ছবি সূত্র - রূপ প্রোডাকশন অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্টের ফেসবুক পেজ
শম্পালী মৌলিক: এক জীবনে মানুষ যা চায় তার কতটুকু পূরণ করতে পারে? যা বলতে চায়, তার অর্ধেকও হয়তো বলা হয় না। আর বলতে পারলেও সাধ আর সাধ্যের মধ্যে ফারাক রয়ে যায় আজীবন। স্বপ্ন দেখার সাহস চলে গেলেও, হয়তো ভিতরে গুমরে মরে জেদের তাড়না। এই সব নিয়েই সৌম্যজিৎ আদকের নিখাদ প্রেমের ছবি ‘অল্প হলেও সত্যি’ (Olpo Holeo Sotti)। অপূর্ণ ভালবাসার দু’টি সমান্তরাল কাহিনি এই ছবির অন্তরাত্মা। ছবির কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন অনুভব ঘোষ। চার প্রধান চরিত্রকে ঘিরে গল্প আবর্তিত হয়।
কীরকম সেই কাহিনি? গুঞ্জন রায় (সৃজনী মিত্র) অ্যাড এজেন্সিতে কাজ করে। তার বিয়ে ঠিক হয়েছে অফিসের সিনিয়র কলিগ সিদ্ধার্থর (ঋষভ বসু) সঙ্গে। বিয়ের আগে পরস্পরকে চিনে নিতে চায় তারা। লিভ ইনের পরিকল্পনার কথা জানায় তারা অভিভাবকদের। গুঞ্জন আর সিদ্ধার্থর আপাত নৈকট্যও স্পষ্ট হয় ক্রমশ। অন্যদিকে, রয়েছে অমৃতা (দর্শনা বণিক), যার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার, পাকেচক্রে বেসরকারি সে এখন হাসপাতালের নার্স। পরিবারের সঙ্গে ভাড়াবাড়িতে থাকে। বাড়িওয়ালা অর্জুন (সৌরভ দাস) বাংলার শিক্ষক ছিল। পড়াশোনায় তুখড় কিন্তু শরীর রোগাক্রান্ত। অবস্থার ফেরে অর্জুন নিঃস্ব প্রায়। সম্বল বলতে ভাড়াটের থেকে পাওয়া বাড়িভাড়া। কী করে যেন অর্জুন আর অমৃতার আশ্চর্য নৈকট্য তৈরি হয়ে যায়।
একদিকে শান্ত, মিষ্টি স্বভাবের অমৃতা, অন্যদিকে ক্যানসার আক্রান্ত অর্জুন। অমৃতা তার অর্জুনদার সেবায় খামতি রাখতে চায় না। গল্প এগোলে বোঝা যায়, চারজনেই কোথাও না কোথাও পরস্পরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। গুঞ্জন প্রায় পাঁচ বছর পর তার কলেজের সিনিয়র তথা শিক্ষক অর্জুনের দেখা পায়। আর সিদ্ধার্থর সঙ্গে হঠাৎ দেখা হয়ে যায় তার প্রথম প্রেম অমৃতার। ফেলে আসা দিন চকিতে কত কিছু মনে করিয়ে দেয়। একটা রাত এই চারজনের জীবনে নিয়ে আসে আবেগের সমুদ্র। কিন্তু সেই ঢেউ কি তাদের ভাসিয়ে নিয়ে যায়? উত্তর পেতে ছবিটা দেখতে হবে।
একদিকে অর্জুনের জীবনে সময় কমে আসা, তার বিপরীতে হঠাৎ পাওয়া ভালবাসা আগলে রাখার আকাঙ্খা! আর সিদ্ধার্থ কী করবে? তার জীবনের প্রথম ক্রাশকে সে কি আবারও ফিরে পাবে? এই সব ঝড় তোলা মুহূর্ত বুনে ছবিটা গেঁথেছেন পরিচালক সৌম্যজিৎ। গল্পের ভাবনাটা ভাল কিন্তু অভিনয় তেমন জুতসই নয়, বিশেষ করে পার্শ্ব চরিত্রদের। ভাল লাগে সৌরভ দাসকে। দর্শনার স্ক্রিন প্রেজেন্স সুন্দর, তবে অভিনয়ে পরিমার্জন দরকার। অমিত-ঈশানের মিউজিক ভালই। ছবিতে সাহানা বাজপেয়ীর গানটা খুব সুন্দর মেজাজ তৈরি করে দেয়। তবে চিত্রনাট্য আরও বাঁধুনি দরকার ছিল। সব মিলিয়ে, প্রেমের ছবি অল্প হলেও মনখারাপ করায়, তাই একবার দেখাই যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.