Advertisement
Advertisement
Gehraiyaan Review

ভালবাসা, পরকীয়া, অপরাধবোধ, সব থাকা সত্ত্বেও দুর্বল চিত্রনাট্যের কারণে আশাহত করল ‘গেহরাইয়াঁ’

আমাজন প্রাইমে মুক্তি পেয়েছে এই ছবি।

Gehraiyaan Review: Deepika Padukone new movie fails to impress Audience | Sangbad Pratidin
Published by: Akash Misra
  • Posted:February 11, 2022 10:52 am
  • Updated:February 11, 2022 2:52 pm  

বিদিশা চট্টোপাধ‌্যায়: অপ্রচলিত প্রেমের গল্প বলতে ভালবাসেন পরিচালক শকুন বাত্রা। ‘এক ম‌্যায় অউর এক তু’, ‘কাপুর অ‌্যান্ড সন্‌স’ ছবিতে আমরা দেখেছি তাঁর মুখ‌্যচরিত্রদের সম্পর্কের গতিপথ, সমাপ্তি ‘‌হ‌্যাপি এন্ডিং’-এর তথাকথিত সহজ পরিণতির দিকে পৌঁছয় না। ‘গেহরাইয়াঁ’-র (Gehraiyaan Review) ট্রেলার মুক্তি পেতেই একটা আলোড়ন তুলেছিল। পরকীয়া, প্রেম, দীপিকা-সিদ্ধান্তের ঘনিষ্ঠ দৃশ‌্য–এইসব খুব মুখ‌্য হয়ে উঠেছিল। কীভাবে আলাদা করে ‘ইন্টিমেসি ইন্সট্রাক্টর’ দিয়ে ঘনিষ্ঠ দৃশ‌্য শুট করা হয়েছে তা নিয়েও বেশ প্রচার হয়েছে। ফলত একটা দুর্নিবার প্রেম এবং প্রতারণার গল্প দেখতে পাব এমনটাই মনে হচ্ছিল। সেটা এখানে অন‌্যতম বিষয় হলেও–‘গেহরাইয়া’-র ফোকাস কিন্তু সেটা নয়। যে প্রেম ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়, তছনছ করে দেয়– সেই প্রেম থেকে বেরিয়ে এসে আবার মাথা তুলে দাঁড়ানোর গল্প বলতে চায় এই ছবি। বলতে চায় বললাম কারণ, পরিচালক নিজেই খানিকটা লক্ষ‌্যচ‌্যুত হয়েছেন বলেই মনে হয়। একদিকে আলিশা (দীপিকা) এবং তাঁর প্রেমিক করণ (ধৈর্য‌‌‌ কারওয়া), অন‌্যদিকে আলিশার তুতো বোন টিয়া (অনন‌্যা পাণ্ডে) এবং টিয়ার প্রেমিকা জেন (সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী)। আলিশা এবং করণের ছ’বছরের সম্পর্ক খানিকটা মলিন হয়ে এসেছে, এমন সময় টিয়া এবং জেনের সঙ্গে দেখা হয় তাদের। তাও আবার পারফেক্ট রোম‌্যান্টিক সেটিং-এ। আরব সাগরে ভাসমান বিলাসবহুল ‘ইয়ট’-এ। গন্তব‌্য আলিবাগের পুরনো রিসর্ট সমান বাড়ি। প্রথম দর্শনেই জেন আলিশার প্রতি আকৃষ্ট হয়, বলাই বাহুল‌্য আলিশাও।

Advertisement

মুম্বই ফিরে আসার পর আলিশার আর জেনের মধ‌্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এবং সেটাকে দুজনেই ‘প্রেম’ বলে ধরে নেয়। অন‌্যদিকে সহজ-সরল মেয়ে টিয়া কিছুই বুঝতে পারে না। এছাড়াও আমাদের জানানো হয় আলিশার ছোটবেলায় তার বাবা-মায়ের সম্পর্ক ভাল ছিল না। এবং তার মা আত্মহত‌্যা করে। সব মিলিয়ে আলিশার মনে একটা ভয় কাজ করে। সে যেন তার মায়ের মতো সম্পর্কের আবর্তে ঢুকে আটকে না পড়ে। তার ওপর পরকীয়া প্রেমের অপরাধবোধ। আসলে ‘গেহরাইয়াঁ’ আলিশা এবং টিয়ার গল্প হতে পারত। কীভাবে ছোটবেলায় ছিটকে যাওয়া দুই বোন পরস্পরের পাশে দাঁড়ায় সেটাই ছবির ফোকাস হতে পারত। এখানে জেন এবং আলিশার প্রেমটা সাবপ্লট হতে পারত। হতে পারত অনেক কিছুই। কোনও এক অজ্ঞাত কারণে কোন বিষয়টাকে প্রধান‌্য দেবেন সেটা একটু গুলিয়ে গিয়েছে পরিচালকের। আর সেই কারণেই বোধহয় আলিশা আর জেনের কেমিস্ট্রিও তৈরি হয়নি। দীপিকা পাড়ুকোন এবং সিদ্ধান্ত চতুর্বেদীর ঘনিষ্ঠ দৃশ‌্যও আলিশা এবং জেনকে কাছাকাছি আনতে পারেনি। দুর্বল চিত্রনাট‌্য এমন একটাও প্রেমের মুহূর্তেও তৈরি করেনি যেটা মনে থেকে যাবে। তখন মনে হয় গোটাটাই খুব আরোপিত। বরং ছবি একটা অন‌্য মাত্রা পায় একেবারে শেষের দিকে গিয়ে যেখানে আলিশা তার বাবার কাছাকাছি আসে, অতীত ভুলে টিয়ার বাড়িয়ে দেওয়া হাতটা ধরতে চায়। ‘গেহরাইয়াঁ’ থেকে পাওয়া বলতে এইটুকুই। কিন্তু এই প্রাপ্তিও বড্ড জোর করে এবং সহজে পাইয়ে দেওয়ার মতো। একদিকে পরকীয়া প্রেমিককে ভিলেন বানিয়ে দেওয়া। আমি যখন বুঝতে পারব যাকে ভালবেসেছিলাম সেই মানুষটা গন্ডগোলের, তখন সেই অতীত থেকে বেরিয়ে আসা তুলনামূলভাবে সহজ। দোষ দেওয়ার একটা আধার পাওয়া যায়।

[আরও পড়ুন: দুর্বল চিত্রনাট্যের কবলে একঝাঁক ভাল অভিনেতা, জমল না ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান মার্ডার’ সিরিজ]

পরিচালক আলিশাকে সেই সুযোগ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আলিশা কোনওদিন টিয়াকে বলতেই পারল না সে তার প্রেমিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এটা জানার পর টিয়া বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিত কি না আমরা জানি না। টিয়াকে সেই ‘চয়েস’ দেওয়া হয়নি। যদিও ছবির শেষ দৃশ‌্যে একটা ইঙ্গিত আছে যেখানে সত‌্যিটা সামনে চলে আসতে পারে। কিন্তু সবটাই এক্সটারনাল ফোর্স, চান্স অ‌্যান্ড কোয়েনসিডেন্স। এর আগেও আর্থিক গোলযোগ সম্পর্কের গতিপথ খানিকটা বদলেছে। সিনেমায় দর্শক হিসাবে আমার কাছে মানুষের মনের গতিপথ, তার চলন, ক্রাইসিস, জটিল পরিস্থিতিতে মনের নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব‌্যবস্থা– সেই সব অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং। সিনেমায় বাহ্যিক কোনও অবস্থা, পরিস্থিতি যদি নির্ণায়ক হয়ে ওঠে তবে সেটা সেই সিনেমার জন‌্য খুব একটা ভাল না, এটা আমার ব‌্যক্তিগত মতামত। মনটা ভাল করে দেখা যায় না, বোঝা যায় না। ‘গেহরাইয়াঁ’-তে পৌঁছনোও যায় না।

‘আমাজন প্রাইম ভিডিও’-তে মুক্তি পেয়েছে এই ছবি। বলতেই হচ্ছে এটা দীপিকা পাড়ুকোনের সেরা নয়। বরং চমকে দিয়েছেন অনন‌্যা পাণ্ডে। টিয়ার চরিত্রে তিনি খুব স্বতঃস্ফূর্ত। দীপিকার বাবার চরিত্রে নাসিরউদ্দিন শাহ ছোট্ট পরিসরেও জোরালো ছাপ রেখে গেলেন।

[আরও পড়ুন: মাসাইমারার জঙ্গলে প্রসেনজিতের অ্যাডভেঞ্চার, কতটা জমল সৃজিতের ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement