Advertisement
Advertisement

অভিনেতা না পরিচালক, কোন ভূমিকায় পর্দায় রাজত্ব করলেন ‘বিজয়া’-র কৌশিক?

হলে যাওয়ার আগে জেনে নিন কেমন হল ছবিটি?

Bijoya movie review
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:January 5, 2019 3:18 pm
  • Updated:January 5, 2019 3:18 pm  

চারুবাক: ছবি নিয়ে আলোচনা তো করতেই হবে। কারণ প্রেম-বিচ্ছেদ, পুর্নমিলনের তীব্র অশ্লেষ, মনের গোপন গহনে ঘাপটি মেরে থাকা প্রতিশোধস্পৃহা সব নিয়েই কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বিজয়া’। তবে সবার আগে রাখতে হয় গণেশ মণ্ডলের চরিত্রে অভিনেতা কৌশিককে। ছবিটা দেখার পর নয়, দেখতে দেখতেই মনে হচ্ছিল কৌশিক কি সত্যিই অভিনয় করলেন? নাকি গণেশ মণ্ডলই হয়ে উঠলেন?

কোনও চর্চিত অভিনয়ে এমন চরিত্র হয়ে ওঠা কখনই সম্ভব নয়। গণেশকে তিনি এতটাই আত্মস্থ করেছেন যে কৌশিককে আর অভিনয় করতেই হয়নি। গণেশ আর কৌশিক একাকার। গণেশ চরিত্রের ধূর্ততা, পোশাকি কূটিলপনা, স্ত্রী পদ্মার সঙ্গে অযৌন সম্পর্কের শীতলতা, নাসিরের প্রতি পদ্মার প্রেমে অস্তিস্ব জেনে না জানার ভান করা- সব কিছুই কেমন ভদ্রভঙ্গিতে বুঝিয়েছেন তিনি। কলকাতায় চিকিৎসার জন্য আসার পর নাসিরের সঙ্গে দেখা হওয়ার মুহূর্তেই গণেশ বলে ‘এবার তো মাঝে মাঝেই দেখা হবে’ সংলাপের মধ্যে চাপা যন্ত্রণা ও ব্যঙ্গ স্পষ্ট। এই ছবিতে গণেশ মণ্ডলের বিভিন্ন স্তরীয় সংলাপও অসাধারণ। বাড়ির চাকর লাউয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটাও একই সঙ্গে ভালবাসার। প্রত্যয়ের আবার শ্রেণি বিভেদেরও। সবচেয়ে ভাল লাগে নাসির আর পদ্মার সামনে বসে পারস্পরিক সম্পর্কের খোলস ছাড়ানো পর্বটি। বহুদিন বাংলা ছবিতে এমন মনভোলানো, বুক মোচড়ানো বুদ্ধি মাখানো সংলাপ শোনা যায়নি।

Advertisement

পয়সা উশুল ছবি হল কি ‘সিম্বা’?  ]

‘বিসর্জন’ ছবি যেখানে শেষ হয়েছিল, তার কয়েক বছর পর থেকে ‘বিজয়া’ শুরু। না। সেভাবে নিটোল কোনও গল্প নেই ‘বিজয়া’-য়। রয়েছে পারস্পরিক অনুভূতির বিনিসুতোয় টানাপোড়েন। পদ্মা, গণেশ আর নাসিরের সম্পর্কের এক নতুন ‘নাটক’ ঘটনার প্রতিটি বাঁকে সুন্দরভাবে তুলে এনেছেন কৌশিক। তাঁর সঙ্গে প্রায় একই নিশ্বাসে উচ্চারণ করব জয়া আহসানের নাম। ‘বিজয়া’-য় তিনি আরও পরিণত। গণেশের ‘সংসার’ তাঁকে আরও ‘নারী’ করে তুলেছে। আত্মসম্মান উপলব্ধি করে সে এখন। সে জন্যই নাসিরের কলকাতায় থেকে যাওয়ার প্রস্তাবে পদ্মা রাজি হয় না। চলে যায় কালীঘাট আর গঙ্গা ছেড়ে পদ্মাপারের শ্রীপুর গ্রামেই। ‘দাস’ থেকে ‘হালদার’ হয়ে ‘মণ্ডল’ হয়ে ওঠা পদ্মা আর ‘দ্রৌপদী’ হতে চায় না। নিজেই বলে “তোমরা পুরুষরাই আমার ভবিষ্যৎ ঠিক করবে, আমার কোনও মতামত ছাড়াই..!” তখনই প্রেমিক নাসির আলি পরাজয় মেনে নেয়। ওই মুহূর্তেও জয়া আহসান বারুদের মতো জ্বলে ওঠেনি। তিনি প্রায় সারাক্ষণই নিবু নিবু আঁচ হয়েই ছিলেন। এমন দুই না-অভিনয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে পাল্লা দিয়েছেন বটে আবির চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অসহায়তা, নীরব আকুতি, মিলনের অথচ সামাজিক সৌজন্যবোধ বজায় রাখার মুখোশ লাগানো প্রয়াস – সবটাই তিনিও ভাল ফুটিয়েছেন।

অভিনয় ‘বিজয়া’-র প্রধান ইউএসপি হলে দ্বিতীয় অবশ্য দোহার-ইন্দ্রদীপের যুগলসংগীত। ‘বন্ধু তোর লাইগ্যা আমার তনু জড়জড়’, ‘ভবনদী পার করাইয়া বাঁচাইয়া দে’ গানগুলো এই ছবির হৃদস্পন্দন বলতেই পারি। আরও একটা অনুভব ‘বিজয়া’ যেখানে শেষ হল, সেখান থেকে কিন্তু তৃতীয় পর্বের শুরু হতেই পারে, অপেক্ষায় রইলাম।

জঙ্গলে কেমন হল জোজোর অ্যাডভেঞ্চার? ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement