সুপর্ণা মজুমদার: ১৪০ কোটির বেশি জনসংখ্যা এই ভারতবর্ষের। বেশিরভাগই ক্রিকেট অন্ত প্রাণ। বিশ্বকাপ, আইপিএল, টেস্ট, ওয়ান ডে থেকে টি-২০, কিছুই বাদ যায় না। খেলা চললে নজর আটকে থাকে টিভি স্ক্রিনে। ‘ইশ ধোনি যদি বলটা এভাবে খেলত!’, ‘আরে কোহলির মাথা ঠান্ডা করে খেলা উচিত’, ‘বলটা তো সুইং করাতে হবে’, এই সংলাপ ‘ঘর ঘর কি কাহানি’। অলিতে গলিতে ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ছড়াছড়ি। বাইশ গজের এই আবেগ ওতপ্রোতভাবে জড়িত ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি’র (Mr. & Mrs. Mahi) সঙ্গে। ম্যাচের সেরা জাহ্নবী কাপুর। আর তাঁর নেপথ্যের জাদুকর রাজকুমার রাও।
ক্রিকেট নিয়ে সিনেমা বলিউডে কম হয়নি। সেই তালিকায় উপরের সারিতেই থাকবে ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি’। কারণ? আবেগ। যে আবেগ এক খেলোয়াড়কে পরিণত করে। গল্পে নায়ক ও নায়িকা দুজনেরই ডাকনাম মাহি। কেন? শেষ দৃশ্যে তা সুন্দরভাবে দেখিয়েছেন পরিচালক। হ্যাঁ, মহেন্দ্র সিং ধোনির ডাকনামও মাহি। তবে তিনি শুধু পোস্টারেই গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স দিয়েছেন। এবার গল্পে ফেরা যাক। রাজস্থানের যুবক মহেন্দ্র ওরফে মাহির স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। যা এ দেশের লক্ষাধিক তরুণ-তরুণীর স্বপ্ন। কিন্তু স্বপ্ন কি সবসময় পূরণ হয়? মহেন্দ্রর হয়নি। ব্যর্থতা তাকে বাবার খেলার সরঞ্জামের দোকানে বসতে বাধ্য করে।
কিছু সময় পরে মহেন্দ্রর জন্য মহিমার সম্বন্ধ আসে। তার আবার ডাকনাম মাহি। পেশায় ডাক্তার মাহি। মহেন্দ্রর সারল্য আর সততা তাঁকে মুগ্ধ করে। বিয়ের রাতেই মহেন্দ্র জানতে পারে মহিমার ক্রিকেট অনুরাগের কথা। তার পর চলে মধুচন্দ্রিমা পর্ব। এবার গল্পে নয়া মোড়। ক্রিকেটার না হতে পারলেও কোচ হওয়ার স্বপ্ন দেখে মহেন্দ্র। তাতে যদি লাইম লাইট পাওয়া যায়। এদিকে মহিমা দারুণ ক্রিকেট খেলে। এতেই হাতে যেন চাঁদ পায় মহেন্দ্র। ডাক্তারি ছেড়ে মহিমাকে ক্রিকেটার হতে উদ্বুদ্ধ করে সে। কিন্তু তার পর?
না, ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি’ গতানুগতিক সাফল্যের গল্প নয়। বাইশ গজে যেমন মহিমা লড়াই করেছে। তেমনই ছিল মহেন্দ্রর জীবনের সঙ্গে লড়াই। নিজেকে উপলব্ধি করার যুদ্ধ। তাই পরীক্ষা দুজনেরই ছিল। মহিমার চরিত্রে সাবলীল অভিনয় জাহ্নবী কাপুরের (Janhvi Kapoor)। ক্রিকেটের দৃশ্যে তুখোড় অভিনেত্রী। এর জন্য যে তিনি কতটা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তা ব্যাটিং স্টাইল দেখেই বোঝা যায়। ছবির জন্য ক্রিকেট খেলতে গিয়েই দুবার জাহ্নবীর শোল্ডার ডিসলোকেট হয়েছে। তাঁর এই কষ্ট, যন্ত্রণা সার্থক হয়েছে। ক্রিকেটের দৃশ্যে প্রায় নো মেকআপ লুকে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তাতেও মুগ্ধ হতে হয়।
রাজকুমার রাও (Rajkummar Rao) পোড় খাওয়া অভিনেতা। চরিত্রের সঙ্গে কীভাবে একাত্ম হতে হয় তা তিনি ভালোভাবেই জানেন। মহেন্দ্রর হীনমন্যতা এত ভালো বোধহয় আর কেউ দেখাতে পারত না। পরিচালক শরণ শর্মা ছবির প্রথমার্ধে ক্রিকেট প্রায় রাখেননি। সেখানে আবেগের প্রাধান্য বেশি ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে সেই ঘাটতি পূরণ করেছেন। হ্যাঁ, প্রায় সোয়া দুঘণ্টার ছবিতে অনেক দৃশ্যই তাড়াতাড়ি মেটাতে হয়েছে। তবে এ সিনেমা মূলত জাহ্নবী-রাজকুমারেরই। পার্শ্ব চরিত্র হিসেবে কুমুদ মিশ্র, রাজেশ শর্মা, জরিনা ওয়াহাব, অর্জিত তনেজা নিজেদের ভূমিকা পালন করেছেন মাত্র।
ছবি – মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি
অভিনয়ে – জাহ্নবী কাপুর, রাজকুমার রাও, কুমুদ মিশ্র, রাজেশ শর্মা, জরিনা ওয়াহাব, অর্জিত তনেজা
পরিচালনায় – শরণ শর্মা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.