনি মাইনের স্কুলের ছাত্র হয়েই থাকবে। এই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে অনিকেতের চিত্রনাট্য একটি রফাসূত্র এনেছে খ্রিস্টান মিশনারিকে ঢুকিয়ে। তবে যে এলাকায় উদার ও বদান্য মিশনারি নেই! ছবির জন্য অতি সহজ ও সরল সমাধান সেখানে সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে কি তা হতে পারে? পরিচালক বলতেই পারেন, সেজন্যই তো ছবি বানানো! ইচ্ছেপূরণের ফর্মুলা নিয়েই তো সিনেমা।

[অচলাবস্থা কাটিয়ে চেনা ছন্দে স্টুডিওপাড়া, শুরু সিরিয়ালের শুটিং]

Advertisement

বলতেই হচ্ছে সেই ‘ইচ্ছেপূরণ’-এর জায়গা থেকে অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের ‘টুসকি’ ষাট-সত্তরের সময়টাকে মনে করিয়ে দেয়। হ্যাঁ, ছবির গায়ে তিনি আজকের পোশাক চড়িয়েছেন বা বলতে পারি চেষ্টা করেছেন। আনা হয়েছে ‘শালা’, ‘মাওবাদী’র মতো শব্দ। বস্তির বাংলা স্ল্যাং-ও ব্যবহার হয়েছে। ডিস্যুজা নামের এক ক্রিস্টানও ডেরা বেঁধেছে শান্তিনগর কলোনিতে। যেখানে ‘টুসকি’কে দামি স্কুলে ভরতি করানোর অর্থ জোগাড় করতে চাঁদা তুলতে হয়, সেখানে পুরো বস্তি সাজানোর খরচ এক রাতে কোন গৌরী সেন জোগালো? এসব প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসার উত্তর খুঁজতে চাওয়ার ছবি ‘টুসকি’ নয়। এই ছবি হল বাস্তবের মোড়কে ফিল গুড ছবি। অনিকেতের মেকিং স্বচ্ছ, সহজ এবং সরলরৈখিক চিরদিনই। সুতরাং কো-ইন্সিডেন্স বা কাকতালীয় ঘটনার সমাবেশ ঘটবেই, ঘটেওছে। প্রিন্সিপালের ঘরে ইংরাজি বলতে না পারা বাবার চিৎকারে আবির্ভাব ঘটেছে উদার এক মিশনারির। বস্তির বৃদ্ধ অর্থ জোগাড়ের জন্য বাংলায় লেখা প্ল্যাকার্ড টাঙিয়ে রাস্তার মোড়ে ভিক্ষে করেছে। অথচ টুসকিই তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছে ‘কী কর!’

[আধুনিক প্রেক্ষাপটে ফের বড়পর্দায় ‘ঘরে বাইরে’, পরিচালনায় অপর্ণা সেন]

এতসব গরমিলের মধ্যেও ‘টুসকি’ যে অন্য ভাবনার সহজাত ছবি। এটা অস্বীকারের নয়। পরিচালকের ভাবনাকে জীবন্ত করে তুলতে মায়ের (মাসি) ভূমিকায় কাঞ্চনা মৈত্র দুর্দান্ত কাজ করেছেন। তাঁর বডি ল্যাংগুয়েজ অসাধারণ। ধনী বাড়ির স্ত্রীর ভূমিকায় পৌলমী বসুও ক্যামেরার সামনে তিন বছর আগেই বেশ স্বচ্ছন্দ ছিলেন। বাবার চরিত্রে রাজেশ শর্মা, ডিস্যুজার বেশে খরাজ মুখোপাধ্যায়ও দর্শকের কাছে গ্রহণীয় হবেন। প্রশংসনীয় অনামিকা সাহার কাজ। একটাই অস্বস্তিকর। ছবির শেষ পর্বে বস্তির খোঁড়া মাস্টারকে ‘মাওবাদী’ তকমা দিয়ে গল্পের গায়ে সাম্প্রতিক রং চড়ানোর কোনও প্রয়োজন ছিল না।    

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement