সন্দীপ্তা ভঞ্জ: ‘ব্লাইন্ড’ ২০১১ সালের কোরিয়ান ছবি। সেই সিনেমারই ‘অন্ধ’ অনুকরণ বলিউড ছবি ‘ব্লাইন্ড’। মুখ্য ভূমিকায় সোনম কাপুর। সদ্য মুক্তি পেয়েছে জিও সিনেমায়। কেমন হল অভিনেত্রীর প্রত্যাবর্তন পারফরম্যান্স? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
শিরোনামেই গল্পের ইঙ্গিত। এক অন্ধ পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সোনম কাপুর। গোটা গল্পটাই সেই অন্ধ মহিলা চরিত্রটিকে কেন্দ্র করে। যে চরিত্রের নাম জিয়া। প্রেক্ষাপট স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো। সেখানকার পুলিশ স্টেশনেই কর্মরত সে। তবে সে কিন্তু জন্মান্ধ নয়। অবাধ্য ভাইকে সামলাতে গিয়ে এক দুর্ঘনায় দৃষ্টিশক্তি হারায় জিয়া। ঘটনাস্থলেই ভাইকে হারায় সে। তারপর?
জিয়ার জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। একদিকে ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য সে নিজেকে দোষী ভাবতে থাকে। অন্যদিকে দৃষ্টিশক্তি হারানোয় চলে যায় পুলিশের চাকরি। এখান থেকেই শুরু হয় তার একা চলার সংগ্রাম। এদিকে পুলিশের চাকরি খোয়ালেও প্রতিনিয়ত খবরের খুঁটিনাটি তথ্য রাখার অভ্যেস তার যায়নি। গ্লাসগো থেকে পরপর ২টো মেয়ের উধাও হয়ে যাওয়া জিয়ার ভাল ঠেকেনি। সেই অন্তর্ধান রহস্যের পিছনে ছুটতে গিয়েই এক পর এক রহস্যের জট ছাড়ায় সে।
রাতের গ্লাসগো শহরে এক ট্যাক্সিচালককে তাঁর সন্দেহজনক বলে মনে হয়। দৃষ্টিশক্তি হারালেও তুখড় ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের জোর জিয়াকে তাড়া করে বেরাতে থাকে। তারপর? বাকি গল্পটা দেখতে হলে জিও সিনেমার পর্দায় চোখ রাখতে হবে। তবে তার আগে সোনম কাপুর এবং পূরব কোহলির পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলা অতি আবশ্যক।
অন্ধ মহিলার ভূমিকায় সোনম কাপুর মন্দ নন। চলন-বলন কিংবা দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর তার যেসমস্ত অভ্যেস রপ্ত করতে হয়েছে, অভিনেত্রী হিসেবে সেসব স্কিল ভাল রপ্ত করেছেন সোনম। তবে কিছু দৃশ্যের গভীরতা অনুযায়ী তাঁর অভিব্যক্তি মানানসই নয়। অন্যদিকে অ্যান্টাগনিস্ট হিসেবে পূরব কোহলিকে মানালেও তাঁর মতো দক্ষ অভিনেতাকে ঠিক ব্যবহার করতে পারেননি পরিচালক সোম মাখিজা। তবে নজর কেড়েছেন বিনায়ক পাঠক।
কিছু জায়গায় প্রোটাগনিস্ট সোনম কাপুরকেও ছাড়িয়ে যান পূরব কোহলি। তবে অ্যান্টাগনিস্ট হিসেবে খলচরিত্রে তাঁর আরেকটু অ্যাক্টিভিটি ডিমান্ড করে এই থ্রিলার ছবি। এত ভাল একজন অভিনেতা থাকা সত্ত্বেও ধূসর চরিত্রের রহস্যজালের বুনোট খুবই আলগা। অন্ধ মহিলার গোয়েন্দাগিরি দেখানোর ক্ষেত্রে পরিচালক সোম মাখিজা আরেকটু স্মার্ট হতে পারতেন। কোরিয়ান সিনেমার ‘অন্ধ’ অনুকরণে আরেকটু দক্ষতার প্রয়োজন ছিল পরিচালকের। গল্পের ক্রাইসিসের মুহূর্তটাকে আরেকটু করুণ কিংবা রুক্ষ করা যেত।
যেসমস্ত দর্শকরা হলিউড কিংবা কোরিয়ান থ্রিলার দেখে অভ্যস্ত, তাঁদের কাছে সোম মাখিজার ‘ব্লাইন্ড’ খুবই প্রেডিক্টেবল ঠেকবে। সেই দায় অবশ্য পরিচালক এবং চিত্রনাট্য লেখকের! ‘ব্লাইন্ড’ গল্পে যেভাবে পরতে পরতে রহস্য থাকার কথা সেটাই মিসিং। সোনমের একা প্রচেষ্টা এই সিনেমাকে উতরাতে পারেনি। শেষপাতে বলি, কোরিয়ান ছবি ‘ব্লাইন্ড’ না দেখে থাকলে সোনম কাপুর অভিনীত ‘ব্লাইন্ড’ দেখতে আপনার মন্দ লাগবে না। ওয়ান টাইম ওয়াচ হিসেবে ভাল!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.