Advertisement
Advertisement

Breaking News

Byomkesh Hatyamancha Film Review

বাজিমাত পরিচালক অরিন্দম শীলের , জমজমাট ‘ব্যোমকেশ হত্যামঞ্চ’, পড়ুন রিভিউ

বড় পর্দায় ফের একবার আবির চট্টোপাধ্যায়কে ব্যোমকেশ-রূপে দেখতে ভাল লাগে।

Byomkesh Hatyamancha Film Review: Director Arindam Sil's new byomkesh steal the show | Sangbad Pratidin
Published by: Akash Misra
  • Posted:August 12, 2022 9:57 am
  • Updated:August 12, 2022 12:40 pm  

শম্পালী মৌলিক: চার বছর পরে ব্যোমকেশ নিয়ে ফিরলেন অরিন্দম শীল। তাঁর তৈরি রহস‌্য-ছবির প্রতি দর্শক বরাবর আকর্ষণ অনুভব করেছে, ‘ব্যোমকেশ হত‌্যামঞ্চ’-ও তার ব‌্যতিক্রম নয়। যেহেতু তিনি এর আগে ব্যোমকেশ ছবিতে সফল, সেই কারণে পরিচালকের লড়াইটা নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার। বড় পর্দায় ফের একবার আবির চট্টোপাধ‌্যায়কে ব্যোমকেশ-রূপে ফিরে পেতে দর্শকের খুব ভাল লাগবে।

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের ‘বিশুপাল বধ’-এর অসমাপ্ত কাহিনির সূত্র ধরে ছবির গল্প সম্পূর্ণ করেছেন পরিচালক অরিন্দম শীল এবং পদ্মনাভ দাশগুপ্ত যৌথভাবে। যে কারণে ছবির গল্প দর্শকের অজানা, তাই শেষ অবধি কৌতূহল বজায় থাকবে। এ ছবির প্রেক্ষাপটে রয়েছে ১৯৭১-এর নকশাল আন্দোলন। গুরুত্ব পেয়েছে সেই সময়ের থিয়েটার-জগৎ। গল্পের ধাঁচ মূলত চেম্বার ড্রামা, তাই পর্দায় সাতের দশকের সময়কাল ধরা কিছুটা সহজ হয়েছে। দীর্ঘ সময় সংলাপের মাধ‌্যমে দর্শকের মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন ছিল। কিন্তু দক্ষ অভিনেতাদের গুণে সেটা সম্ভব হয়েছে। সেই সময়ে বাংলা নাটকে ক‌্যাবারে নৃত‌্যশৈলী আসছে। শিল্পীরা সাফল্যের সহজ পথ আঁকড়ে ধরতে চাইছেন যেনতেন প্রকারেণ, এইরকম একটা প্রেক্ষিত।

Advertisement

[আরও পড়ুন:অভিনয়ের জোরে কি ‘ডার্লিংস’ হয়ে উঠতে পারলেন আলিয়া ভাট? পড়ুন রিভিউ]

ছবির শুরুটা সাদা-কালোয়। প্রারম্ভেই একটি হত‌্যাকাণ্ড। শ‌্যালিকা মালতীকে বিশ্বনাথ পালের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে কালীচরণ। তারপর যা হওয়ার তাই হয়। মালতীকে খুনের অপরাধে কালীচরণের ১৪ বছর কারাদণ্ড হয়। এটা দর্শক শুরুতেই জেনে যায়। কাট টু ১৯৭১ সাল। প্রতিবেশী প্রতুলবাবু (পদ্মনাভ) এসেছেন ব্যোমকেশ-সত‌্যবতীর (আবির-সোহিনী) কেয়াতলার বাড়িতে। সুখবর হল, সত‌্যবতী সন্তানসম্ভবা। থিয়েটার দেখতে যাওয়ার প্ল‌্যান হয়। গান্ধর্ব থিয়েটারে চলছে ‘কীচক বধ’ পালা। মঞ্চে অর্ণ মুখোপাধ‌্যায় ‘কীচক’, পাওলি দাম ‘দ্রৌপদী’, কিঞ্জল নন্দ ‘ভীম’, আর অনুষা বিশ্বনাথন ‘নর্ত‌কী’, সোমরিয়া। এছাড়াও নাটকে রয়েছে আরও বিভিন্ন চরিত্র। নাটক চলাকালীন একটি আকস্মিক মৃত্যু। দর্শকাসনে রয়েছে ব্যোমকেশ। যথারীতি সে নেমে পড়ে রহস‌্য সন্ধানে, অজিতকে (সুহোত্র) সঙ্গে নিয়ে। আসে পুলিশ। বোঝা যায়, সায়ানাইড গ‌্যাসে নাটকের অন‌্যতম প্রধান চরিত্র মারা গিয়েছে। ঘটনাক্রমে আরও একটি খুন জুড়ে যায়। ধীরে ধীরে সামনে আসে প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা, সম্পর্কে তঞ্চকতার আখ‌্যান। বোঝা যায়, নকশাল আন্দোলনে জড়িত নাট‌্যাভিনেতা বিশ্বনাথ পাল (কিঞ্জল) ওরফে বিশুর ছিল অর্থ, যশ, নারীর লোভ। আর প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী সুলোচনা (পাওলি) চাইত প্রেম। ঘর বেঁধেছিল ব্রজর (অর্ণ) সঙ্গে, সে সুলোচনাকে ভালবাসত। আর ভালবাসত নাটক এবং পার্টি।

ছবি এগোলে ব্যোমকেশ একটু একটু করে সন্দেহভাজনদের পেরিয়ে মূল আততায়ীর কাছে পৌঁছতে থাকে। চিত্রনাট্যে তাড়াহুড়ো নেই, একেবারে হুডানইট মেথডেই এগিয়েছে। বার বার দর্শক যাকে সন্দেহভাজন ভাববেন, পরমুহূর্তে সেই পরিস্থিতি বদলে যাবে! তবে কিছু অভিনেতার পারফরম‌্যান্স দুর্বল। ব্যোমকেশ এখন পরিণত, সত‌্যবতী অন্তঃসত্ত্বা আর বরাবরের মতোই কেয়ারিং। এই ছবিতে সোহিনীর বিশেষ কিছু করার ছিল না। তবু আবির-সোহিনীকে মিক্সড ডবলস জুটির মতোই ভাল দেখিয়েছে। একটি দৃশ‌্য খুব ভাল, যখন ব্যোমকেশ বলে ‘খোকা’ আসার কথা, সত‌্যবতী তাকে চট করে মনে করিয়ে দেয় ‘খুকি’ আসার সম্ভাবনার কথাও। নতুন অজিত হিসাবে সুহোত্র মুখোপাধ‌্যায়কে চমৎকার মানিয়েছে। সুলোচনার মতো তাৎপর্যপূর্ণ চরিত্রে পাওলি নিখুঁত। তৎকালীন সময়ের দাপুটে অভিনেত্রী সুলোচনার রাগ, হতাশা, প্রেম সবটুকু তুলে এনেছেন পাওলি তাঁর ছলছল চোখে। বিশুপালের মতো ধূসর চরিত্রে বেশ ভাল লেগেছে কিঞ্জল নন্দকে। অর্ণ মূলত থিয়েটারের অভিনেতা হলেও, ফিল্ম সিকোয়েন্স বা থিয়েট্রিকাল দৃশ‌্য, দুয়েতেই সাবলীল লেগেছে তাঁকে। কালীচরণের চরিত্রে লোকনাথ দে যথাযথ। ছবির শেষভাগ একটু শ্লথ হলেও পরিচালক ক্লাইম‌্যাক্স পর্যন্ত দর্শকের মনোযোগ ধরে রাখতে পেরেছেন।

[আরও পড়ুন: কমেডির মোড়কে ক্রাইম থ্রিলার, নতুন স্বাদের গল্পে জমজমাট সিরিজ ‘জনি-বনি’, পড়ুন রিভিউ ]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement