নির্মল ধর: এখনকার কম্পিউটর শাসিত সমাজে ফেসবুক-টুইটার যেমন স্বাভাবিক শব্দ, তেমনই চলতি ভোকাব্যুলরিতে ঢুকে পড়েছে ‘পাসওয়ার্ড’ শব্দটিও। কম্পিউটর অন করতে গেলে চাই পাসওয়ার্ড। ভুল করলে খালি হাতে ফিরতে হয়। ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের প্রতিপদে চাই পাসওয়ার্ড। ফেসবুক বা অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং এখন জোচ্চুরির নতুন নাম। পাসওয়ার্ড চুরি করে নতুন করে বানিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাপিস করা এখন নাকি আর তেমন কঠিন কাজ নয়। গোপন অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেই দেশের জরুরি তথ্য অজান্তে পাচার হয়ে যাচ্ছে শত্রুদেশের কাছে। এই চুরি বা দিনে ডাকাতি রুখতেই সব দেশেরই পুলিশ বিভাগে তৈরি হয়েছে সাইবার ক্রাইম বিভাগ। দেশের গোয়েন্দা দপ্তর ও স্বরাষ্ট্র দপ্তর এই নব্যধারার অপরাধ দর্শনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে থাকে। নায়ক দেব প্রযোজিত কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ‘পাসওয়ার্ড’ নতুন এই ক্রাইম জগতকে ঘিরেই।
বিদেশে এই নিয়ে ছবি হলেও বাংলা সিনেমায় বিষয়টি অভিনব। দর্শককে বিষয় বিভিন্নতা নিয়ে গল্প বলায় আগ্রহী। খানিকটা সায়েন্স ফিকশন মেশানো গল্পকে চিত্রনাট্যে কমলেশ্বরের কল্পনায় সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র, সাইবার ক্রাইম দমনে আইআইটি ফেরত তরুণ অফিসার রোহিতকে (দেব) নিয়োগ করে। রোহিত পাশে পান নিশা (রুক্মিণী) নামে এক দুঃসাহসী তরুণীকে। অন্যদিকে ইসলামিক গোষ্ঠীর দু’জন পরমব্রত ও পাওলি। তাদের উদ্দেশ্য অ্যাকাউন্টটি হ্যাক করে ভারতের গোপন নথি হাতড়ানো। ছবিতে ইন্টারনেট অ্যাকশন, সাইবার হ্যাকিং ছাড়াও বন্দুকবাজি এবং শারীরিক অ্যাকশনও কম নেই। শেষ পর্যন্ত রোহিত-নিশা জুটির ‘জয়’ হলেও অদূরে এক উঁচু টাওয়ার থেকে বিরোধী পক্ষের দু’জনকে আবার আসতে দেখা যায়। এটা কি ছবির সিক্যুয়েল বানানোর ইঙ্গিত?
সাইবার ক্রাইমকে নিয়ে তো বটেই। ঘটনা পরম্পরাকে সাজানোর প্রক্রিয়াটিও জটিল হওয়ায় আমজনতা এই ছবির কতটা আকৃষ্ট হবে বলা মুশকিল। অনেক ঘটনার খেই ধরতে পারবেন না। অভিনয়ে দেব একই জায়গায় দাঁড়িয়ে। রুক্মিণী বরং বেশ প্রাণবন্ত, সজীব। পাওলি-পরমব্রত জুটির রসায়ন মন্দ নয়। শেষ দৃশ্যের শেষ শটে পরম বুঝিয়ে দিয়েছেন দেবকে টক্কর দিতে তিনি প্রস্তুত। দেব-পরমের এই টক্কর আমদর্শক খাবে!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.