সুপর্ণা মজুমদার: ভাল আর মন্দ। শব্দ দু’টি খুবই আপেক্ষিক। দৃষ্টিভঙ্গীর তফাতে পালটে যেতে বাধ্য। বিশেষ করে মানুষের জীবনের ক্ষেত্রে। বছর খানেক আগে যা ঠিক ছিল, আজ হয়তো তা বেঠিক। আবার কিছুদিন আগেও যা বেঠিক ছিল, তা বর্তমান পরিস্থিতিতে ঠিক হতেই পারে। ঠিক-বেঠিকের পক্ষপাত দোষে দুষ্ট নয় ‘ব্ল্যাক উইডোজ’ (Black Widows)। রিমেক হলেও কুশল হাতে সিরিজের চিত্রনাট্য লিখেছেন রাধিকা আনন্দ (Radhika Anand)। তাতে আবার রহস্য, কমেডি, থ্রিল, অ্যাকশন, আবেগের পাঁচফোড়ন দিয়েছেন পরিচালক বিরসা দাশগুপ্ত (Birsa Dasgupta)। টানটান উত্তেজনায় ১২ টি এপিসোডের মায়াজালে দর্শকদের আটকে রেখেছিন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee), মোনা সিং (Mona Singh), শমিতা শেট্টি (Shamita Shetty)।
ফিনল্যান্ডের সিরিজ ‘মুসতাত লেসকেট’ (Mustat lesket) থেকে তৈরি ‘ব্ল্যাক উইডোজ’। একই নামে তাঁকে ভারতীয় দর্শকদের সামনে তুলে ধরেছেন বিরসা। মহিলাদের মন বোঝেন বিরসা। সেই ভাবেই কাহিনি শুরু করেছেন বীরা (মোনা সিং), জয়তী (স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়) ও কবিতার (শমিতা শেট্টি) কাহিনি দিয়ে। তিন জনেই স্বামীর অত্যাচারে বিদ্ধ। সেই কারণেই স্পিডবোটে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে স্বামীদের খুন করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা বাস্তবায়িতও হয়। কিন্তু মিথ্যে কী আর অত সহজে লুকানো যায়? তারপরই শুরু হয়ে ইঁদুর-বিড়ালের চেনা পরিচিত খেলা।
এই খেলায় আবার পুলিশের ভূমিকায় যোগ দেন পঙ্কজ ওরফে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় (Parambrata Chattopadhyay) এবং রিঙ্কুজি ওরফে শ্রুতি ব্যাস (Shruti Vyas)। বাকি কাহিনি আপনার সাবস্ক্রিপশনের জন্য তোলা থাক। তবে সিরিজে সারপ্রাইজ এলিমেন্ট সব্যসাচী চক্রবর্তী (Sabyasachi Chakrabarty) এবং রাইমা সেন (Raima Sen)। যতীনের চরিত্রে শরদ কেলকরের (Sharad Kelkar) প্রত্যাবর্তনও প্রশংসনীয়। মাঝে মাঝে আমির আলি (এডি), শোয়েব কবীরের (ভিকি) আসা-যাওয়া গল্পের তরতাজা সুবাস জিইয়ে রাখে। রামিজের চরিত্রে সাহেব চট্টোপাধ্যায়, তাঁর মায়ের চরিত্রে মিঠু চক্রবর্তী এবং ললিতের ভূমিকায় মোহন কাপুরের অভিনয় অনবদ্য। বাঙালির হিসেবে বাঙালি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের উচ্চারণ একটু কানে লেগেছে। সহজাত ভাষা না হলে যা হয় আর কি! তবে জাতীয় স্তরে বাঙালি অভিনেতাদের কদর বেড়েছে। আর সেই সুযোগ ভরপুর কাজে লাগাচ্ছেন যিশু, পরমব্রত, স্বস্তিকা, পাওলি, রাইমারা।
‘ব্ল্যাক উইডোজ’কে শুধুমাত্র রহস্যের গল্প ভাবলে ভুল করা হবে। ঘরোয়া হিংসা, নারীকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা, মানুষের পালটে যাওয়া স্বভাবের কাহিনি তুলে ধরেছেন বিরসা। রয়েছে কমিক রিলিফও। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ের ছোঁয়া পাওয়া গিয়েছে ভাইরাস ও প্রতিষেধকের মতো উপাদানের সংযুক্তিতে। সিরিজের প্রত্যেকটি এপিসোডের নির্মেদ পরিবেশনের দায় বেশিরভাগটাই বর্তায় সম্পাদনার দায়িত্বে থাকা সুমিত চৌধুরীর। শুভঙ্কর ভড়ের ক্যামেরা প্রত্যেক লোকেশনকে সুন্দর করে তুলেছে। শেষ থেকে শুরু, আর শুরুতে গিয়ে শেষ করার ছকটি ভালভাবেই কষেছেন পরিচালক বিরসা। তাই একবার এই তিন নারীর কাহিনি দেখে নিতেই পারেন Zee5 প্ল্যাটফর্মে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.