সুপর্ণা মজুমদার: মাথা অথবা মুণ্ডু, যাই বলুন না কেন তা তফাতে রেখেই এ সিনেমা দেখতে বসবেন। কেবল চ্যানেলের কল্যাণে দক্ষিণী সিনেমার অভ্যাস সিনেমার দর্শকদের অনেক আগে থেকেই রয়েছে। তাতে বলিউডের রং চড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন দক্ষিণী পরিচালক রাঘব লরেন্স (Raghava Lawrence)। যিনি আবার ‘কাঞ্চনা’রও (এই তামিল ছবি থেকেই অনু্প্রাণিত) পরিচালক-অভিনেতা। কিন্তু নিজের অতীতের মোহ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারেননি রাঘব। যে সিনেমা ইউটিভি বা সোনি ম্যাক্সের মতো চ্যানেলে দর্শক অনায়াসে দেখে নিতে পারেন, তা আবার কেন ২ ঘণ্টা ২১ মিনিট সময় এবং সাবস্ক্রিপশন ব্যয় করে ডিজনি প্লাস হটস্টারের (Disney+Hotstar) মতো OTT প্ল্যাটফর্মে দেখতে হবে। ঠিক বোঝা গেল না।
অবশ্য বোঝার বোঝা অক্ষয় কুমারও (Akshay Kumar) নেননি। এ ছবি করোনা কালে (CoronaVirus) সিনেমা হলে মুক্তি পেলে হয় তো ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শোয়ের জোরে বাজেটের অর্থ তুলতে সক্ষম হত। অক্ষয়ের নামের সুবাদে আরও কিছু অর্থও মিলত। কিন্তু ‘ভুল ভুলাইয়া’য় যে আনন্দ অক্ষয় দর্শকদের দিয়েছিলেন এ ছবিতে তাঁর ছিটেফোঁটাও নেই। কিয়ারা আডবানী (Kiara Advani) কেবল ফুলদানির মতো ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়েছেন। অকাল বজ্রপাতের মতো উদয় হওয়া গানগুলি ছন্দ মিলিয়েছেন। অক্ষয়ের ফিটনেস অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে পঞ্চাশ পেরোনোর পর প্রায় অর্ধেক বয়সের নায়িকার সঙ্গে রোমান্টিক দৃশ্যে অভিনয় করার আগে একটু ভাবা উচিত।
এবার একটু কাহিনি বলেই দিই, কারণ রিমেক শিক্ষিত দর্শক তা আগে থেকেই জানেন। শ্বশুর শচীনের (রাজেশ শর্মা) মন পেতে স্ত্রী রশমির (কিয়ারা আডবানী) সঙ্গে আসে আসিফ। যে কিনা আবার কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করা সংগঠনের সদস্য। এই আসিফই ভূতের পাল্লায় পড়ে। ভূতের নাম? হ্যাঁ, মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করা ভূতের নাম লক্ষ্মী (Laxmii)। নিজের ও পরিবারের বিরুদ্ধে অন্যায়ের প্রতিকার করতে আসিফের শরীরকে ব্যবহার করে লক্ষ্মী। তার পর আর কাহিনি বলার প্রয়োজন আছে?
স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, একটু ভীতু প্রকৃতির মানুষ আমি। ভয়ের সিনেমা পাশ কাটিয়ে যেতেই পছন্দ করি। কিন্তু এ ছবিতে না ঠিক মতো ভয় লেগেছে, না হাসি পেয়েছে। যখনও কোনও আবেগের ভিত তৈরি হয়েছে, তাল কাটিয়েছে পরবর্তী অধ্যায়ে যাওয়ার তৎপরতা। ভয় পাওয়ার অভিনয় করার চেষ্টা করেছেন রাজেশ শর্মা, আয়েশা রাজা মিশ্র, মনু ঋষি চড্ডা, অশ্বিণী কালসেকর। ফল যা দাঁড়িয়েছে, তাতে নিজেদের অভিনয় পর্দায় দেখেও তাঁদের ভয় লাগবে কিনা সন্দেহ। ছবি নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। আইনি নোটিসের জেরে নামও পালটাতে হয়েছে। নেগেটিভ হলেও প্রচার পেয়েছে অক্ষয়ের ছবি। তার জেরে অনেক দর্শকই ডিজনি প্লাস হটস্টার মাল্টিপ্লেক্সে এ ছবি দেখবেন। প্রত্যেকের পছন্দ-অপছন্দ ব্যক্তিগত। তবে আমার এই সিনেমা দেখার দৌলতেই ‘ভূতের নাচন’ দেখার সৌভাগ্য হল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.