Advertisement
Advertisement
Ektu sore bosun movie Review

হাসির মোড়কে বাস্তব নিয়ে সত্যকথন, ভাবনাকে উসকে দেবে ‘একটু সরে বসুন’, পড়ুন রিভিউ

নজর কেড়েছেন রজতাভ দত্ত।

Ektu sore bosun review: good film to watch| Sangbad Pratidin
Published by: Akash Misra
  • Posted:November 24, 2023 10:41 am
  • Updated:November 24, 2023 2:21 pm  

চারুবাক: কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় সাম্প্রতিক বাংলা সিনেমার কালো ঘোড়া! মুক্তি পেয়েছে তাঁর নতুন ছবি ‘একটু সরে বসুন’। সফল সোশাল কমেডি ছবি বানানোর প্রধান শর্ত হল হাসি ও মজার সিকোয়েন্সের সঙ্গে থাকবে বাস্তবের ঘনিষ্ঠতা। চরিত্র গুলোর শিকড় থাকবে চলমান জীবনের গভীরে! পরিচালক – চিত্রনাট্যকার কমলেশ্বর জীবনের গভীরে যাওয়ার জন্য বেছে নিয়েছেন সাহিত্যিক বনফুলের একটি গল্প! শুধু “বীজ”টুকুই তিনি গ্রহন করেছেন। সেভাবে গল্পের কোনও সরল ন্যারেটিভ নেই। অথচ ঘটনাবহুল, অগণিত চরিত্রের কিছুটা পাগলামো, কিছুটা হাস্যরস জমানোর জন্য, আবার অবাস্তব ও পরাবাস্তবের মিশ্রণ ঘটিয়ে কমলেশ্বর এক নন্সেন্সিক্যাল ছবির পরিমণ্ডল তৈরি করেছেন পুরো ছবি জুড়েই সারাক্ষণ!

ম্যাজিক ভালোবাসে এমন বেকার যুবক গুড্ডু( ঋত্বিক) বান্ধবী পিয়া(ইশা) ও বেগুনবাগিচা গ্রাম ছেড়ে চাকরির সন্ধানে আসে কলকাতায়। ওঠে তুতো দাদা – বৌদি(রজতাভ – পায়েল)র বাড়িতে। বেশ মজার মানুষ তারা। অতর্কিতে রাস্তায় এক টাকা পাচারকারীর গাড়ি ধরতে পুলিশকে সাহায্য করায় সাধারণ গুড্ডু হয়ে ওঠে শহরের “নতুন ভাই”! টিভি চ্যানেলের কল্যাণে বেশ চেনা ও জনপ্রিয় মুখ! এই সুবাদেই চাকরি পেতে যোগাযোগ ঘটে রোকেয়া (পাওলি) নামের এক দুনম্বরি এমপ্লয়মেন্ট
দালালের সঙ্গে। ইতিমধ্যে বেগুন গ্রামে পড়ে থাকা বাবা মা , বান্ধবী, পড়শি গুড্ডুর খবর নিতে কলকাতায় আসে। এরপর সব্বাই মিলে শহর গুলজার আর কি! বিচিত্র সে এক কান্ডকারখানা বটে! যোগসূত্রহীন সেইসব কর্মকাণ্ডের মধ্যেই চিত্রনাট্যকার মসৃণভাবে গুঁজে দিয়েছেন তাঁর নিজস্ব সমাজ রাজনীতি নিয়ে ব্যঙ্গ মাখানো বিদ্রূপাত্মক সংলাপ। আবার কখনও সৌরজগৎ নিয়ে মহাজাগতিক গবেষণায়রত পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে গড়ে তোলেন এক গভীর দার্শনিক বয়ান!

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘পাঠান’, ‘জওয়ান’-এর পথে শাহরুখের ‘ডাঙ্কি’ও? মুক্তির আগেই লাভের ঘরে ১০০ কোটি]

কমলেশ্বর শেষ পর্যন্ত দেখিয়েছেন শহুরে অ্যাডভেঞ্চার সেরে গুড্ডু ফিরেছে নিজের মাটির কাছাকাছি! রোকেয়া, বৌদি এবং খোদ দাদা বুঝিয়ে দিয়েছে চাকরি এখন সোনার হরিণ, তার পেছনে দৌড়চ্ছে চাকরি হারানোর দল। বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখার ছবি “একটু সরে বসুন”, আবার কিঞ্চিৎ ভাবনার খোরাকও জুগিয়ে দেন পরিচালক। বনফুলের রচনাকে এমন আপডেট করে পরিবেশনার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ। শুধু একটাই অভিযেগ – যদি দৈর্ঘ্য একটু কমাতেন! হ্যাঁ, সেই জায়গাও ছিল! ব্যঙ্গ ও বিদ্রুপের খোঁচা যখন তীক্ষ্ন তখন সেগুলোর অতিরিক্ত ব্যবহার কাম্য কি?

রূপঙ্কর ও অরিজিৎ সিংয়ের গাওয়া গান দুটি এক অন্য মাত্রা এনে দেয় গল্পের বুননে। আর দেবজ্যোতি মিশ্রর আবহসঙ্গীত অবশ্যই একেবারে নতুন ধারার, মজাদার এবং মুচমুচে। অভিনয়ে প্রথম নাম অবশ্যই রজতাভ দত্ত। ছবি শেষে তাঁর অসহায় ভঙ্গিতে ভেঙে পড়ার মুহূর্তটি মনে রাখার মতো। ঋত্বিকের গুড্ডু বাস্তব অবাস্তবের মিশ্রণে উপভোগ করার মতো চরিত্রায়ান! পাওলি দামের রোকেয়াও চরিত্রই ঠিকঠাক! তাঁর অভিনয়েও রজতাভের ছোঁয়া! গুড্ডুর প্রতি তার দুর্বলতা প্রকাশের কাজটিও আফোটা ফুলের মতোই। ইশা সাহা পিয়ার স্বতস্ফূর্ত ছটফটে ভাবটি ফুটিয়েছেন ভালই। আর মানসী সাহা, খরাজ মুখোপাধ্যায়, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাস্টিং এক কথায় অনবদ্য! হয়তো একটু “অতি” লাগতে পারে স্পর্শকাতর দর্শকের কাছে, কিন্তু তাঁদের এমন অভিনয় অনেকদিন বাংলা ছবিতে দেখা যায়নি। ননসেন্স হিউমারাস ছবি করতে গেলেও যথেষ্ট সেন্স থাকার প্রয়োজন, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন কমলেশ্বর।

[আরও পড়ুন: প্রথম প্রেম কি ভোলা যায়? কাপুরবধু হয়েও করণের শোয়ে প্রাক্তন সিদ্ধার্থকে নিয়ে ‘আগল খোলা’ আলিয়া]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement