Advertisement
Advertisement
Aranyer Prachin Probad Review

রহস্যময় পিচে জীতুর স্টেডি ব্যাটিং, পড়ুন ‘অরণ্যর প্রাচীন প্রবাদ’ ছবির রিভিউ

প্রথম ছবিতে নতুন গোয়েন্দা এনে প্রত্যাশা জাগালেন পরিচালক দুলাল দে। ছবির 'ম্যান অফ দ্য ম্যাচ' কে?

Jeetu Kamal's detective drama Aranyer Prachin Probad
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:July 5, 2024 11:06 am
  • Updated:July 5, 2024 11:54 am

শম্পালী মৌলিক: জীবনে যা কিছু প্রথম, তাই হয়ে থাকে বিশেষ। আজীবন। সেই স্বপ্নছোঁয়ার ছাপ বোঝা যায় খানিক দূর থেকে দেখলেও। ক্রীড়া সাংবাদিক দুলাল দের প্রথম ছবি “অরণ‌্য’র প্রাচীন প্রবাদ” দেখতে গিয়ে এ কথা মনে হচ্ছিল। এই ছবিতেই প্রথমবার গোয়েন্দারূপে আত্মপ্রকাশ করলেন জীতু কামাল। পরিচালক এবং প্রধান অভিনেতা দুয়ের ‘প্রথম’ যখন এক নৌকায়, স্রোতের উথালপাথাল সামলে তাঁরা ঠিক গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছেন। ফেলুদা, ব্যোমকেশ, সোনাদা, একেন, শবর, মিতিন, সুব্রত, কিরীটীর পরেও চলে এল ‘অরণ‌্য চ‌্যাটার্জি’।

Aranyar-Prachin-Probad-3

Advertisement

হ্যাঁ, জীতু কামালের ‘অপরাজিত’ থাকার চ‌্যালেঞ্জ ছিল। তিনি প্রত্যেকটি ওভার ধরে খেলেছেন, দায়িত্ব নিয়েছেন, কিন্তু ফুরফুরে মেজাজে। গোয়েন্দা চরিত্রের ভারে স্ট্রেস-আক্রান্ত হননি। সেখানে পরিচালকের খেলা-যোগ দারুণ কার্যকর হয়েছে। তিনি খুব স্পোর্টিংলি অরণ‌্যকে (জীতু) একটা রহস্যের সঙ্গে জড়িয়ে দিয়েছেন। আর ছবিজুড়ে ঘুরেফিরে এসেছে ক্রিকেটের রেফারেন্স। ফলে জীতুর অভিনেতা-ক্রিকেটার সত্তা সাবলীলভাবে চিত্রনাট্যে ছড়াতে পেরেছে। ছবিতে দেখি, ডাক্তারির ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র অরণ‌্য, ঘটনা পরম্পরায় জড়িয়ে যাচ্ছে একটি হত‌্যাকাণ্ডের রহস‌্য সমাধানে।

Aranyar-Prachin-Probad-2

কাহিনির প্রেক্ষাপট পানাঘাট শহরতলি। তরুণ ডাক্তার অমিত রায়ের (সুহোত্র মুখোপাধ‌্যায়) মৃত্যুরহস‌্য সমাধানে এক বছর ধরে লড়ে যাচ্ছে পুলিশ কিন্তু কিছুই করতে পারেনি। তখন ডাক পড়ে সিআইডি-র পদস্থ অফিসার সুদর্শনের (শিলাজিৎ), সম্পর্কে অরণ‌্যর জামাইবাবু। অরণ‌্য তার সঙ্গী হয়। আর এই কেসে সুদর্শনের সহকারী সন্দীপ বা স‌্যান্ডি (সায়ন ঘোষ)। ক্রমে বোঝা যায়, সৎ আদর্শবান চিকিৎসক ছিলেন অমিত, যাকে গোটা পানাঘাট ঈশ্বরের আসনে রেখেছিল। সরকারি হাসপাতালেই সে জানপ্রাণ দিয়ে কর্তব‌্য করত। কোনও রোগী ফেরানোর অভিপ্রায় বা অন‌্য নার্সিংহোমে সময় দেওয়ার প্রবণতাও তার ছিল না। ফলে সে সিস্টেমে মিসফিট হয়ে যায়। স্থানীয় রাজনীতিক (বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য), হাসপাতালের দুই সহকর্মী চিকিৎসক আর প্রভাবশালী ব‌্যক্তি দিবাকরের (নীলাদ্রি মৈত্র) চক্ষুশূল হয়ে পড়ে সে। তবে হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে (লোকনাথ দে) সদ্ভাব বজায় থাকে তার। এর মধ্যেই কোমল স্বভাবের নার্স দেবযানীর (মিথিলা) সঙ্গে অরণ‌্যর সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। যা প্রেমের পরিণতি পায়। ঘটনাক্রমে একটা শিরদাঁড়া সোজা রাখা মানুষের পথচলা যেমন দুর্গম হয়, অমিতেরও তাই হচ্ছিল। তবু সে কর্তব্যে অবিচল ছিল। এই মানুষটার মৃত্যু ডাক্তারির ছাত্র অরণ‌্য মেনে নিতে পারে না। শেষ দেখতে নেমে পড়ে সে। এভাবেই রহস্যের কিনারা করতে চেজ শুরু হয়। ভালো লাগে অরণ‌্য-সুদর্শনের যুগলবন্দি। শেষের টুইস্টের জন‌্য দর্শকের অপেক্ষা থাকবে।

[আরও পড়ুন: ‘আলি ফজল অসাধারণ’, ‘মির্জাপুর ৩’ রিভিউয়ে ‘গুডডু ভাইয়া’কে ফুলমার্কস স্ত্রী রিচার]

জীতু চমৎকার অভিনয় করেছেন। তাঁর ‘অরণ‌্য’র জন‌্য মহিলা অনুরাগীদের সংখ‌্যা বাড়বে নিশ্চিত। শিলাজিৎ তাঁর চরিত্রে ইন্টারেস্টিং। সুহোত্র আগাগোড়া এফর্টলেস অমিতের ভূমিকায়। চিকিৎসকদের এবং দর্শকের ভালোবাসা পাবেন তিনি। মিথিলা স্বাভাবিক সুন্দরী, তাঁর চড়া মেকআপের প্রয়োজন ছিল না। তবে অভিনয়ে তিনি সাবলীল। লোকনাথ দে পারফেক্ট সুপারের চরিত্রে। কেবলমাত্র উপস্থিতি দিয়েই, দিবাকরের চরিত্রে নীলাদ্রি মৈত্র নজর কাড়েন। রাজনীতিকের স্ত্রীর ভূমিকায় অনন‌্যা বন্দ্যোপাধ‌্যায় ঠিকঠাক। কিছু খামতি আছে ঠিকই, পার্শ্বচরিত্রদের অভিনয় দুর্বল, চিত্রনাট‌্য আরও আটসাঁট হতে পারত। ক‌্যামেরার দায়িত্ব ভালো সামলেছেন প্রতীপ মুখোপাধ‌্যায়। শুভদীপ গুহর মিউজিক ভালোই। সব মিলিয়ে বলা যায়, প্রথম ছবি পরিচালনায় দুলাল দের স্ট্রাইক রেট বেশ ভালো। অরণ‌্য অ‌্যাক্সিডেন্টাল গোয়েন্দা কিন্তু পরবর্তী সত‌্যান্বেষণের অপেক্ষার জন্ম দিয়ে যায়, এখানেই ছবির সাফল‌্য। আগাগোড়া স্বাভাবিক অভিনয়ে সুহোত্র অনবদ‌্য। প্রথম ছবিতে নতুন গোয়েন্দা এনে প্রত‌্যাশা জাগালেন পরিচালক দুলাল দে। আর এই সিনেমার ম‌্যান অফ দ‌্য ম‌্যাচ জীতু এবং সুহোত্র উভয়ই।

[আরও পড়ুন: ‘টিম ইন্ডিয়ার জন্য গর্বে বুক ফুলে যাচ্ছে’, জয় শাহকে শুভেচ্ছা আবেগপ্রবণ শাহরুখের]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement