সন্দীপ্তা ভঞ্জ: রিল আর রিয়েল লাইফ গুলিয়ে গেলে কী মারাত্মক পরিণতি ঘটতে পারে? সেই গল্প নিয়েই হইচইতে হাজির পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য।
“পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে, স্যাটেলাইট আর কেবলের হাতে, ড্রয়িংরুমে রাখা বোকা বাক্সতে বন্দী…”, সেই কোন সাত-আটের দশকেই বাঙালিকে শিখিয়ে গিয়েছে ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’। কতটা দূরদর্শী হলে ভবিষ্যৎ দর্শন করা যায়, তার জ্বলন্ত উদাহরণ এই কালজয়ী গান। সিরিয়ালের কদর বর্তমান প্রজন্মেও এতটুকু কমেনি। এখন অবশ্য মেগা ধারাবাহিকের যুগ। সন্ধে হলেই রিমোট হাতে টিভির সামনে একজোট হওয়ার চল রয়েছে বহাল তবিয়তে। তখন কে মিনু আর কে ম্যাডাম? অন্দরমহল সব একছাতার তলায়। আমাদের চারপাশের ঠিক চেনা ছবি নিয়েই দেবালয় সিরিজের গল্প বোনা শুরু করেন। কিন্তু টিভির অপর প্রান্তের লোকেরা কেমন থাকেন? কেমন তাঁদের জীবনযাপন? তাঁদের বেডরুমেই বা কী হয়? এমন কৌতূহলের অন্ত নেই দর্শক-অনুরাগী মহলে। ‘বোকাবাক্সতে বন্দি’ সিরিজের পরতে পরতে সেই গল্পে ঢুকতে থাকেন পরিচালক।
শোলাঙ্কি রায় এখানে রিল লাইফে সন্ধ্যামণি। আর রিয়েল লাইফে অপলা। মেগা ধারাবাহিকের দায়িত্ব কাঁধে টানতে গিয়ে তাঁর সংসারচর্যা একপ্রকার ব্যহত হয়েছে। স্বামী, সন্তান নিয়ে সুখী গৃহকোণ হবে, সেই স্বপ্নে বিভোর সে। তাই সিরিয়াল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে। কিন্তু শুটের শেষ দিনে সেটে গিয়েই যেন সব গুলিয়ে গেল। আসল-নকলের ঘেরাটোপে বন্দি হল শোলাঙ্কির চরিত্র অপলা। হঠাৎ তাঁকে বলা হয়, তাঁর আসল নাম অপলা নয়, সন্ধ্যামণি। এই ধারাবাহিকের সেট, চৌধুরী পরিবারই তার বাড়ি আর স্বজন। কল্পনা আর বাস্তবের মধ্যে গুলিয়ে যায় তার জীবন। গভীর মনস্তত্ত্বের পাঠ দেয় এই সিরিজ। অপলা শোলাঙ্কির মতো দর্শকদেরও যে কোনও সময়ে গুলিয়ে যেতে পারে! দেবালয়ের ‘বোকাবাক্সতে বন্দি’ ওয়েব সিরিজে রহস্যের মোড়ক খুলবে পরতে পরতে।
রিল-রিয়েলের দ্বন্দে কি এভাবেই ভোগেন তারকারা? মাত্রাতিরিক্ত কাজের চাপে এভাবেই অস্তিত্বসংকটে হ্যালোসিনেশনে ভোগেন? সিরিজ দেখতে দেখতে প্রশ্ন জাগে মনে। নীল ভট্টাচার্যকে এখানে সন্ধ্যামণির স্বামীর ভূমিকায় দেখা গেল। অন্যদিকে সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন অপলার স্বামীর ভূমিকায়। শোলাঙ্কির অভিনয় বেশ সাবলীল বরাবরে মতো। নীল এবং সৌম্যও যথাযথ। ৬ পর্বের স্বল্প দৈর্ঘ্যের সিরিজ সপ্তাহান্তে বিঞ্জ ওয়াচ হতেই পারে। আর আপনি যদি সিরিয়ালপ্রেমী হন, তাহলে অবশ্যই দেখুন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.